আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
102 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ। আমি আমার এক বন্ধুর সাথে কথা প্রসঙ্গে কয়েকবার বাজি ধরেছিলাম। বিষয়টা এমন ছিলো যে, ধরা যাক, ও বলেছিলো 'আমি(প্রশ্নকারী) বৃত্তি পাবো', আর আমি বলেছিলাম 'পাবো না'। তখন আমরা এমন সিদ্ধান্তে এসেছিলাম যে আমি বৃত্তি পেলে ওকে আমি ১০০০৳ দিব, না পেলে ও আমাকে ১০০০৳ দিবে। এমনভাবে তিনবার ও জিতে যায়। যখন এমন কাজ করেছিলাম তখন আমাদের কারোরই দ্বীনের জ্ঞান ছিলো না।

আলহামদুলিল্লাহ, এখন আমরা দু'জনই আল্লাহর দ্বীনের জ্ঞান পেয়েছি। আমার প্রশ্নটা হচ্ছে, এমনভাবে কি বাজি ধরা জায়েজ?? আর সেই পূর্বের বাজির টাকা কি আমাকে ওকে দিতে হবে?? উল্লেখ্য যে, আমি এই কথা দেয়া বা বাজি ধরায় আল্লাহর নাম নেইনি একবারও।


উত্তরটা দিলে ইন শা আল্লাহ উপকৃত হতাম, জাযাকাল্লাহ খাইরান উস্তাদ....

1 Answer

+1 vote
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/7519/?show=7519#q7519 নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

প্রশ্নে উল্লেখিত বাজিতে জুয়া বিদ্যমান। কেননা, কোন ব্যক্তি ১০০০টাকা পাবে, তা অনিশ্চিত। এ ক্ষেত্রে সম্পদের মালিকানাকে অনিশ্চিত সম্ভাবনাময় বিষয়ের সাথে যুক্ত করা হয়, যা জুয়া বলে গণ্য। 

تعليق الملك مع الخطر باطل

 

আল্লাহ বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنْصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ. إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنْتُمْ مُنْتَهُونَ

হে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ -এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক -যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও। শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব, এখনও কি তোমরা নিবৃত্ত হবে?” 

(সূরা মায়েদা ৯০-৯১)

 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا فَرْوَةُ بْنُ أَبِي الْمَغْرَاءِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُخْتَارِ، عَنْ مَعْرُوفِ بْنِ سُهَيْلٍ الْبُرْجُمِيِّ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ أَبِي الْمُغِيرَةِ قَالَ: نَزَلَ بِي سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ فَقَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ كَانَ يُقَالُ: أَيْنَ أَيْسَارُ الْجَزُورِ؟ فَيَجْتَمِعُ الْعَشَرَةُ، فَيَشْتَرُونَ الْجَزُورَ بِعَشَرَةِ فِصْلاَنٍ إِلَى الْفِصَالِ، فَيُجِيلُونَ السِّهَامَ، فَتَصِيرُ لَتِسْعَةٍ، حَتَّى تَصِيرَ إِلَى وَاحِدٍ، وَيَغْرَمُ الْآخَرُونَ فَصِيلاً فَصِيلاً، إِلَى الْفِصَالِ فَهُوَ الْمَيْسِرُ

জাফর ইবনে আবুল মুগীরা (রহঃ) বলেন, সাঈদ ইবনে জুবাইর (রহঃ) আমার এখানে মেহমান হলেন। তিনি বলেন, ইবনে আব্বাস (রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, বলা হতো, উটের জুয়াড়ীগণ কোথায়? তখন দশজন প্রতিযোগী সমবেত হতো এবং জুয়ার উটটির ক্রয়মূল্য নিৰ্দ্ধারণ করতো দশটি উটশাবক। তারা তীরের জুয়ার পাত্রে তীর স্থাপন করে সেটিকে চক্কর দেয়াতো, তাতে একজন বাদ পড়ে নয়জন অবশিষ্ট থাকতো। এভাবে প্রতি চক্করে একজন করে বাদ পড়ে শেষে মাত্র একজন অবশিষ্ট থাকতো এবং সে বিজয়ী হিসাবে তার শাবকসহ অন্যদের নয়টি শাবকও লাভ করতো। এতে নয়জনের প্রত্যেকে একটি করে শাবক লোকসান দিতো। এটাও এক প্রকার জুয়া।

(আল আদাবুল মুফরাদ ১২৭১)

,

حَدَّثَنَا الأُوَيْسِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: الْمَيْسِرُ: الْقِمَارُ.

ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, বাজী ধরা জুয়ার অন্তর্ভুক্ত। 

(আল আদাবুল মুফরাদ ১২৭২)

 

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: مَنْ حَلَفَ مِنْكُمْ فَقَالَ فِي حَلِفِهِ: بِاللاَّتِ وَالْعُزَّى، فَلْيَقُلْ: لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَمَنْ قَالَ لِصَاحِبِهِ: تَعَالَ أُقَامِرْكَ، فَلْيَتَصَدَّقْ.

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কোন ব্যক্তি যদি শপথ করে এবং তার শপথে বলে, লাত ও উহ্যার শপথ, তবে সে যেন বলে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। আর যে ব্যক্তি তার সঙ্গীকে বলে, এসো তোমার সাথে জুয়া খেলি, সে যেন দান-খয়রাত করে। (আল আদাবুল মুফরাদ ১২৭৪.বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)

,

সুতরাং এগুলো না করে রাসুলুল্লাহ সাঃ হাদীস অনুপাতে দান খয়রাত  করা উচিত।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. না, এভাবে বাজি ধরা জায়েজ নয়। যেহেতু প্রশ্নে বর্ণিত বাজি ধরাটা নাজায়েজ ছিলো। তাই তা পূরণ করাও আবশ্যক নয়, বরং পূর্ণ করা নাজায়েজ।

২. না, যেহেতু পূর্বের বাজি ধরাটা নাজায়েজ ছিলো । তাই পূর্বের বাজির টাকাটা শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে আপনাকে ওকে দিতে হবে না। (তবে এই কথাটা আপনার ঐ বন্ধুকে বুঝিয়ে বলবেন।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (5 points)
জাযাকাল্লাহ খাইরান 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...