আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
384 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (42 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম।

১. টিকটিকি আর কালো কুকুর হত্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাদীসে। এখন, টিকটিকি আসলেই অনেক ঘিনঘিনে আর বিরক্তিকর প্রাণী, কিন্তু কথা হলো, আমরা এখন যেরকম বাসায় থাকি, তাতে সব সময় টিকটিকি গুলো মেরে ফেলা হয় তবে তার মৃত দেহ পড়ে নোংরা হবে, দেয়াল, মেঝে অপরিষ্কার হবে তাই আমরা না মেরে তাড়িয়ে দিই। এতে কি আমরা সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হব। যদিও হাদীস কে সম্মান রেখেই চলি, কখনো অবিশ্বাস বা অবহেলার উদ্দেশ্যে এমন করি না।

২. সকল সৃষ্টির উপরই কি মায়া দোয়া দেখানো উচিত না? কুকুর অপবিত্র প্রাণী, কিন্তু আমরা তো এভাবে সরচরাচর কুকুর হত্যা করতে পারি না, তার মৃত দেহ নোংরা ছড়াবে। তাছাড়া, যেকোনো কুকুর কে যদি খেতে দিয়ে, বা বিপদে আশ্রয় দেওয়া হয়, অনেক কুকুর পুষে না তবে খাবার দেয়, খেয়ে চলে যায়। এগুলা কি অন্যায় হবে? হাদীসের অবমাননা করা হবে? যদিও আমরা শুধু প্রাণীর প্রতি মায়া দেখিয়েই এমনটা করি, যতক্ষণ টা আমাদের ক্ষতি করে আমরা মারতে যায় না।

৩. বর্তমানে শুনি খামারে বা গাভী পালনে প্রাকৃতিক প্রজনন পদ্ধতি অনুসরণ না করে ইনজেকশন ইউজ করা হয়। আমার প্রশ্ন হলো, এভাবে কি গাভিদের থেকে তাদের প্রজননের অধিকার হরণ করা হচ্ছে না? আল্লাহ্ তো সকল সৃষ্টি কে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন তার একটা কারণ তো নিশ্চই আছে, আমরা যদি প্রাণীদের এভাবে তাদের প্রাকৃতিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত করি এটা কি উচিত হবে?
closed

1 Answer

+1 vote
by (574,050 points)
selected by
 
Best answer
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো টিকটিকি মারা মুস্তাহাব।
প্রথম আঘাতেই মেরে ফেলতে পারলে অধিক ছওয়াবের কথা হাদীস শরীফে এসেছে।       

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيْدِ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ شَيْبَةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّ أُمَّ شَرِيكٍ أَخْبَرَتْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَهَا بِقَتْلِ الأَوْزَاغِ

সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব (রহ.) হতে বর্ণিত যে, উম্মু শারীক (রহ.) তাঁকে খবর দিয়েছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে গিরগিটি বা রক্তচোষা জাতীয় টিকটিকি হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন। (বুখারী ৩৩৫৯) (মুসলিম ৩৯/৩৮ হাঃ ২২৩৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩০৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩০৭২)

وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي، هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ قَتَلَ وَزَغَةً فِي أَوَّلِ ضَرْبَةٍ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً وَمَنْ قَتَلَهَا فِي الضَّرْبَةِ الثَّانِيَةِ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً لِدُونِ الأُولَى وَإِنْ قَتَلَهَا فِي الضَّرْبَةِ الثَّالِثَةِ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً لِدُونِ الثَّانِيَةِ " .

ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ..... আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রথম আঘাতে যে লোক কাকলাস মারবে, তার জন্য রয়েছে এত এত পরিমাণ সাওয়াব। আর যে লোক দ্বিতীয় আঘাতে তাকে হত্যা করবে, তার জন্য এত এত পরিমাণ সাওয়াব, প্রথমবারের চাইতে কম। আর যদি তৃতীয় আঘাতে হত্যা করে ফেলে, তাহলে তার জন্য এত এত পরিমাণ সাওয়াব, তবে দ্বিতীয়বারের থেকে কম। (মুসলিম শরীফ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৬৫১, ইসলামিক সেন্টার ৫৬৮১)

বিস্তারিত জানুনঃ  

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে টিকটিকি না মেরে তাড়িয়ে দেওয়াতে কোনো সমস্যা নেই।

এতে কোনো গুনাহ ইত্যাদি হবেনা।    

টিকটিকি মেরে ফেলা তো শরীয়তের কোনো আবশ্যকীয় বিধান নয়,যে তাকে মেরে ফেলতেই হবে।
এমন কোনো আবশ্যকীয়তা শরীয়তে নেই। 

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে গুনাহ হবেনা, তবে টিকিটিকি মারলে যেই ছওয়াব হতো,সেই ছওয়াব পাওয়া যাবেনা।

(০২)
এগুলো অন্যায় নয়।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তাদের খাবার দেয়াতে কোনো সমস্যা নেই।   
,
তবে কোনো কুকুর হিংস্র হলে,যদি শুধু মানুষের ক্ষতি করে,তাহলে কষ্ট থেকে বাঁচার জন্য কুকুর হত্যা করা যাবে।

(০৩)
এটি তাদের প্রতি এক ধরনের জুলুমের শামিল।
তাদের প্রাকৃতিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত করা জায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...