আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
265 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (40 points)
১)মনে করুন,আমি বিবাহিত অবস্থায় ব্যাভিচারে লিপ্ত হলাম।

৪ জন প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিল।

এখন আমাকে ইসলামি আদালতে নিয়ে যাওয়া হল।

আমার কি পাথর নিক্ষেপ করে হত্যার শাস্তি হবে??

আমি তাওবা করলেও কি পাথর নিক্ষেপে হত্যার শাস্তি হবে?

২)ধরুন,আমি এমন একটা অবস্থায় পরেছি যে,আমার স্ত্রী কে তালাক না দিলে শিরক হবে।
কিন্তু যদি আমি তাকে তালাক দেই,তবে সে খুব কষ্ট পাবে।

আমি তাকে খুব ভালোবাসি।
আমি চাই না শিরক করতে, আবার তাকে কষ্ট দিতেও চাই না

এখন যদি আমি আল্লাহর রুবুবিয়্যাত,উলুহিয়্যাত,উসমা ও সিফাতের উপর ইমান আনি,

আমার স্ত্রীর ব্যাপারে আকিদা ঠিক করি যে সে কেবল মাত্র একজন সাধারণ মানুষ, আমি আল্লাহ কে খুশি করার জন্য তাকে ছাড়তে পারব, তবে কি আমি তার সাথে সংসার করতে পারব?

৩)ধরুন,আমার স্ত্রী কে আমি খুব ভালোবাসি।

এখন আমার মনে হল,আমি হয়তো আল্লাহর চেয়ে ও ওকে বেশি ভালোবাসি।

অর্থাৎ ভালোবাসার ক্ষেত্রে শিরক করি।

মানে আমি নিশ্চিত না যে আমি আল্লাহ কে বেশি ভালোবাসি নাকি আমার স্ত্রীকে।
তো আমি ভাব্লাম যে স্ত্রী কে তালাক দিয়ে দেই।তাহলে এটা নিশ্চিত হওয়া যাবে যে আমি আল্লাহর চেয়ে বেশি ভালোবাসি না ওকে।কিন্তু এটা করলে আমার স্ত্রী খুব কষ্ট পাবে বলে আশংকা করি।

এখন যদি নিজের মন কে বুঝাই যে আমি আল্লাহ কেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি,আর সেই চেষ্টা করতে থাকি তাহলে কি আমি স্ত্রীকে সাথে নিয়ে থাকতে পারব??

৪)আমি আমার জিবনে বেশ কয়েকবার এমন অবস্থায় পরেছিলাম যে পরাশুনা ছেড়ে না দিলে শিরক হবে।
কিন্তু আমি ছাড়ি নি।

এরপর আমি জান্তে পারি যে,যদি আমি তাওবা করি আর তবে আমি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবো।

এরপর থেকে আমি যতবারই এমন অবস্থায় পরি যে পরাশুনা ছেড়ে না দিলে শিরক হবে, তখন আমি পরাশুনা চালিয়ে যাই।কিছুদিন পর যখন ভুলে যাই,কি কারনে ওমন অবস্থায় পরছিলাম,তখন আবার তাওবা করে নিই,যাতে পরাশুনা চালিয়ে যেতে পারি।
ক)আমার এ কাজ কি শিরক??
খ)আমি যদি এখন তাওবা করি,তবে কি পরাশুনা চালিয়ে যেতে পারব??

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
শরীয়তের বিধান মতে ব্যভিচার প্রমানিত হলে শাস্তি হলো অবিবাহিত ব্যভিচারীকে ১০০টি বেত্রাঘাত করা, বিবাহিত ব্যভিচারীকে রজম করে হত্যা করা।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

