আসসালামুয়ালাইকুম হুজুর,
কোন ব্যক্তির যদি কোন ঘটনার কারণে সন্দেহ হয় যে, তার হয়ত তার স্ত্রীর সাথে তালাক হয়ে গিয়েছে। আর সে যদি সেই ঘটনার জন্য মনে মনে ধরে নেয় যে, তার দুই তালাক হয়েছে। উক্ত কারনে সে তার স্ত্রীর সাথে আবার বিয়ে নবায়ন করলো।
বিয়ের পরের দিন তার আর তার স্ত্রীর মাঝে খুনসুটি চলছিল। ঐ সময় তার স্ত্রী তাকে উত্ত্যক্ত করছিল। তখন সে তার স্ত্রীকে এরকম করতে বারণ করলো এবং বললেন, “অলরেডি দুইবার হয়ে গিয়েছে একবার বাকি আছে।” বা “অলরেডি দুইবার দিয়ে দিয়েছি একবার বাকি আছে।”
[উপরোক্ত দুটি বাক‍্যের যেকোনো একটি বাক্য সে বলেছিল।]
উপরোক্ত বাক‍্যে যদিও সে তালাক শব্দটি উচ্চারণ করেননি, কিন্তু সে তালাকের নিয়তে বা তালাকের কথা বোঝাতেই এই বাক্য বলেছিল এবং তার স্ত্রীও সেটা বুঝতে পেরেছিল। [সে কোনো সময়েই তার স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তালাক শব্দটি উচ্চারণ করেননি।]
কিন্তু এই ঘটনার কিছুদিন পর সে জানল, যে ঘটনার জন্য সে ধরে নিয়েছিল দুই তালাক হয়েছে আসলে সেই ঘটনার ফলে কোন তালাক হয়নি।
এখন প্রশ্ন হলো,
১/ উক্ত বর্ণনায় উল্লেখিত তার উচ্চারিত বাক্যের জন্য কি তার দ্বারা তালাকের স্বীকারোক্তি হবে?
২/ তারা তো তালাকের সন্দেহের কারণেই বিয়ে করেছিল, তাই যদি ঐ ঘটনার দ্বারা তালাকের স্বীকারোক্তি হয়ে যায় তবে কি তাদের আবার বিয়ে নবায়ন করতে হবে? [যেহেতু ঐ বাক‍্যটি সে বিয়ে নবায়ন করার পরে বলেছিল]
৩/ উপরোক্ত যে দুটি বাক‍্যের একটি উচ্চারণ করা হয়েছে বলা হয়েছে সেই বাক‍্য দুটির মধ্যে কি কোন পার্থক্য আছে তালাকের স্বীকারোক্তির ক্ষেত্রে?
৪/ ঐ ব্যক্তি যদি এই ঘটনা কারো কাছে বর্ননা করার সময় কারো কারো কাছে উপরোক্ত বাক্য দুটির একটি উচ্চারণ করেছিল বলে, আবার অন‍্য কারো কারো কাছে ঐ ঘটনার বর্ণনা দেয়ার সময় উপরোক্ত বাক্য দুটির অন‍্যটি উচ্চারণ করেছিল বলে তাহলে কি স্বীকারোক্তি যদি হয় তার বিধানের ক্ষেত্রে কোন পরিবর্তন হবে?
