আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
123 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ। আমাদের বাড়ির পিছনে একজনের পুকুর খনন করেছে।পুকুরের পাড়ের মাটি আর একজন প্রতিবেশি চুরি করতে আমি দেখেছিলাম।ওনাদের ছোট ছেলে ৩বার চুরি করে প্রথমবার শুধু মাটি দেখি কোথায় থেকে নিয়েছে তা না দেখাই আমি কিছু বলিনি। ২য় বার ওর সাথে ওর বড় ভাই থাকায়(আমার বালেগ হয়েছে মনে হয়েছে)তাই কিছু বলিনি। ৩য় বার শুধু ছোট ছেলেটাকে মাটি নেওয়ার সময় দেখলে আমি ডাক দি।যাদের মাটি ওদের বলে দিবো বলি।কিন্তু পরে ঝগড়া লাগবে ভেবে বলিনি।ওই ছেলেগুলো আরও অনেক জিনিস চুরি করে।আমাদের গাছের আমও চুরি করার সময় ধরা খায়। আমার আম্মু ওদের মাকে মাটি নিতে দেখে কিন্তু কোথায় থেকে নিছে দেখেনি।আম্মু আমাকে বললে আমি বলি তুমি কি নিজের চোখে দেখেছ মাটি পুকুর পাড় থেকে নিছে ওইটা।আম্মু বলে দেখি নি। তবে ওই জায়গায় মাটি নেওয়ার ফলে ফাকা হয়ে গেছে।ওদের ছেলে ৩টাই চোর।

১) আম্মুর এই কথার দ্বারা কি গীবত হয়েছে?যেহেতু আমিও দেখেছি চুরি করতে তাই ওদের পক্ষেও কিছু বলতে পারনি।চুপচাপ শুনেছিলাম এতে আমারও কি গুনাহ হবে?

২)আমার কি যাদের পুকুর ওদেরকে বলে দেওয়া উচিত?নাকি আর একবার সামনাসামনি দেখলে বলা উচিত? আমি ২বার দেখেছি।বললে ঝগড়া হতে পারে।

অন্য প্রসঙ্গে
৩)আম্মু তরকারি রান্না করেছিলো কিন্তু ঝোল একদম কম দিয়েছিলো আমি হঠাৎ দেখে বলে উঠি "ঝোল একদম দাও নাই যে" আম্মু বলে "কম দিয়ে রান্না করেছি" আমি আবার বলি "একদম এইরকম কম!" এরপর আম্মু বলে "ঝোল শুকায় গেছে একটু পানি দিয়ে আবার গরম কর।"

আমার এই কথার দ্বারা কি খাবারের গীবত করা হয়েছে?

৪)আমাদের একটা দুরের আত্নীয় একটা ছেলের সাথে পালিয়ে গেছে।আমাদের বাড়ির একজন এসে কথাটা আমাকে বলে।ঐ মেয়েটার বিয়েও হয়েছে তাও অন্য ছেলের সাথে পালিয়ে গেছে শুনে আমি অবাক হয়ে বলে ফেলি "কি বলো!!" তখন ওনি আর কয়েকটা কথা বলে আমি গীবত হচ্ছে বুঝতে পেরে বলেছি "থাক বাদ দাও"এর দ্বারা কি গীবত হয়েছে?পরে এই পালানোর কথাটা আমি আর কারো থেকে শুনিনি।আদো পালিয়েছে কিনা জানিনা।

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


গীবতের গুনাহ খুবই মারাত্মক, তাই আমাদের জানতে হবে যে  গীবত কি?

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ؟» قَالُوا: اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: «ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ» قِيلَ أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ؟ قَالَ: «إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ، فَقَدِ اغْتَبْتَهُ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম বলেছেনঃ তোমরা কি জান, গীবত কি? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ গীবত হল তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কিছু আলোচনা করা, যা সে অপছন্দ করে। প্রশ্ন করা হলঃ আমি যা বলেছি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থেকে থাকে, তাহলে আপনি কি বলেন? তিনি বললেনঃ তুমি তার সম্পর্কে যা বলেছ তা যদি তার মধ্যে থাকে, তাহলেই তুমি তার গীবত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে, তাহলে তো তুমি তার প্রতি অপবাদ আরোপ করলে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৫৮৯, ৭০, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-১১৪৫৪, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৭৫৮, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬২৯৩, মুজামে ইবনে আসাকীর, হাদীস নং-১৪১৭, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২১১৬৩}

★সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
যদি তাদের এই চুরি বারবার হয়, তাহলে তাদের সমালোচনা করা যেতে পারে,যাতে করে লোকজন এই গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকে।তখন এটা গিবত হবে না।

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার মা যাহা যাহা বলেছে,এটি গীবতের অন্তর্ভুক্ত হবে।  
তবে এক্ষেত্রে বিষয়টি আপনার কাছে না বলে যার কাছে বললে উপকার হবে,তার কাছে বলা লাগতো।
তাহলে এটি গীবত হতোনা।  

الأول: التظلم. يجوز للمظلوم أن يتظلم إلى السلطان والقاضي وغيرهما ممن له ولاية أو له قدرة على إنصافه من ظالمه، فيذكر أن فلانا ظلمني وفعل بي كذا وأخذ لي كذا ونحو ذلك.
(এক) জালিমের জুলুম থেকে বাঁচতে বিচারকের নিকট জালিমের বিরুদ্ধে নালিশ/গিবত করা বৈধ।যেমন মজলুম ব্যক্তি বিচারকের নিকট গিয়ে বলল,অমুক ব্যক্তি আমার উপর জুলুম-নির্যাতন করেছে।এবং আমার সাথে সে এমন এমন ব্যবহার করেছে।আমার অমুক অমুক জিনিষ সে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।

যে সমস্ত কারণে গিবত করা বৈধ হয়।
বিস্তারিত জানুনঃ 
,
(০২)
আপনি দেখে থাকলে পুকুর মালিককে বলে দিতে পারবেন।
এতে কোনো সমস্যা নেই।

(০৩)
এতে খাবারের দোষ ধরা হয়নি।

(০৪)
এটি বলা,শোনা গীবত হয়েছে।  
তবে এটি যদি সকলের কাছে প্রকাশ্য জানা শোনা ঘটনা হয়ে থাকে,তাহলে তারা ও জাতী এহেন অপরাধ থেকে বিরত থাকে,এই নিয়তে এই ভাবে সমালোচনা করা যাবে। 

হযরত মু'আবিয়া ইবনে হাইদাহ রাযি থেকে বর্ণিত,

معاوية بن حيدة رضي الله عنه ، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ( أَتَرعُونَ عَنْ ذِكْرِ الْفَاجِرِ ! اذْكُرُوهُ بِمَا فِيهِ كَي يَعْرِفَهُ النَّاسُ وَيَحْذَرَهُ النَّاسُ ).

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,তোমরা কি ফাসিকের সমালোচনা থেকে বিরত থাকবে?বরং তোমরা ফাসিকের কৃত অপরাধ নিয়ে সমালোচনা করো,যাতেকরে লোকজন সেই অপরাধ থেকে বিরত থাকে।আস-(সুনানুল কুবরা-বায়হাক্বী-১০/২১০) 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 431 views
...