اَلزَّانِیَۃُ وَ الزَّانِیۡ فَاجۡلِدُوۡا کُلَّ وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا مِائَۃَ جَلۡدَۃٍ ۪ وَّ لَا تَاۡخُذۡکُمۡ بِہِمَا رَاۡفَۃٌ فِیۡ دِیۡنِ اللّٰہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ۚ وَ لۡیَشۡہَدۡ عَذَابَہُمَا طَآئِفَۃٌ مِّنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۲﴾ 
ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী— তাদের প্ৰত্যেককে একশত বেত্ৰাঘাত করবে(১), আল্লাহর বিধান কার্যকরীকরণে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবান্বিত না করে(২), যদি তোমরা আল্লাহ্ এবং আখেরাতের উপর ঈমানদার হও; আর মুমিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্ৰত্যক্ষ করে।
(সুরা নুর ০২)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিম্বরে উপবিষ্ট অবস্থায় বললেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সত্যসহ প্রেরণ করেন এবং তার প্রতি কিতাব নাযিল করেন। কিতাবে যেসব বিষয় নাযিল করা হয়, তন্মধ্যে প্রস্তরাঘাতে হত্যার বিধানও ছিল, যা আমরা পাঠ করেছি, স্মরণ রেখেছি এবং হৃদয়ঙ্গম করেছি। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও প্রস্তরাঘাতে হত্যা করেছেন এবং তার পরে আমরাও করেছি। এখন আমি আশংকা করছি যে, সময়ের চাকা আবর্তিত হওয়ার পর কেউ একথা বলতে না শুরু করে যে, আমরা প্রস্তরাঘাতে হত্যার বিধান আল্লাহর কিতাবে পাই না। ফলে সে একটি দ্বীনী কর্তব্য পরিত্যাগ করার কারণে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে, যা আল্লাহ তা'আলা নাযিল করেছেন। মনে রেখো, প্রস্তরাঘাতে হত্যার বিধান আল্লাহর কিতাবে সত্য এবং বিবাহিত পুরুষ ও নারীর প্রতি প্রযোজ্য- যদি ব্যভিচারের শরীয়তসম্মত সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থিত হয় অথবা গর্ভ ও স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়৷ [বুখারীঃ ৬৮২৯, মুসলিমঃ ১৬৯১]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
হ্যাঁ এরুপ পরিস্থিতিতে আপনার পাথর নিক্ষেপ করে হত্যার শাস্তি হবে
আপনি তাওবা করলেও পাথর নিক্ষেপে হত্যার শাস্তি হবে।


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي الْمُهَلَّبِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، أَنَّ امْرَأَةً، مِنْ جُهَيْنَةَ اعْتَرَفَتْ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِالزِّنَا فَقَالَتْ إِنِّي حُبْلَى . فَدَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَلِيَّهَا فَقَالَ " أَحْسِنْ إِلَيْهَا فَإِذَا وَضَعَتْ حَمْلَهَا فَأَخْبِرْنِي " . فَفَعَلَ فَأَمَرَ بِهَا فَشُدَّتْ عَلَيْهَا ثِيَابُهَا ثُمَّ أَمَرَ بِرَجْمِهَا فَرُجِمَتْ ثُمَّ صَلَّى عَلَيْهَا فَقَالَ لَهُ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ يَا رَسُولَ اللَّهِ رَجَمْتَهَا ثُمَّ تُصَلِّي عَلَيْهَا . فَقَالَ " لَقَدْ تَابَتْ تَوْبَةً لَوْ قُسِمَتْ بَيْنَ سَبْعِينَ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ لَوَسِعَتْهُمْ وَهَلْ وَجَدْتَ شَيْئًا أَفْضَلَ مِنْ أَنْ جَادَتْ بِنَفْسِهَا لِلَّهِ "

হাসান ইবনু আলী (রহঃ) ... ইমরান ইবনু হুসায়ন রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, জুহায়না কবীলার জনৈক মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যিনার কথা স্বীকার করল এবং বলল, আমি গর্ভবতী। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ মেয়েটির অভিভাবককে ডাকলেন এবং তাকে বললেন, তার সাথে ভাল ব্যবহার করবে এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আমাকে তা অবহিত করবে। সে তাই করল, তখন তিনি মেয়েটির কাপড়-চোপড় ভাল করে শরীরে বাধতে বললেন এবং ‘রজম’-এর নির্দেশ দিলেন। তখন তাকে রজম করা হল। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালাতুল জানাযা আদায় করলেন। তখন উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! একে রজম করলেন আবার তার সালাতুল জানাযাও আদায় করলেন? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এই মেয়েটি এমন তওবা করেছে যে, মদীনার সত্তর জনের মাঝেও যদি তা বণ্টন করে দেওয়া হয় তবু তা তাদের জন্য যথেষ্ট হবে। আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিজের জান দিয়ে দিল, এর চেয়েও উত্তম কিছু তুমি পেয়েছ?
(তিরমিজি ১৪৪১)

★উল্লেখিত হাদীসে তওবার পরেও পাথর আঘাতে হত্যা করা হয়েছে।

(০২)
হ্যাঁ তার সাথে ঘর সংসার করতে পারবেন।

(০৩)
হ্যাঁ, আপনি আপনার স্ত্রীকে সাথে নিয়ে থাকতে পারবেন।
সমস্যা হবেনা।

(০৪)
ক, এতে শিরক হবেনা।

খ, হ্যাঁ আপনি পরাশুনা চালিয়ে যেতে পারবেন।
নিজ অতিত জীবনের কৃতকর্মের জন্য তওবা করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...