আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
189 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (91 points)
আমার স্ত্রী পর্দা করতো না,তখন আমারো দ্বিনী বুঝ ছিলো না। তাই কিছু বলতামনা, যখন আমি তাকে পর্দা সম্পর্কে বলি তখন সে করতে পারবে না এটা তার জন্য কষ্ট কর এমন বলেছিলো,সারাজীবন এই সব সম্পর্কে উদাসীন ছিলো একবারেই সংশোধন সম্ভব নয় তাই বলে ছিলাম ঠিকাছে তুমি পর্দা করা শুরু করো তবে হাত, মুখ খোলা রাখতে পারবে।  তখন সে বলেছিলো যে এরকম হলে পারবে এরচেয়ে বেশি পারবে না। এখন মাশ আল্লাহ বাইরে গেলে মুখ ঢাকা থাকে হিজাবের সাথে মুখ ঢাকে। কুনো গায়রে মাহরাম ছেলের সাথে অতিরিক্ত কথাও বলে না। তবে সমস্যা হলো ঘরে বা নিকট বর্তী গায়রে মাহরামের সামনে মুখ ঢাকে না। কুনো পোগ্রামেও সেম মুখ ঢাকে না। আর সব ক্ষেত্রেই মাশাআল্লাহ সতর টা অন্তত ঢাকে।এই নিয়া বললে সে বলে এর চেয়ে বেশি করতে পারবে না।আমিয়ো প্রথম দিকে বলেছিলাম যে মুখ খোলা রাখতে পারো,এর বেশি করতে জোর করবো না। ( যেহেতু মতানক্য আছে আবু হানিফা সহ অনেক বড় বড় আকাবির এই মতের পক্ষে আছেন, তাছাড়া ভেবেছি অন্তত এটা করুক বাঁচার তো রাস্তা থাকবে একটা)।তার বাকি দ্বীনদারী মাশাআল্লাহ ভালো,নামাজ পরা, অন্য ইবাদত, উপার্জনে হালাল হারামের চিন্তা সব দিকেই আলহামদুলিল্লাহ। দ্বীনের কাজ করার ব্যাপরেও আগ্রহী,দ্বীন আমল নিয়েও শুধু এই একটি জায়গায় আমি ওর উপর হতাশ।

এখন আমি পর্দা নিয়ে কথা বললে জোর করলে মারাত্মক রাগারাগি করে,সে খুবই একরোখা বলে জোর করলে যেটুক করছে তাও করবে না। আবার মন চাইলে নিজে থেকেই করবে। তো কলহের ভয়ে এবং এই সব কথা বলে লাভ হবেই না বরং হিতে বিপরীত হবে এই ভয়ে এইটা নিয়ে ভালো ভাবে শাষন করতে পারছি না,তাছাড়া আমি কথা দিয়ে ছিলাম যে আর বেশি পর্দা করতে জোর করবো না।
তবে আমার কেনো জানি মনে হয় একদিন নিজ থেকে সব করবে,তবে তা তো নিশ্চিত ানা।

এখন আমি আল্লাহর কাছে খুব করো দুজনেরই হেদায়েত এর দোয়া করি, মাঝেমধ্যে  মন ভালো থাকলে মন বুঝে নসীহা করি ইত্যাদি যতো রকম চেষ্টা আছে করি জোর করা ছাড়া,কারণ এই বিষয়টা ওর বুঝে না আসে তবে আমি জোর করে করানো পসিবল না,বরং উল্টোটা হবে থেকেই।

১. এই অবস্থায় আমি কি দাইয়ুস এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবো? দাইয়ুস হলে এর থেকে বাচতে কি করবো আমি? ওকে ত্যাগ করা করাই কি সমাধন?

২.এখন যে পর্দা করে কখনোই ভাবি নাই এতোটুক ও আমার কথায় হোক বা নিজ থেকে হোক করবে।তার মাঝেও কিছু ছোট ত্রুটি থাকে যেমন চলাফেরার সময় ফুলহাতা জামার হাত একটু উপরে উঠে যাওয়া,কপালের কিছু অংশ খোলা থাকা, পায়ের দিকে নিচের পাজামা(টাইট) দেখা যাওয়া. ইত্যাদি এর ফলে আমি এগুলো সংশোধন এর জন্য বলি। তাও মাঝেমধ্যে এসব ভুল থেকে যায়। পরিপূর্ণ পর্দা না হওয়ার জন্য আমি নসিহা করার পরেও এগুলো সংশোধন না হলে আৃমি কি দাইয়ুস হবো? হলে করনীয় কি? ওকে ত্যাগ করাই কি সমাধান?

