আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
391 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (27 points)
edited by
উস্তায , আমার বয়স ১৭ বছর ৬মাস রানিং । আমার সমস্যা হলো আমি এখন প্রায়শই ইচ্ছাশক্তি হারিয়ে  ফেলি সবকিছুতে । আগে তাহাজ্জুদ পড়ার অভ্যেস ছিলো প্রতি রাতে , হোক না ঘুমিয়ে/ঘুমিয়ে ... ফজরে উঠতাম , এর আগে তাহাজ্জুদ পড়ে ফজরের আগ পর্যন্ত কুরআন পড়তাম ‌। কলেজে যাওয়ার  সময় রাস্তায় "আসতাগফিরুল্লাহ' পড়তে পড়তে যেতাম ।  নামাজে আগ্রহ পাচ্ছি না সবসময় ....

এমন হয় যে , বেশি ক্লান্ত/গরম থাকলে শুধু ফরজ  রাকআত পড়ি , সুন্নাহ রাকআত গুলো ছেড়ে দেই, এমনও হয়েছে যে বেশি‌ অলসতা/দেরির কারণে যোহরের ওয়াক্ত অনেকখানি নেই , শুধু ফরজ রাকআত পড়ে বাকি সুন্নাহ রাকআত ছেড়ে দিয়েছি । পড়াশোনার প্রতি অমনোযোগী হয়ে গেছি আগের চেয়েও বেশি । আগে এমন এক সময় ছিলো গান ; শোনা একদম বন্ধ করে দিয়েছিলাম, আর এখন কেন যেন দিন দিন একটু না একটুও শোনা হয় । বিতর কাযা হয়ে জমে যায় মাঝে মাঝে ঘুমের কারণে , তাহাজ্জুদের অভ্যাসটাও কেন যেন হারিয়ে গেলো । এমনকি স্মৃতিশক্তি কমে যায় অনেকাংশে...

ফোন আর কম্পিউটারেই যেন অনেকটাই আসক্ত

কেমন যেন হয়ে গেছি আমি
দৃষ্টি হেফাজতে সমস্যা হয় । আগে গরমেও হাতমোজা পড়ে থাকতাম , এখন এই গরমও সহ্য হয় না বলে হাতমোজাও খুলে রাখি , আমি হ্যান্ড/ফুট ফেটিসের ব্যাপারেও জানি , যাদের যৌন চাহিদা  জাগে হাত  দেখে/পা দেখে ।

মানে , আমি উপরোক্ত সব কিছু নিয়মানুযায়ী পালন করতাম , অতিরিক্ত কিছু থাকলেও করার চেষ্টা করতাম ।‌‌‌‌‌এখন কেন যে ওসব থেকে পিছিয়ে গেছি । আর কখনো কখনো যেন আমাকে হতাশা‌  গ্রাস করে আর এমনভাবেই করে আমি একদম চুপচাপ হয়ে যাই ।

মনের মধ্যে অনুতপ্ততা কাজ করে কিন্তু তার ফলাফল‌ দেখিনা । পূর্বঘটিত প্রেমের (আস্তাগফিরুল্লাহ)‌‌‌‌ কারণেও হঠাৎ মনে পড়লে মন থেকে একদম ভেঙে পড়ি যে কথা দিয়ে কথা রাখেনি ‌‌‌‌, হবার কথা আমার কিন্তু হবে অন্যের , এসব মাঝে মধ্যে এমন‌ভাবে চিন্তায় ঢুকে যায় যেন স্বাভাবিক হতেই পারিনা

ইভেন , মাঝে মাঝে এতো আবল‌বখল কথা বলে ফেলি পরে যির পাত্তা না পেয়েও কষ্ট পেয়ে যাই...

....... ্।।।

প্লিজ , উস্তায , আমাকে নাসিহাহ করুন
উপায়ান্তর বলে দিন

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


আনাস রাযি. বলেন, রাসুল ﷺ (উম্মতকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য) সব সময় এই দোয়া করতেন, 

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلىٰ دِيْنِكَ 

হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তর আপনার দীনের উপর দৃঢ় করে দিন।

আনাস রাযি. বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আপনার উপর এবং আপনার আনিত শিক্ষার উপর ঈমান এনেছি। এখন আপনার মনে কি আমাদের সম্পর্কে কোনো সন্দেহ আছে? ( যে বেশি বেশি এই দোয়া করেন!) রাসুল ﷺ উত্তর দিলেন হ্যাঁ! সব অন্তর আল্লাহর দুই আঙ্গুলের মধ্যে পড়ে আছে। আল্লাহ যেভাবে চান, এগুলোকে পরিবর্তন করেন। (তিরমিযি ২১৪০ তাকদির অধ্যায়)

★সুতরাং আপনি আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করবেন।

রাসূলুল্লাহ্ ﷺ দোয়া করতেন,

اللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا، وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَن زَكَّاهَا، أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلَاهَا

হে আল্লাহ আমাকে তাকওয়ার তওফীক দান করুন এবং নাফসকে পবিত্র করুন, আপনিই তো উত্তম পবিত্রকারী। আর আপনিই আমার নাফসের মুরুব্বী ও পৃষ্ঠপোষক। (মুসলিম ২৭২২)
সুতরাং আপনিও দোয়াটি করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

নেককারদের সোহবত গ্রহণ করুন। তাদের সাথে বেশি উঠাবসা করুন।
পুরুষ হলে তাদের  মজলিসে আসা যাওয়া করুন।
দাওয়াত তাবলিগের মেহনতের সাথে যুক্ত হতে পারেন 

এতে নফস নিয়ন্ত্রণ করা এবং তাওবার উপর অটল থাকা আপনার জন্য সহজ হবে। 

 আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত তাওবাহ ১১৯)

অধিকহারে ইস্তেগফার করুন। প্রয়োজনে এর জন্য প্রত্যেক নামাজের পর একটা নিয়ম করে নিন। যেমন, প্রত্যেক নামাজের পর ৫০/১০০/২০০ বার أسْتَغْفِرُ اللهَ   অথবা أسْتَغْفِرُ اللهَ وَأتُوبُ إلَيهِ অথবা  اللَّهُمَّ اغْفِرْ لي পড়ার নিয়ম করে নিতে পারেন। 

★কখনো একাকী নিভৃতে থাকবেন না। কেননা একাকীত্ব গোনাহ চিন্তা করার কারণ হতে পারে। আপনার সময়কে উপকারী বিষয়ে ব্যয় করতে সচেষ্ট হোন। ঈমান ও ইসলামের পরিবেশে সময় ব্যয় করুন।

আপনাকে বেশি পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করার ও শোনার পরামর্শ দিচ্ছি। এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا

আর যখন তাদের সামনে পাঠ করা হয় কালাম, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায়। (সূরা আনফাল ২)

অনুরূপভাবে আমরা আপনাকে বুঝে বুঝে নবীদের কাহিনী, সাহাবায়ে কেরামের জীবনী পড়ার পরামর্শ দিচ্ছি। 

★অধিকহারে আল্লাহর যিকির করুন। কেননা, দুর্বল ঈমানের সুস্থতার জন্য যিকির খুবই উপকারী। আল্লাহর যিকির অন্তরে ঈমানের বীজ বপন করে। মুমিনের অন্তর যিকিরের মাধ্যমে প্রশান্ত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। (সূরা রা’দ ২৮)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (27 points)
জাযাকাল্লাহু খাইরান ফিদ্ দুনিআ ওয়াল আখিরহ্ , উস্তায

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...