আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
221 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (28 points)
আসসালমু আলাইকুম।

১. আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, প্রতি রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিছানায় যাওয়ার প্রাক্কালে সূরাহ ইখ্লাস, সূরাহ ফালাক ও সূরাহ নাস পাঠ করে দুহাত একত্র করে হাতে ফুঁক দিয়ে যতদূর সম্ভব সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন। মাথা ও মুখ থেকে আরম্ভ করে তাঁর দেহের সম্মুখ ভাগের উপর হাত বুলাতেন এবং তিনবার এরূপ করতেন। (বুখারী, ৫০১৭)

এ হাদিসে রাতে ঘুমানোর আগে হাত বুলানোর কথা বলা আছে। অন্যদিকে, কিছু হাদিসে সকাল-সন্ধ্যায় সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠের কথা বলা আছে। অনেককে দেখি এই সূরা গুলো পাঠ করে সকাল সন্ধ্যায়ও শরীরে হাত বুলান। কিন্তু সকাল সন্ধ্যায় শরীরে হাত বুলানো কি হাদিসে এসেছে?

২. যারা মারা গিয়েছে তাদের নিন্দা করলও কি গীবত হবে? অমুসলিম এবং শিশুদের নিন্দা করলে গীবত হবে?

৩. ফরজ গোসলের পর পা কি তিনবার ধোয়া নিয়ম নাকি একবার?
৪. ফরজ সালাতের সেজদায় আরবী/মাসনূন দুআ করা যাবে কি?

৫. দাঁড়ি কতটুকু অবশ্যই রাখতে হবে? অনেক নামাজী ভাই এক মুষ্টির পরিবর্তে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি রাখে, এটা কি হারাম?

৬. গন্তব্যের কতটুকু কাছাকাছি পৌছালে মুসাফিরের  সালাত পড়া যাবে না?
৭. ট্রেনের মেঝের মাটিতে তায়াম্মুম করা যাবে কি?
৮. ফরয তরক করা মানে কি হারাম কাজ করা? ওয়াজিব তরক করা কি হারাম কাজ করা? ফরজ, ওয়াজিব তরক করা মানেই কি কবিরা গুনাহ?

৯. রমাদানের কাজা সাওমের নিয়ত এর সাথে বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত রোজার আমল এবং সোম, বৃহস্পতিবারের রোজা ইত্যাদির নিয়ত করা যাবে? নাকি রমাদানের কাজা সাওমের সাথে অন্য কোনও নফল সাওমের নিয়ত করা যাবে না?

১০. বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাডাম তার নরওয়েতে পড়াশোনাকালীন স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ওখানে গ্রীষ্মকালে ১৭-১৮ ঘন্টাই সূর্য থাকে, অনেক সময় অন্ধকার হওয়ার আগেই নতুন দিন শুরু হয়ে যায়। আবার শীতকালে ২৪ ঘন্টাই অন্ধকার থাকে, মাঝেমাঝে ২/৩ ঘন্টার জন্য সূর্য দেখা যায়।

তিনি বলেন, রমাদান মাসে ওখানকার ইসলামিক স্কলাররা ফতোয়া দেন সবচেয়ে নিকটবর্তী আরব রাষ্ট্রের সময়ের সাথে মিলিয়ে সাওম পালনের। এরপর তিনি আমাদের সামনে তার মতামত পেশ করেন- আমি কুরআনে পড়েছি, কোন আয়াত তা এখন মনে পড়ছে না। কেউ যদি রমাদানের চাঁদ না দেখে তবে তার ওপর সাওম ফরজ নয়, সে পরবর্তিতে তা আদায় করে নিতে পারবে।

আমার প্রশ্ন হলো, ম্যাডামের মতামতটি কতটুকু যৌক্তিক?

1 Answer

0 votes
by (566,940 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عَنْ مُعَاذِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خُبَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ خَرَجْنَا فِي لَيْلَةٍ مَطِيرَةٍ وَظُلْمَةٍ شَدِيدَةٍ نَطْلُبُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي لَنَا – قَالَ – فَأَدْرَكْتُهُ فَقَالَ ” قُلْ ” . فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا ثُمَّ قَالَ ” قُلْ ” . فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا . قَالَ ” قُلْ ” . قُلْتُ مَا أَقُولُ قَالَ ” قُلْ : هوَ اللَّهُ أَحَدٌ وَالْمُعَوِّذَتَيْنِ حِينَ تُمْسِي وَتُصْبِحُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ تَكْفِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ ”

