ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
শরীয়তের বিধান হলো ওয়াতনে আসলী (স্থায়ী নিবাস) তে এক দিনের জন্য গেলেও পুরো নামাজ পড়তে হবে।
ব্যক্তি নিজের স্থায়ী নিবাসে গেলে কখনো মুসাফির হয়না। স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।
শরীয়তের বিধান হলো কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলেও কসর পড়তে হবে। বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।
৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয়,সেখানে গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করে,তাহলেই কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়বে।
চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত কর আদায় করবে।
এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।
আয়েশা রাযি. বলেন,
فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَزِيدَ فِي صَلَاةِ الْحَضَرِ
মুকিম ও মুসাফির অবস্থায় নামায দু’দু রাক’আত ফরজ করা হয়েছিল। পরে সফরের নামায ঠিক রাখা হল কিন্তু মুকিমের নামাযে বৃদ্ধি করা হল। (বুখারী ১০৪০ মুসলিম ৬৮৫)
অপর হাদিসে এসেছে,
عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)
.
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত মহিলা ঢাকায় যেখানে থাকেন, যদি সেই বাড়িকেই ওয়াতলে আসলী তথা মূল বাড়ি হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। অর্থাৎ সেখানেই তিনি মূলত থাকেন পরিবার নিয়ে।
তার নিজ শশুর বাসায় তথা স্বামীর বাবার বাসায় বা বাবার বাসার সেই এলাকায় স্থায়ী ভাবে থাকার যদি কোনো নিয়ত তাদের না থাকে ,স্থায়ী ভাবেই যদি পিতার বাসা,সেই এলাকা ত্যাগ করে থাকে, আর তার শশুরের বাসা ঢাকার এই বাসা থেকে ৭৮ কিলোমিটার বা তার চেয়ে বেশি দুরত্বে হয়, তাহলে তিনি পিতার শশুর বাসায় গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে মুসাফির হবেন।
সেখানে কসরের নামাজ পড়বেন।।
,
যদি তিনি যেখানে আছেন,সেটাকে ওয়াতনে আসলী (স্থায়ী নিবাস) হিসেবে ঠিক না করে,তাহলে তিনি নিজ শশুর বাসায় মুসাফির বলে গন্য হবেননা।
,
সেক্ষেত্রে সফরের দুরত্ব যতই হোকনা কেনো,পূর্ণ নামাজই আদায় করতে হবে।
বিস্তারিত জানুনঃ
(০২)
আপনি কোথায় থেকে সেই চাচার বাসায় যাবেন?
যদি ৭৮ কিলোমিটার দুরত্ব থেকে সফর করে নিজেদের বাড়ির সীমানায় না গিয়ে অন্য এলাকা দিয়ে সরাসরি সেই চাচার বাসায় যান,তাহলে সেখানে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে কসর করতে হবে।
আর যদি নিজ এলাকার সীমানা অতিক্রম করে তারপর সেই চাচার বাসায় যান,তাহলে আপনি মুসাফির থাকবেননা।
কেননা ৭৮ কিলোমিটার দুরত্ব সফর করে নিজ এলাকার সীমানায় প্রবেশের সাথে সাথেই ব্যাক্তি আর মুসাফির থাকেনা।
(০৩)
আপনার মা তো শশুরবাড়িতে আর কোনো দিন স্থায়ী ভাবে থাকবেননা,উনি তো এখন স্থায়ী ভাবে ঢাকায় থাকছেন,তাই তিনি ঝালকাঠিতে গেলে সেখানে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে তাকে কসর করতে হবে।
(০৪)
হ্যাঁ সেখানে সে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়তে গেলে কসর করবে।
দাদার বাড়ি তো কারো স্থায়ীনিবাস নয়।
(০৫)
মনে মনে সেখানে কয়দিন থাকবে,এটি নির্দিষ্ট করবে।
(০৬)
জানামতে লঞ্চের সরবরাহকৃত উক্ত পানি পাক।
নদির সেই পানি পাক।
সুতরাং ঐ পানি দিয়ে অযু করে কিবলা নির্ণয় করে নামাজ আদায় করতে হবে।
সতর্কতা অবলম্বন করে ওয়াশরুম ব্যবহার করতে হবে।
(০৭)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ
(০৮)
হ্যাঁ হায়েজ শেষ মনে করবেন।
(০৯)
পুনরায় ফরজ গোসল করতে হবেনা।
(১০)
রোযা হবে।
এটিই সঠিক।
পরে পবিত্র হলেও চলবে।
রোযার সাথে পবিত্রতার সম্পর্ক নেই।
(১১)
অপবিত্র অবস্থায় নামাজ পড়া যাবেনা।
ওয়াশরুমে গিয়ে কাপড় সতর্কতামূলক তুলে নিয়ে ওয়াশরুম ব্যবহার করতে হবে।
আগে পুরো ওয়াশরুম ধুয়ে নিবেন।
নাপাকি থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
প্রয়োজনে ওয়াশরুমে গিয়ে বোরকা খুলে ওয়াশরুম ব্যবহার করবেন।
,
কাপড় নাপাক হলে কাপড় পাক করে বা চেঞ্জ করে নামাজ পড়তে হবে।