৩.বউ এর মা বাবার অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন ভালো না ভাই একটা ছোট বাবাও ঋণের উপর আছেন সে চায় চাকরী বা কিছু করে টাকা আয় করে মা বাবাকে সাহায্য করতে, এই অবস্থায় তাকে বাইরে চাকুরির অনুমতি দিলে আমি কি দাইয়ুস হবো?

৪. আমার মা ও পর্দার ব্যাপরে খুব উদাসীন বাবা জীবিত আমার কি করণীয়?

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)


ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/572 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
পর্দার তিনটি স্থর নিয়ে।
প্রথম স্থরঃ
মহিলা সর্বাবস্থায় ঘরে বসে থাকবে,অর্থাৎ ঘরের ভিতর থাকার মাধ্যমে ব্যক্তি পর্দা করবে।
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺳَﺄَﻟْﺘُﻤُﻮﻫُﻦَّ ﻣَﺘَﺎﻋًﺎ ﻓَﺎﺳْﺄَﻟُﻮﻫُﻦَّ ﻣِﻦ ﻭَﺭَﺍﺀ ﺣِﺠَﺎﺏٍ ﺫَﻟِﻜُﻢْ ﺃَﻃْﻬَﺮُ ﻟِﻘُﻠُﻮﺑِﻜُﻢْ ﻭَﻗُﻠُﻮﺑِﻬِﻦَّ
তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ।
{সূরা আহযাব-৫৩}
ﻭَﻗَﺮْﻥَ ﻓِﻲ ﺑُﻴُﻮﺗِﻜُﻦَّ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺒَﺮَّﺟْﻦَ ﺗَﺒَﺮُّﺝَ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﺍﻟْﺄُﻭﻟَﻰ ﻭَﺃَﻗِﻤْﻦَ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻭَﺁﺗِﻴﻦَ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻭَﺃَﻃِﻌْﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻴُﺬْﻫِﺐَ ﻋَﻨﻜُﻢُ ﺍﻟﺮِّﺟْﺲَ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟْﺒَﻴْﺖِ ﻭَﻳُﻄَﻬِّﺮَﻛُﻢْ ﺗَﻄْﻬِﻴﺮًﺍ
তরজমাঃ
তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।(সূরা-আহযাব-৩৩)

দ্বিতীয় স্থরঃ
প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া যাবে,এক্ষেত্রে এক বা উভয়  চক্ষু খোলা রেখে সমস্ত শরীর ঢেকে রাখতে হবে।
যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﻗُﻞ ﻟِّﺄَﺯْﻭَﺍﺟِﻚَ ﻭَﺑَﻨَﺎﺗِﻚَ ﻭَﻧِﺴَﺎﺀ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻳُﺪْﻧِﻴﻦَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻦَّ ﻣِﻦ ﺟَﻠَﺎﺑِﻴﺒِﻬِﻦَّ ﺫَﻟِﻚَ ﺃَﺩْﻧَﻰ ﺃَﻥ ﻳُﻌْﺮَﻓْﻦَ ﻓَﻠَﺎ ﻳُﺆْﺫَﻳْﻦَ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭًﺍ ﺭَّﺣِﻴﻤًﺎ
তরজমাঃ
হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।(সূরা আহযাব-৫৯)

তৃতীয় স্থরঃ
মহিলাদের সমস্ত দেহ আবৃত থাকবে কিন্তু ফিতনার আশংকা না থাকলে মুখমণ্ডল ও হাতের তালু খোলা রাখা যাবে।এ স্থর নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে।তবে সর্বাবস্থায় ফিতনার আশংকা না থাকাই লক্ষণীয়।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি সম্ভবত ওয়াটসাফে জিজ্ঞাসা করেছিলেন,সেখানেও জবাব দিয়েছিলাম।
আপনার স্ত্রীকে মুখ ঢেকে হিজাব পরিধান করেই পর্দা করতে হবে। নতুবা আপনি দায়ুসের বিধান থেকে বের হতে পারবেন না। সম্পূর্ণ পর্দা পালন করাতে আপনাকে সর্বোচ্ছ চেষ্টা করতে হবে।তবে এর জন্য সংসার ভঙ্গের আপাতত কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই।

যদি আপনার শশুড় শাশুড়ি নিতান্তই অভাবে থাকেন,।তাহলে পর্দার ভিতর থেকে আপনার স্ত্রী যেকোনো কাজ করতে পারবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...