আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
364 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
closed by
ক) নামাযে আমার আশে পাশে গায়রে মাহরাম আসলে  i) আমি ছেলে হলে আমার ক্ষেত্রে নামায ভাঙবে?
ii) আমি মেয়ে হলে আমার নামায ভাঙবে?
খ) i) দুইজন বাচ্চা ছেলে একসাথে কতদিন গোসল করতে পারবে?
ii) দুইজনে বাচ্চা মেয়ে একসাথে কতদিন গোসল করতে পারবে?
iii) বাচ্চা ছেলে আর বাচ্চে মেয়ে কতদিন একসাথে গোসল করতে পারবে?

গ) একজনে মেয়ের নামাযের সময় মাথার চুল দেখা গেলে নামায হবে?
ঘ) বদনজর, জ্বীনের আসর থেকে বাঁচতে হেফাজতের আমলের গুরুত্ব কতটুকু? হেফাজতের আমল কি কি কয়েকটি বললে ভালো হয়? মেয়েদের মাথায় ওড়না দিয়ে বারান্দায় বা উঠানে যাওয়া ও পর্দা করে বাইরে যাওয়াতে বদনজর/ জ্বীনের আসর থেকে হেফাজত হয়?

ঙ) একবার খাজা উসমান হারুনী রহ. তার শাগরেদ খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী রহ. কে বললেন, যে আমার পিছনে নামায পড়বে সে জান্নাতী, আর যে এই খবর অন্যকে পৌঁছে দিবে সে জাহান্নামী। (এই ঘটনা আইওএম এর শীট এ আছে, দাওয়াহ কোর্সের দরস নং 5 এ)। তো মঈনুদ্দিন চিশতী রহ. সবাইকে বলে দিলেন। তো এইভাবে খাজা উসমান হারুনী রহ. মিথ্যা বললেন পরীক্ষা করার জন্য।
মিথ্যা বলা কোন কোন ক্ষেত্রে জায়েয?
চ) দুইজন মহিলা এসে বিলাল রা. কে নবিজির কাছে যেয়ে একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে বললেন, আর তাদের পরিচয় দিতে মানা করলেন। কিন্তু বিলাল রা. যেয়ে পরিচয় দিয়ে দিলেন নবিজির কাছে। (রিয়াদুস সালেহীন অনুবাদ পৃষ্ঠা ২০৮) (বুখারী, মুসলিম) এইভাবে কথার বরখেলাপ করলে কি গুনাহ হওয়ার কথা ছিলো না?
closed

1 Answer

+1 vote
by (597,330 points)
selected by
 
Best answer


ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/9571 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
নামাযে নারী-পুরুষের মুহাযাত তথা সামনাসামনি হয়ে যাওয়া নামায ভঙ্গের কারণ।তবে মুহাযাতের মাধ্যমে নামায ফাসিদ হতে হলে সাতটি শর্ত রয়েছে।
এরমধ্যে পাঁচ নাম্বার শর্ত হলো,
الخامس كونهما في مكان واحد بلا حائل؛ لأنه يرفع المحاذاة وأدناه قدر مؤخرة الرحل؛ لأن أدنى الأحوال القعود فقدر أدناه به وغلظه كغلظ الإصبع والفرجة تقوم مقام الحائل ولهذا لم يفردها بالذكر وأدناه قدر ما يقوم فيه الرجل، كذا قال الزيلعي.
নারী-পুরুষ উভয় একই স্থানে পাাশাপাশি প্রতিবন্ধকতা বিহীন হওয়া।প্রতিবন্ধকতা  মুহাযাতকে বাধা প্রদাণ করে।সর্বনিম্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী হলো,এক আঙ্গুল চওড়া এবং দেড়হাত উচু কিছু একটা মধ্যখানে থাকা।একজন পুরুষ দাড়াতে যতটুকু জায়গার প্রয়োজন মধ্যখানে ততটুকু ফাঁকা জায়গাই মুহাযাতের জন্য প্রতিবন্ধকতার শামিল।(দুরারুল হুক্কাম শরহু গুরারিল আহক্বাম-১/৯১)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(ক)
(১)
পুরষ নামাযে থাকাবস্থায় মহিলা একেবারে পাশাপাশি দাড়ালে নামায ফাসিদ হবে।চায় মাহরাম হোক বা গায়রে মাহরাম হোক।তবে উপরোক্ত শর্তের আলোকে পাশাপাশি দাড়াতে হবে।

(২)
নারী নামাযে থাকাবস্থায় মহিলা একেবারে পাশাপাশি দাড়ালে নামায ফাসিদ হবে।চায় মাহরাম হোক বা গায়রে মাহরাম হোক।তবে উপরোক্ত শর্তের আলোকে পাশাপাশি দাড়াতে হবে।

