بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
জমজমের পানি অবিমিশ্রিতভাবে পান করা উত্তম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বা সাহাবায়ে কেরাম কখনো এর সাথে অন্য পানি মিশিয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া যায় না-যদিও তৎকালীন মক্কা থেকে দূরে অবস্থানকারীদের জন্য জমজমের পানি সংগ্রহ করা সহজ ছিল না।
তবে আলেমগণ বলেন, যদি তার সাথে অন্য পানি মিশানো হয় তাহলে তার উপকারিতা ও ফজিলত ততটুকু কমে যাবে যতটুকু অতিরিক্ত পানি মেশানো হয়েছে।
শাইখ জিবরীন রহ. বলেন:
الأفضل أن يُشرب ماء زمزم وحده ، فإن خُلط بغيره بقي له حُكم الفضل وجواز التداوي به ، وإن كان ذلك أنقص مما إذا كان خالصًا وحده ” انتهى من “موقع الشيخ ابن جبرين
“উত্তম হল, এককভাবে কেবল জমজম পানি পান করা। যদি তা অন্য পানির সাথে মেশানো হয় তাহলে যতটুকু জমজম অবশিষ্ট থাকবে ততটুকুর হুকুম অবশিষ্ট থাকবে এবং তা দ্বারা চিকিৎসা করা যাবে যদিও তাতে নির্ভেজাল পানির তুলনা উপকারিতা কম হবে।”
★জমজমের পানি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পান করেছেন। তা’ই আমরাও জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে উত্তম মনে করি।বাকি এভাবে জমজমের পানি পান করা জরুরী নয়।
আর স্বাভাবিক অবস্থায় অন্যান্য পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে মাকরূহে তানজিহী মনে করি। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পানি পান করাতে নিষেধ করেছেন।
বাকি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এবং তার কতিপয় সাহাবী কর্তৃক দাঁড়িয়ে পানি করা সম্পর্কিত হাদীস পাওয়া যায়। যা প্রমাণ করে দাঁড়িয়ে পানি পান করা হারাম বা মাকরূহে তাহরীমি নয়। বরং সর্বোচ্চ তানজিহী তথা অনুত্তম বলা যায়।[বিস্তারিত দেখুন-রদ্দুল মুহতার-১/২৫৪-২৫৬]
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَرِبَ مِنْ زَمْزَمَ وَهُوَ قَائِمٌ
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২০২৭]
أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَشْرَبَنَّ أَحَدٌ مِنْكُمْ قَائِمًا، فَمَنْ نَسِيَ فَلْيَسْتَقِئْ»
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ যেন দাড়িয়ে পান না করে, তবে যদি ভুলে যায়, তাহলে যেন বমি করে দেয়। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২০২৬]
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَشْرَبُ قَائِمًا وَقَاعِدًا
আমর বিন শুয়াইব তিনি তার পিতা, তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দাঁড়িয়ে ও বসে পান করতে দেখেছি। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৮৮৩]
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي عَمْرَةَ، عَنْ جَدَّةٍ لَهُ يُقَالُ لَهَا كَبْشَةُ الْأَنْصَارِيَّةُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «دَخَلَ عَلَيْهَا، وَعِنْدَهَا قِرْبَةٌ مُعَلَّقَةٌ، فَشَرِبَ مِنْهَا، وَهُوَ قَائِمٌ،
কাবশাতুল আনছারিয়্যা রাঃ থেকে বর্ণিত।একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিকট প্রবেশ করলেন। তার নিকট একটি ঝুলন্ত পানির পাত্র ছিল। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা থেকে দাঁড়িয়েই পান করলেন। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৪২৩]
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: كُنَّا نَأْكُلُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ نَمْشِي، وَنَشْرَبُ وَنَحْنُ قِيَامٌ.
হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে হেটে, দাঁড়িয়ে খাবার গ্রহণ ও পান করেছি। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৮৮০]
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনি ভাই / বোন!
জমজমের পানিতে সাধারণ পানি না মেশানোই ভালো। বরং পানি কম থাকলে অল্প অল্প করে পান করবেন। এতেই উপকার হবে ইনশাআল্লাহ। তবে মেশালে কোন গুনাহ হবে না।