উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রশ্নে উল্লেখিত ১ম ফতোয়ার সারমর্ম হলো ইসলামী খেলাফত থাকাকালীন সময়ে আমীরের আদেশে
(চুক্তিবিহীন) কাফিরদের সাথে তাদের কুফরির দরুণ জিহাদ করা ফরযে কেফায়া পর্যায়ের।
তথা প্রথমে তাদের কে ইসলামের দাওয়াত দেয়া হবে।হয়তো তারা ইসলাম কবুল করবে,নয়তো তারা নত হয়ে জিযয়া প্রদাণ করবে।
অন্যথায় তাদের সাথে জিহাদ করা হবে।
এটা অবশ্যই খেলাফত থাকাকালীন সময়ের সাথে খাস।
প্রশ্নে উল্লেখিত ২য় নং ফতোয়ার ব্যাখ্যা হলোঃ
শরীয়তের বিধান হলো কোনো কাফির দেশ মুসলমানদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত থাকলে মুসলমানরা সেই কাফির দেশে আক্রমন করতে পারে।
অথবা যেসব রাস্ট্রে কাফেরদের সাথে মুসলমানদের যুদ্ধ হচ্ছে, যেমন আফগানিস্তান,ফিলিস্তিন ইত্যাদি
এমতাবস্থায় আল্লাহ তায়ালার দ্বীনকে সমুন্নত ও উঁচু রাখার নিমিত্তে জিহাদ করা যাবে।
ইসলামী খেলাফত থাকুক আর না থাকুক, যেসব রাষ্ট্রে যুদ্ধ চলছে না, বরং বিধর্মী এবং মুসলিমরা একত্র বসবাস করছে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে যেমন বাংলাদেশ এর মত যেসব রাষ্ট্রে কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চলছে না, এসব এলাকা ও রাষ্ট্রে বিনা কারনে কোনো কাফেরকে হত্যা করা বা তার কুফরির কারনে তাকে হত্যা করা,বা তাদের এলাকা,গ্রামে হামলা করা কিছুতেই বৈধ নয়।
,
★ অমুসলিমদের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে সূরা মুমতাহিনার এই নির্দেশনাটি বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য-
لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ أَنْ تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ إِنَّمَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَأَخْرَجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَى إِخْرَاجِكُمْ أَنْ تَوَلَّوْهُمْ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরম্নদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ি থেকে বহিষ্কার করেনি, তাদের সঙ্গে সদাচরণ করতে ও তাদের প্রতি ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালোবাসেন। আল্লাহ তো তোমাদের তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন, যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে এবং তোমাদেরকে বের করার কাজে একে অন্যের সহযোগিতা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে তারা জালিম। -সূরা মুমতাহিনা : ৮-৯
,
সুতরাং উপরোক্ত দুটি ফতোয়ার আলোকে সারাংশ দাড়ায়ঃ
★ইসলামী খেলাফত থাকলে,মুসলমানদের আমীরের আদেশ ক্রমে কাফের দের সাথে বা কাফের রাস্ট্রের সাথে জিহাদ করা যাবে।
তবে শর্ত হলো সেই কাফের বা কাফের রাস্ট্র মুসলমানদের সাথে চুক্তিবদ্ধ অবস্থায় না থাকা।
সেক্ষেত্রে তিনটি স্টেপ পার করতে হবে।
প্রথমে তাদের কে ইসলামের দাওয়াত দেয়া হবে।হয়তো তারা ইসলাম কবুল করবে,নয়তো তারা নত হয়ে জিযয়া প্রদাণ করবে।
অন্যথায় তাদের সাথে জিহাদ করা হবে।
★যদি চুক্তিবদ্ধ অবস্থায় থাকে,তাহলে চুক্তি চালাকালীন সময়ে কোনো জিহাদ চলবেনা।
★কাফেররা চুক্তি ভঙ্গ করলে তাদের সাথে চুক্তির সময়েই জিহাদ করা যাবে।
★ইসলামী খেলাফত থাকুক,বা না থাকুক,কাফেররা যদি মুসলমানদের উপর আক্রমন করে,তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা ঐ এলাকার সকল মুসলিম পর্যায়ক্রমে আশেপাশের দেশের মুসলমানদের উপরেও জিহাদ ফরনে আঈন হয়ে যায়।
★ইসলামী খেলাফতও নেই,আবার এসব রাষ্ট্রে যুদ্ধও চলছে না, বরং বিধর্মী এবং মুসলিমরা একত্র বসবাস করছে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে বসবাস করছে,
আবার কাফেররা আগ বাড়িয়ে হামলাও করেনি,তাহলে কোনো নিরপরাধ কাফের বা কাফের রাস্ট্রের বিরুদ্ধে বিনা কারনে বা কুফরীর কারনে যুদ্ধ/কাউকে হত্যা করা জায়েজ নেই।
,
(প্রিয় পাঠক,পাঠিকাবৃন্দ্র উভয় ফাতাওয়ার মাঝে কোনো বৈপরীত্ব নেই।
আশা করি স্পষ্ট হয়েছে।)