(খ)
(১)
সাবালক হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। ফিতনার আশংকা না থাকলে সাবালক হওয়ার পরও গোসল করা যাবে।
(২)
সাবালক হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। ফিতনার আশংকা না থাকলে সাবালক হওয়ার পরও গোসল করা যাবে।
(৩)
দুইজন বাচ্চা ছেলে আর বাচ্চে মেয়ে একসাথে ততদিন গোসল করতে পারবে, যতদিন না তাদের মধ্যে নারী পুরুষের বুঝ চলে আসবে। এক্ষেত্রে সাবালক হওয়া জরুরী নয়, বরং অনেক ছেলেমেয়ে সাবালাক হওয়ার পূর্বে তাদের মধ্যে বুঝ চলে আসে। এইজন্য সতর্কতামূলক অবস্থান হল, ৫/৬ বৎসর থেকে তাদেরকে পৃথক গোসলের ব্যবস্থা করে দেয়া।

(গ)
চুল সতরের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তিন তাসবিহ সমপরিমাণ সময় চুল খুলা থাকলে নামায ফাসিদ বলে গণ্য হবে।

(ঘ)
https://www.ifatwa.info/15412 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
সর্বপ্রথম পরামর্শ দিবো,ভালো কোনো বিশুদ্ধ আকিদার মুদাব্বিরের শরণাপন্ন হওয়ার।মুদাব্বির মানে যিনি কুরআন হাদীস থেকে সেহেরের চিকিৎসা করে থাকেন।যাকে রুকইয়ায়ে শরঈয়্যাহ বলা হয়।
তাছাড়া আপনাকে ঘরোয়া ভাবে কিছু রুকইয়ার পরমার্শ দিচ্ছি,
(১)সকল প্রকার ফরয ওয়াজিব ইবাদত যত্নসহকারে পালন করা।এবং সকল প্রকার হারাম ও নাজায়ে কাজ হতে বেঁচে থাকে।
(২) অধিক পরিমাণ কুরআন তেলাওয়াত করা।
(৩)দু'আ, জায়েয তাবীয ও যিকিরের মাধ্যমে নিজেকে হেফাজতের চেষ্টা করা।

নিম্নোক্ত দু'আকে সকাল সন্ধ্যা তিনবার করে পড়া।
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ، فِي الْأَرْضِ، وَلَا فِي السَّمَاءِ، وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ،
বিস্তারিত-https://www.ifatwa.info/1093
প্রত্যক নামাযের পর ঘুমাইবার সময় এবং সকাল সন্ধ্যা আয়াতুল কুরসী পড়া।এবং ঘুমাইবার সময় ও সকাল সন্ধ্যা তিনবার করে সূরা নাস,সূরা ফালাক্ব ও সূরা ইখলাস তিনবার করে পড়া।এবং প্রতিদিন নিম্নোক্ত দু'আটি একশতবার করে পড়া।
لا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيئ قدير،

প্রতিদিন সকাল সাতটা করে খেজুর খাওয়া।মদিনার খেজুর হলে ভালো।দেখুন-১৮১৬
(এলাজে কুরআনী-০৩)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
https://www.ifatwa.info/3467

(ঙ)
"এইভাবে খাজা উসমান হারুনী রহ. মিথ্যা বললেন"

কি মিথ্যা বললেন, সেটাতো আপনি পরিস্কার ভাবে বলেননি।
আপনি পরিস্কার করে কমেন্টে উল্লেখ করবেন।

হারুনী সাহেব, একজন বুজুর্গ মানুষ।হয়তো উনার কাশফ হয়েছিল যে, আজ উনার পিছনে একজন জান্নাতি মানুষ নামায পড়বে, এবং এই খবর যে অন্যর কাছে একজন জাহান্নামি ব্যক্তি পৌছাবে।

কাশফ, শরীয়তের কোনো দলীল নয়। কাশফ কাশফই।যার কাশফ হবে, তারজন্য একটি ইশারা।তবে অন্যর জন্য মানা জরুরী নয়।

(চ)
ঐ দুই মহিলার কথা ছিল এরকম, নাম জিজ্ঞাস না করলে আমাদের নাম বলবেন না। নতুবা নাম জিজ্ঞেস করা অবস্থায় তো নাম বলতেই হবে।
মুল্লা আলী কারী রাহ বলেন,
وإنَّما أرادَا الإخفاءَ مُبالَغةً في نَفْيِ الرِّياءِ، أو رِعايةً للأفضلِ
ঐ দুই মহিলার উদ্দেশ্য ছিল, রিয়া থেকে বাচা,এবং উত্তম মত ও পথকে অনুসরণ করা। এবং এই জন্য তারা তাদের নাম উল্লেখ করতে বারণ করেছিলো।কেননা প্রশ্নই ছিল, যাকাত সম্পর্কে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
দেখেন,এগুলো একটি ঘটনা মাত্র।এই ঘটনাকে ঘটনার জায়গাই রাখতে হবে।
এদ্বারা কোনো হুকুম বের করা যাবে না।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...