আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
83 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (76 points)
edited by
আসসামুআলাইকুম ওরাহমাতুল্লা শায়েখ।

১।আমি শায়েখ চায় যথেষ্ট পর্দা করতে।কিন্তুু আমি মাস্ক পরলে আর নেকাব পরি না।সেটা নিয়ে স্বামি বার বার বকা দেয়।আর আমি এখনো বাবার বাড়িতে থাকি।তহ স্বামী বলে "আমার কথা মত চলতে হবে যেমন চাই তেমন চলতে হবে না চললে পরিনতি ভাল হবে না স্বামীর অবাধ্য তুমি"।এটা কি শর্ত যুক্ত তালাকের পর্যায়ে পড়বে নাকি ধমক বা আবদারের পর্যায়ে পড়বে স্বামীর কথাটা?কোন কারনে স্বামীর কথা মত চলতে না পারলে ভবিষ্যৎ এ তাহলে কি তালাক হবে?মানে  আমার মা বাবার অমতে বিয়ে তহ মা বাবার কোন কথা আমি মানলে যেটা স্বামী চায় না সেরকম করলে কি তালাক হবে?স্বামীকে এই ব্যপারে প্রশ্ন করলে গালি দেয় অনেক। আগে অন্য কথা নিয়ে বলেছিলাম কোন নিয়তে বলেছিল সেটা। ওনি অনেক বকা দিয়েছিল।আর বলেছিল তুকে বিয়ে করছি যে ছাড়ার জন্য নয়।বারন করছে তালাকের ব্যপারে কোন প্রশ্ন না করতে।তাই প্রশ্ন করতে পারতেছি না।
২।স্বামী যদি বলে  এবার যদি তুমার কাছে যায় ফিরে আসব যদি আমার মন মত নিজেকে গড়ে তুলতে না পার।এটাও কি শর্ত যুক্ত তালাকের পর্যায়ে পরবে?আসলে স্বামী আমাকে নামিয়ে নিয়ে যায় নি। আমি এখনো বাবার বাড়িতে থাকি।আমার কাছে আসলে বুঝিয়েছে।

৩। কিছু  কেনায়া বাক্য স্বামী মাঝে মাঝে বলে।আমি বারবার প্রশ্ন করি কোন নিয়তে বলেছে।ওনি কিছু বলে না মাঝে মাঝে গালি দেয়।আসলে মেসেজে কথা হয়।আর বলেছিল তুকে বিয়ে করছি যে ছেড়ে দেওয়ার জন্য না।বারবার একই প্রশ্ন করে বিরক্ত করে ফেলস কেন? কিন্তুু তারপর  মেসেজে আবার বলে "৫ মিনিট টাইম নাই তুর থেকে আমার জন্য, তহ তুকে কি জন্য লাগতেছে যে আমার? কিছুদিন দূরে থাক বা এভাবে থাক কথা বলিস না। আবার বলে তখন কি করব?  পরে আবার বললে কি করব?  ওনি তহ রেগে যায়।আমার অনেক ভয় লাগে কোন গুণাহ হবে কিনা ভেবে। কান্না করি আল্লাহ কোন আমাকে যেনার শাস্তি দিবে কিনা।ভবিষ্যৎ এ বললে কি করব? ওনি উত্তর ও  দেয় না আমি জিগ্যেস করলে গালিগালাজ করে।

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


তালাক খুবই মারাত্মক একটি বিষয় । নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★তালাক স্পষ্ট বাক্য দ্বারাও হতে পারে,আবার কেনায়া শব্দ,ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারাও হতে পারে।
কেনায়া তালাক বলা হয় স্পষ্ট তালাক শব্দ না বলে বরং তালাকের ইঙ্গিতসূচক শব্দ বলে তালাক দেওয়া। 

★★শরিয়তের পরিভাষায় ইঙ্গিত সূচক বাক্যে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

হেদায়া গ্রন্থে আছেঃ 

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.

احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ  
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে যে তোমাকে আমি ছেড়ে  দিলাম, যা খুশি তাই করো,তুমি মুক্ত, তুমি স্বাধীন, তুমি স্বামী খুজো,বা স্বামী তালাশ করো,নিজের পরিবারে সাথে যুক্ত হও,তাহলে এটিও কেনায়া তালাক।
কেনায়া তালাক হলো ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা যেটা হয়।
কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয়।

আরো জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত বাক্য কিনায়া তালাকের বাক্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেনা।

এটা শর্ত যুক্ত তালাকের পর্যায়ে পড়বেনা।
ধমক বা আবদারের পর্যায়ে পড়বে স্বামীর কথাটা।
কোন কারনে স্বামীর কথা মত চলতে না পারলে ভবিষ্যৎ এতে তালাক হবেনা।
আপনার মা বাবার কোন কথা আপনি মানলে যেটা স্বামী চায় না সেরকম করলে তালাক হবেনা।

(০২)
এটা শর্ত যুক্ত তালাকের পর্যায়ে পরবেনা।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে যেনার শাস্তি দিবেননা।  
আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...