আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
311 views
in পবিত্রতা (Purity) by (6 points)
১| আমি প্রায় ৬ মাস ধরে সন্দেহের রোগে আক্রান্ত।  যেমনঃ অযু করার পর মনে সন্দেহ জাগে যে হাত কুনুই পর্যন্ত ধোয়া হয়েছে কি না? সম্পুর্ন মুখমণ্ডল ধোয়া হয়েছে কি না? এরকম বিভিন্ন প্রশ্ন মনের ভিতর জাগে।সন্দেহের কারণে এক অঙ্গ বারবার ধুই। মাঝে মধ্যে তো অযু করতে প্রায় ১০ মিনিট সময় লেগে যায়।যার ফলে অনেক সময় মসজিদে জামায়াতের কিছু রাকাআত ছুটে যায়। নামাজের ক্ষেত্রে ও অনেক সন্দেহ জাগে। যে কয় রাকাত পরলাম, সিজদাহ্ কয়টি করলাম, রুকু করেছিলাম কি না, রুকু থেকে উঠে দারিয়েছিলাম কি না, সুরা ফাতিহা পরে ছি কিনা, তাশাহুদ পরেছি কি না। এইসব বিভিন্ন সন্দেহ মনের ভিতর জাগে। এটি এখন প্রতিদিন ই ৫ ওয়াক্ত নামাজে হয়। প্রতি ওয়াক্ত নামাজে আমার এই সমস্যা হয়। পরে ফেসবুক এবং ইউটিউব থেকে জানতে পারি যে এটি শয়তানের ওয়াসওয়াসা। ইউটিউবের ভিডিও তে বলা হয় এইগুলোকে পাত্তা ই না দেওয়া।কিন্তু আমি সেরকম যেন করতেই পারি না। যখন অযু করি তখন ওয়াসওয়াসা আসলে তাড়াই দিতে পারি না। মনে প্রশ্ন জাগে যে আমার অযু যদি সত্যি সত্যিই না হয়ে থাকে তাহলে তো আমার নামাজ হবে না। নামাজের ভিতরে ও যখন এই ওয়াসওয়াসা আসে আমি তাড়াতেই পারি না। আমার মনে হয় যে যদি সত্যিই  আমি সিজদাহ্ একটি করে থাকি, আমি যদি সত্যি ই রুকু থেকে উঠে থাকি ইত্যাদি প্রশ্ন প্রতি ওয়াক্ত নামাজে ই হয়। আমি এই নিয়ে অনেক সমস্যার ভিতরে আছি। মাঝে মধ্যে অনেক খারাপ লাগে। আমি এইগুলো থেকে কিভাবে বাচবো?

২| নাপাকি নিয়ে ও অনেক সন্দেহ জাগে মনে। নাপাকির সন্দেহের কারণে প্রতিদিন ই কাপড় ধৌত করি। আমার অধিকাংশ কাপড় এই সন্দেহের কারণে নাপাক হিসেবে গণ্য করি। এই সন্দেহের কারণে প্রসাব-টয়লেট কেমন যেন এক বোঝার মতো হয়ে গেছে আমার কাছে।এগুলো থেকে বাচার উপায় কি?

৩| প্রসাবের ছিটা কাপড়ে লাগল কি না সন্দেহ লাগে।অযু করার পর বায়ুত্যাগ হয়েছে কি না এইসব সন্দেহ লাগে।

৪| প্রসাব বা টয়লেটের পর আমরা যে পানি ব্যবহার করি তা নিচে পড়ে ছিটে এসে শরীরে বা কাপড়ে লাগলে কি তা নাপাক হবে?

৫| প্রসাবের পর যখন ঢিলা কুলুখ করি তখন টিস্যু ব্যবহারের পর মনে প্রশ্ন জাগে যে শুধু টিস্যু দিয়ে কি আমার নাপাকি দূর হয়েছে?
৬| তারপর যখন পানি দিয়ে ধোত করি তখন হাত দিয়ে ধৌত করার পর কি ওই হাত নাপাক হয়ে যায়?

৭| কাপড়ে কোনো এক অংশে নাপাক লাগলে যখন তা ধুতে যায় তখন তো পানি ওই নাপাকির উপরে লেগে কাপড়েই থেকে যায়। এক্ষেত্রে কি ওই পানি নাপাক হয়? উক্ত কাপড়ে নামাজ পড়া যাবে?

৮| বৃষ্টির পর যে কাদা-পানি মাঠে,রাস্তায় জমে যায় সেই পানি কি নাপাক হয়? মনে প্রশ্ন জাগে যে পশু- পাখির মল মনে হয় পানির সাথে মিস্রিত হয়ে গেছে।

আমি এইগুলো নিয়ে অনেক সমস্যাই আছি।

1 Answer

0 votes
by (679,600 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ


(০১)
ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ 
ইবনে হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে (১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে এর প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها وعمل بقضيتها فإنها لا تزال تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم

অর্থাৎ, এর ঔষধ একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু সময় পর চলে যাবে; যেমনটি তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছাবে।
 
এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ  পড়া, আউযুবিল্লাহ্ পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।
 
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ عَلَى الْوَسْوَسَة
 
‘সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি শয়তানের বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ )
 
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এগুলো সবই ওয়াসওয়াসা জনিত রোগ, তাই আপনি ওয়াসওয়াসাকে কোনো পাত্তা দিবেন না

ওয়াসওয়াসা থেকে মুক্তির আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ 

(০২)
কোনো কাপড়ে নাপাকি লাগা সম্পর্কে নিশ্চিত ভাবে জানলে তবেই সেটি ধুয়ে ফেলবেন। 

(০৩)
আপনি নিশ্চিত না হলে এগুলো নিয়ে ভাববেননা।

(০৪)
পেশাব থেকে ইস্তেঞ্জার সময় এসব ছিটা নাপাক বলে গন্য হবে।
কাপড়ে এক দিরহাম এর কম লাগলে মাফ। 
এক দিরহাম সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি লাগলে ধৌত করা আবশ্যক। 

আর পায়খানার ছিটা পানিতে নাপাকি দেখা না গেলে সেটি নাপাক নয়।

(০৫)
হ্যাঁ হবে।

(০৬)
লিঙ্গে হাত লাগালে সেক্ষেত্রে হাত আবার ধুয়ে নিবেন।

(০৭)
উক্ত কাপর তিনবার ধোয়া হলে ও প্রত্যেকবার নিংড়ানো হলে তাহা পাক হবে।

(০৮)
সেই কাদায়/পানিতে নাপাকির চিন্হ/গন্ধ পাওয়া গেলে তাহা নাপাক বলে গন্য হবে।

নতুবা পাক।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...