আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
99 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
মসজিদ বানানোর জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক পরিবার বা লোক লাগবে ?
এব্যাপারে কি নির্দিষ্ট কোনো হাদিস আছে ?
এক্ষেত্রে ইসলাম এর বিধান কি ?


আর কোনো এলাকা তে আগে থেকে মসজিদ থাকলে নতুন মসজিদ বানানোর ক্ষেত্রে ইসলামিক বিধান কি ?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


মসজিদ বানানোর জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক পরিবার বা লোক লাগবেনা।
এক্ষেত্রে ইসলাম এর বিধান হলোঃ-

কাছাকাছি মসজিদ বানানোর ক্ষেত্রে যদি মুসলমানদের বিভক্ত করা ও আগের মসজিদে মুসল্লি হ্রাস করার অসৎ ইচ্ছা থাকে,তাহলে এমন মসজিদ বানানো জায়েজ নেই।
তবে যদি জায়গা সংকুলান না হওয়ায় দূরত্ব অনেক বেশি হওয়ার মুছল্লিদের কষ্ট হওয়ার প্রেক্ষিতে ভালো উদ্দেশ্যে আরেকটি মসজিদ বানানো হয়,তাহলে তাহা জায়েজ।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا مَسۡجِدًا ضِرَارًا وَّ کُفۡرًا وَّ تَفۡرِیۡقًۢا بَیۡنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ اِرۡصَادًا لِّمَنۡ حَارَبَ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ مِنۡ قَبۡلُ ؕ وَ لَیَحۡلِفُنَّ اِنۡ اَرَدۡنَاۤ اِلَّا الۡحُسۡنٰی ؕ وَ اللّٰہُ یَشۡہَدُ اِنَّہُمۡ لَکٰذِبُوۡنَ ﴿۱۰۷﴾ 

আর যারা মসজিদ নির্মাণ করেছে ক্ষতিসাধন, কুফর ও মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এবং এর আগে আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধে যে লড়াই করেছে তার গোপন ঘাঁটিস্বরূপ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে, আর তারা অবশ্যই শপথ করবে, আমরা কেবল ভালো চেয়েছি; আর আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, অবশ্যই তারা মিথ্যাবাদী।
(সুরা তাওবা ১০৭)

মসজিদে জেরারের সংজ্ঞা হলো, যে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে লোক দেখানোর জন্য, লৌকিকতা প্রদর্শনের জন্য বা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কিংবা অপবিত্র ও অবৈধ অর্থে যেটি নির্মাণ করা হয়েছে, শরিয়ত মতে তা মসজিদে জেরারের অন্তর্ভুক্ত (মাদারেকুত তানজিল : ২/১১১)। 

لَا تَقُمۡ فِیۡہِ اَبَدًا ؕ لَمَسۡجِدٌ اُسِّسَ عَلَی التَّقۡوٰی مِنۡ اَوَّلِ یَوۡمٍ اَحَقُّ اَنۡ تَقُوۡمَ فِیۡہِ ؕ فِیۡہِ رِجَالٌ یُّحِبُّوۡنَ اَنۡ یَّتَطَہَّرُوۡا ؕ وَ اللّٰہُ یُحِبُّ الۡمُطَّہِّرِیۡنَ ﴿۱۰۸﴾ 

আপনি তাতে কখনো সালাতের জন্য দাঁড়াবেন না; যে মসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন থেকেই স্থাপিত হয়েছে তাকওয়ার উপর, তাই আপনার সালাতের জন্য দাঁড়ানোর বেশী হকদার। সেখানে এমন লোক আছে যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন ভালবাসে, আর পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে আল্লাহ পছন্দ করেন।
(সুরা তওবা ১০৮)

اَفَمَنۡ اَسَّسَ بُنۡیَانَہٗ عَلٰی تَقۡوٰی مِنَ اللّٰہِ وَ رِضۡوَانٍ خَیۡرٌ اَمۡ مَّنۡ اَسَّسَ بُنۡیَانَہٗ عَلٰی شَفَا جُرُفٍ ہَارٍ فَانۡہَارَ بِہٖ فِیۡ نَارِ جَہَنَّمَ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۱۰۹﴾ 

যে ব্যক্তি তার ঘরের ভিত্তি আল্লাহর তাকওয়া ও সন্তুষ্টির উপর স্থাপন করে সে উত্তম, না ঐ ব্যক্তি উত্তম যে তার ঘরের ভিত্তি স্থাপন করে এক খাদের ধ্বংসোন্মুখ কিনারে, ফলে যা তাকেসহ জাহান্নামের আগুনে গিয়ে পড়ে? আর আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে হেদায়াত দেন না।
(সুরা তওবা ১০৯)

যদি কোনো মসজিদে মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হয়, তাহলে আরেকটি মসজিদ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে সতর্কতা হলো, এতটুকু দূরত্বে মসজিদ নির্মাণ করবে, যাতে এক ইমামের কিরাতের সঙ্গে অন্য মসজিদের ইমামের কিরাত সাংঘর্ষিক না হয়। তবে উভয় মসজিদের মাঝখানে যদি কেবল একটি দেয়াল থাকে, তবু উভয় স্থানে পৃথক জামাত আদায় করা বৈধ। (ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১৪/৪১০)

মুফতি শফি (রহ.) লিখেছেন, বর্তমান যুগে কোনো মসজিদের কাছাকাছি অন্য মসজিদ নির্মাণ করা হলে এবং এর পেছনে যদি মুসলমানদের বিভক্ত করা ও আগের মসজিদে মুসল্লি হ্রাস করার অসৎ ইচ্ছা থাকে, তাহলে এতে মসজিদ নির্মাতার সওয়াব তো হবেই না, বরং বিভেদ সৃষ্টির কারণে সে গুনাহগার হবে। তা সত্ত্বেও শরিয়ত মতে, সে জায়গাকে মসজিদ বলা হবে এবং মসজিদের বিধিবিধান এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। একে ধ্বংস করা কিংবা আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া জায়েজ হবে না। (মা’আরেফুল কোরআন)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...