আবদুল্লাহ ইবন খুবায়ব তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ এক বর্ষণমুখর রাতে গভীর অন্ধকারে আমাদের জন্য দু’আ করার উদ্দেশ্যে আমারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তালাশ করতে বের হলাম। এক স্থানে গিয়ে আমি তাঁকে পেলাম।
তখন তিনি বললেনঃ বল।
আমি কিছুই বললাম না।
তিনি আবার বললেনঃ বল।
আমি কিছুই বললাম না। পুনরায় তিনি আমাকে বললেনঃ বল। আমি বললামঃ কি বলব?
তিনি বললেনঃ “সকাল-সন্ধ্যায় কুল হুয়াল্লাহু আহাদ এবং মুআওওয়াযাতায়ন (কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক ও কুল আউযু বিরাব্বিন নাস) তিন বার পাঠ করবে; তবে তা সব কিছুর ক্ষেত্রে তোমার জন্য যথেষ্ট হবে।”
[তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৫৭৫ [আল মাদানী প্রকাশনী] হাদীসটির সনদ হাসান, তা’লীকুর রাগীব ১/২২৪, আল কালিমুত তাইয়্যিব ১৯/৭]

عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ أَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ أَقْرَأَ بِالْمُعَوِّذَاتِ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ

‘উক্ববাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে প্রত্যেক সলাতের পর মুআওয়াযাত তথা আশ্রয় প্রার্থনার সূরাগুলো পাঠ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। (সূনান আবু দাউদ, হাদীস নং ১৫২৩, সহিহ হাদিস)

উকবা বিন আমের রা. হবে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

قل هو الله أحد ، وقل أعوذ برب الفلق ، وقل أعوذ برب الناس ، تعوذ بهن ، فإنه لم يتعوذ بمثلهن ، اقرأ المعوذات دبر كل صلاة ” فذكرهن

“তুমি পাঠ করো, ‘কুল হুওয়াল্ল-হু আহাদ’, ‘কুল আঊযু বিরাব্বিল ফালাক’ এবং ‘কুল আঊযু বিরাব্বিন নাস’ এ সূরাগুলো দ্বারা (আল্লাহর নিকট) আশ্রয় প্রার্থন করো। কেননা এই সূরাগুলোর মত অন্য কিছু দ্বারা (আল্লাহর নিকট) আশ্রয় প্রার্থনা করা যায় না। তুমি মুআওয়ায়াযাত বা আশ্রয় প্রার্থনার সূরাগুলো প্রত্যেক ফরয সালাতের পাঠ করো। তারপর তিনি উক্ত তিনটি সূরা উল্লেখ করলেন।”
(সুনান আবুদ দাউদ, তিরমিয, নাসাঈ, মুসনাদে আহমদ, ইবনে খুযায়মা ও ইবনে হিব্বান প্রমূখ।)

★উপরোক্ত হাদীস সমূহের আলোকে প্রমাণিত হয় যে, সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার করে এবং পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালতের পর একবার করে এ তিনটি সূরা তথা সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করা মুস্তাহাব।
এক্ষেত্রে সকাল সন্ধ্যায় শরীরে হাত বুলানোর বিষয় হাদীসে আছে।  

(০২)
হ্যাঁ এতেও গীবত হবে।

(০৩)
একবার ধোয়াই যথেষ্ট। 

(০৪)  
কুরআনে/হাদীসে বর্ণিত দোয়া পড়া যাবে।

(০৫)
কমপক্ষে এক মুষ্ঠি হতে হবে।

এর চেয়ে কম রেখে কাটা না রাখারই শামিল।
উক্ত নামাজির কাজটি হারাম, তার এতে সার্বক্ষানিক গুনাহ হচ্ছে।

(০৬)
৭৮ কিলোমিটার বা তার চেয়ে বেশি কোথাও সফরের নিয়তে করে বের হয়ে নিজ শহরের সীমানা অতিক্রম করার পর থেকেই কসর করতে পারবে।

(০৭)
হ্যাঁ যাবে,শর্ত হলো তাহা পাক হতে হবে।

(০৮)
হ্যাঁ এটাকে হারাম কাজ করা বলা হবে। 

ফরজ, ওয়াজিব তরক করা মানে কবিরা গুনাহ।

(০৯)
রমাদানের কাজা সাওমের সাথে অন্য কোনও নফল সাওমের নিয়ত করা যাবে না।

(১০)
রোযা রাখা সংক্রান্ত তারা মাসয়ালা ঠিক আছে।
তবে কেউ রমাদানের চাঁদ না দেখলে তার উপর রোযা ফরজ নয়,এটি ভূল কথা। 


★ফতোয়া ডিলিট করা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানতে IOM কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করুন।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 116 views
...