[যদিও তার উভয় বাক‍্যের মাধ্যমেই এক‌ই প্রেক্ষাপটের কথা বোঝানোর উদ্দেশ্য ছিল]
৫/ উপরোক্ত সকল বিবরণ ও প্রশ্ন দেখার পর উক্ত ব্যক্তির জন্য আপনার পরামর্শ কি থাকবে? [সে একজন ওয়াস‌ওয়াসার রোগী এবং সে তার স্ত্রীকে অনেক ভালবাসে।]
৬/ তালাকের প্রশ্ন লেখার সময় অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অজ্ঞতা বশত বা ভুলবশত দাড়ি, কমা বা অন্যান্য চিহ্ন লেখার সময় ভুল হয়ে যায়, যার ফলে প্রশ্নের অর্থ অনেক সময় পাল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।[কারন অধিকাংশ মানুষের ব‍্যাকরন সম্মন্ধে সঠিক জ্ঞান নেই।]
কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এক্ষেত্রে ব‍্যাকরণগত বা বানানগত ভুল থাকলেও আপাত দৃষ্টিতে দেখলে বোঝা যায় প্রশ্নকর্তা আসলে কি বোঝাতে চেয়েছেন।
[উদাহরণস্বরূপ আমার এই লেখা লিখতে গিয়ে ঐ ব্যক্তির উচ্চারিত সম্ভাব্য বাক্য দুটি লেখার সময় ("“”) চিহ্নগুলো লেখার ক্ষেত্রে প্রথমে ভুল হয়েছিল, প্রথমে " " এই চিহ্ন দিয়েছি এবং পরে “ " এই চিহ্ন ব্যবহার করেছি। এর অনেকক্ষণ পরে যখন খেয়াল আসলো তখন “” এই চিহ্ন ব্যবহার করেছি। যদিও সাধারণ ভাবে দেখলে বোঝা যাবে আমি কি লিখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কিছু হয়ত ব‍্যাকরনগত বা বানানগত ভুল থাকে।]
এক্ষেত্রে প্রশ্নকর্তা কি বোঝাতে চেয়েছেন তা বোঝার পরেও ব‍্যাকরণগত বা বানানগত ভুলের কারণে কি প্রশ্নের অর্থ পাল্টে যাবে?
এর দ্বারা কি কোনভাবে প্রশ্নকর্তার তালাক হ‌ওয়ার সম্ভাবনা থাকে?
৭/ কেউ নিজের সাথে কিছু মিল এবং কিছু অমিল বা সম্পুর্ণ মিল রেখে তালাকের ব‍্যাপারে প্রশ্ন লেখার জন্য যদি কাল্পনিক কোন ব্যক্তি চরিত্র কল্পনা করে সেই ব‍্যক্তিকে নিয়ে যদি প্রশ্ন লেখে, আর সেই সময় যদি তার মনে হয় সে তো তার নিজের সম্মন্ধে লিখতেছে তবে কি তার তালাক হয়ে যাবে?
৮/ কারো স্ত্রী যদি তাকে বলে, “আমার পেট আর স্তনের গঠন আমার মায়ের মত।”
এই কথা জানার
পর কখনো তার স্ত্রীকে বলে, “তোমার স্তনের গঠন তো তোমার মায়ের মত।” বা “তোমার পেট তো তোমার মায়ের মত।"
অর্থাৎ স্তনের ও পেটের গঠন বোঝাতে এবং ভবিষ্যতে তার শ্বাশুড়ির মত বয়সে এগুলোর গঠন কিরকম হবে সেটা বুঝানোর জন্য সে তার শ্বাশুড়ির সাথে স্ত্রীকে তুলনা করে। কিন্তু এর ফলে তার কল্পনায় শ্বাশুড়ির স্তনের দৃশ্য আসে এবং সে যৌন উত্তেজনা অনুভব করে। (যদিও সে তার শ্বাশুড়ির এসব অঙ্গ কখনো দেখিনি।)
এক্ষেত্রে তবে কি তার যিহার হবে? এই কথা সে অনেকবারই হয়ত বলেছে। কতবার বলেছে তা মনে নেই। যতবার বলেছে ততবার কি কাফফারা আদায় করতে হবে?
(এসকল ঘটনার আগে সে যিহার সম্পর্কে জানত না। যিহার সম্পর্কে জানার পরও শ্বাশুড়ির সঙ্গে স্ত্রীর তুলনা করলে যিহার হয় কিনা তা সে জানত না। তাই অবশ্যই যিহারের নিয়ত ছিল না।)
#আর হুজুরের সাথে সাথে কোন ভাবে যদি যোগাযোগ করতে হয় আরো ভালো করে বিবরণ দেয়ার জন্য উপরোক্ত বিষয়ে তাহলে দয়া করে আপনার সাথে যোগাযোগ করার জন্য আপনার ফোন নাম্বারটা দিয়েন।
জাযাকাল্লাহ খাইরান