আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
168 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
প্রথাগত ইসলামি স্কলার যারা আছেন, সুফিবাদকে(wahdat-al-wujud)তারা কিভাবে দেখেন? I mean is it even legal? (এইটা আমাকে একজন জিজ্ঞেস করেছেন, এইটার কি উত্তর দেওয়া যায়! শাইখ এই বিষয়ে জানিয়ে একটু সাহায্য করবেন ইনশাআল্লাহ)

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-



ওহদাতুল অজুদ সম্পর্কে অনেকেই শিরক বলে আখ্যায়িত করেছেন,অনেকে আবার ঢালাও ভাবে শিরক না বলে কিছু ব্যাখ্যা করেছেন।

উলামায়ে কেরামগন এ সংক্রান্ত যেই ব্যাখ্যা করেছেন,সেটা জানুনঃ-

https://ifatwa.info/6829/

(সুফিবাদ বা সুফি দর্শন, আরবি- সুফিয়াত বা তাসাউফ) একটি ইসলামি আধ্যাত্মিক দর্শন। আত্মা সম্পর্কিত আলোচনা এর মুখ্য বিষয়। সুফিবাদের একমাত্র মূল বিষয়টি হল, আত্মার পরিশুদ্ধির মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা। পরম সত্তা মহান আল্লাহ কে জানার এবং আকাঙ্ক্ষা মানুষের চিরন্তন। স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে আধ্যাত্মিক ধ্যান ও জ্ঞানের মাধ্যামে জানার প্রচেষ্টাকে সুফি দর্শন বা সুফিবাদ বলা হয়। 

হযরত ইমাম গাজ্জালি (র.) এর মতে, আল্লাহর ব্যতীত অপর মন্দ সবকিছু থেকে আত্মাকে প্রবিত্র করে সর্বদা আল্লাহর আরাধনায় নিমজ্জিত থাকা এবং সম্পূর্ণ রূপে আল্লাহুতে নিমগ্ন হওয়ার নামই সুফিবাদ বলে। 

সুফি শব্দের উৎপত্তি

(১) সাউফ অর্থ পশম (২) সাফা অর্থ পবিত্র (৩) সফ অর্থ সারি, লাইন বা শ্রেণী (৪) সুফিয়া অর্থ জ্ঞান।

কেহ কেহ বলেন, সুফি শব্দের উৎপত্তি সাউফ বা পশম হতে । এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীর ধারণা অধিকাংশ সুফি তাঁদের দারিদ্র্যবশত পশম পরিধান করতেন তাই তাদের মতে সুফি শব্দটি “সাউফ” হতে উদ্ভুত।

কেউ কেউ বলেন,

সাফা শব্দ হতেও সুফি শব্দের উৎপত্তি হয়েছে মর্মে অনেকে মনে করেন, কেননা সাফা শব্দের অর্থ সাফ তথা পবিত্রতা বা পবিত্রতা লাভ করা । সুফিগণের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো আল্লাহকে লাভ করা এবং আল্লাহকে লাভ করার প্রথম ও প্রধান কাজই হলো আপন সত্তাকে বা অন্তরাত্মাকে পবিত্র করা। তাই সাফা শব্দ হতে সুফি শব্দটি উৎপত্তি হয়েছে মর্মে মনে করা হয়।

https://ifatwa.info/19972/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
সূফীবাদ অর্থ হল,শিক্ষকের ভমিকায় অবতীর্ণ হয়ে মানুষকে বাহ্যিক ও অন্তর্নিহিত বিষয়ে দ্বীন ও শরীয়তের সঠিক জ্ঞান শিক্ষা দেয়া। এ অর্থ হিসেবে সূফীবাদ ইসলামে সমর্থিত একটা বিষয়।তবে যদি সূফীবাদের অর্থ করা হয়,প্রচলিত পীর মুরিদী প্রথা।তাহেল তা ব্যখ্যা সাপেক্ষ্য।যদি পীর মুরিদী প্রথাকে আখেরাতে নাজাতের উসিলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।তাহলে তা কখনো অনুমোদনযোগ্য হতে পারে না।আর যদি পীর মুরিদীর অর্থ হয়,দ্বীন শিক্ষা দেয়া,পীর হলেন শিক্ষক আর মুরিদ হলেন ছাত্র,তাহলে ইহা শরীয়তে গ্রহণযোগ্য একটা বিষয়।

https://www.ifatwa.info/1037 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
শিক্ষাগ্রহণ-ই তাসাউফ বা সুফীবাদের মূল হাকিকত।মুরিদ করা বা হওয়া মূল উদ্দেশ্য নয়,বরং সংশোধন করা বা হওয়াই মূল উদ্দেশ্য।মুরিদ হওয়াকে প্রাতিষ্টানিক ভর্তির সাথে তুলনা করা যেতে পারে।কেউ প্রাতিষ্টানিক ভর্তির মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করে।আবার কেউবা প্রাতিষ্ঠানিক ভর্তি ছাড়াই জ্ঞানার্জন করতে সক্ষম হয়।বিস্তারিত জানতে দেখুন-(আহসানুল ফাতাওয়া-১/৫৪৬)

তাসাউফ বা সুফীবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তথা বুজুর্গানে কেরামগণ সাধারণত কুরআন-হাদীসের আলোকেই লোকদেরকে শিক্ষা প্রদান করে গেছেন।তবে এর মধ্যেও কারো কাছ থেকে কিছু অতিরঞ্জন শোনা যায়।সেজন্য এটাই বলা যায় যে,কুরআন-হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো মতবাদ বা পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য হবে না।আল্লাহ-ই ভালো জানেন। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1037

আল্লাহ তা'আলা বলেন,
قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ


বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ ও তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।(সূরা আলে ইমরান-৩১)

আল্লাহ বলছেন,যে উনাকে পেতে হলে,উনাকে কেউ মহব্বত করলে,রাসূল সাঃ এর অনুসরণ করতে হবে।

রাসূলুল্লাহ সাঃ কে আল্লাহ তা'আলা ৪ টি বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করেছেন।এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,
هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ


তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।(সূরা-জুমুআহ-২)

রাসূলুল্লাহ সাঃ এর ৪ টি দায়িত্বের একটি দায়িত্ব হল,আত্মসুদ্ধি।এই আত্মসুদ্ধির অপর নাম তাসাউফ। 

তাসাউফ সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1037

তাসাউফ তথা কোনো হক্কানী,রব্বানী আলেমের সংস্পর্শ দ্বারাই আল্লাহর সঠিক ও যথার্থ পরিচয় লাভ করা সম্ভব হবে।এবং পুরোপুরি রাসূলের অনুসরণ করা এবং রাসূল সাঃ এর পবিত্র সুন্নতের অনুসরণ করাও সম্ভবপর হবে।

আরো জানুনঃ 

https://ifatwa.info/11832/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...