আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
455 views
in পবিত্রতা (Purity) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১।গোসল করার সময় অথবা পানি দিয়ে ইস্তিঞ্জা করার পর যদি কারো সন্দেহ হয় প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে কিছু বেরিয়েছে,তখন তো পানি দিয়ে ভেজা থাকার কারণে পরীক্ষা করে আলাদা ভাবে বোঝার উপায় থাকে না আসলেই কিছু বেরিয়েছে নাকি।  এরকম পরিস্থিতিতে করণীয় কী?পবিত্রতা বজায় থাকবে কি?
২।গোসল চলছে ,  এ অবস্থায় অযু ভেঙে যায় এমন কিছু ঘটলে আবার প্রথম থেকে গোসল শুরু করতে হবে কি?

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

আলহামদুলিল্লাহ!

শরীয়তে ইসলামি সহজতার উপর নির্ভরশীল। শরীয়ত চায় না মানুষ কষ্টে নিপতিত হোক।আল্লাহ তা'আলা বলেন,

يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ 

আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না(সূরা বাক্বারা-১৮৫)

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,

(إِنَّ الدِّينَ يُسْرٌ)

নিশ্চয় দ্বীনে ইসলাম সহজ।(সহীহ বুখারী-৩৯)

আপনার প্রশ্ন থেকে আমরা যা বুঝেছি,আপনার এ বিষয়টা হয়তো মনস্তাত্ত্বিক। এটা শয়তানের পক্ষ্য থেকে ওয়াসওয়াসা।যাতে করে শয়তান আপনাকে কষ্টে নিপতিত করে।এবং শেষ পর্যন্ত ইবাদতকে আপনার নিকট অসহনীয় ও কষ্টকর করে তুলতে পারে।সুতরাং এমন পর্যায়ের কাউকে আবার ওজু করার নির্দেশ দেয়া হবে না।এবং খুজতে আদেশ করা হবে না যে,কিছু বের হল কি না? বরং তার উপর দায়িত্ব হল সে প্রথমে ইস্তেঞ্জা করবে,তারপর লজ্জাস্থানে পানি ছিটিয়ে দিবে।যাতেকরে তার সামনে ওয়াসওয়াসার দরজা সমূলে ধংশ হয়ে যায়।অতঃপর সে অজু করবে এবং নামায পড়বে।সে শয়তানের প্ররোচনার দিকে ভ্রুক্ষেপ করবে না যে,কিছু বের হয়েছে কি না।


কিন্তু যদি কারো ঈয়াকিন বা পূর্ণ বিশ্বাস হয় যে,কিছু বের হয়েছে,তাহলে এমতাবস্থায় সে আবার অজু করতে হবে।সেজন্য আপনি রোমাল বা টিস্যু ইত্যাদি লজ্জাস্থানে রেখে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।


ঈমান ভঙ্গের ওয়াসওয়াসা সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1379


(২)

ফরয গোসল চলছে , এমতাবস্থায় যদি অযু ভেঙে যায় এমন কিছু ঘটে, তাহলে আবার প্রথম থেকে গোসল করতে হবে না।বরং গোসলের অবশিষ্ট অঙ্গ ধৌত করে নিলেই সে পবিত্র হয়ে যাবে।তবে নামায তেলাওয়াতের জন্য আবার অজু করতে হবে।


ثم المراد بالخروج من السبلين مجرد الظهور

فى رد المحتار: فلو نزل البول إلى قصبة الذكر لا ينقض بعدم ظهوره، يخالف القلفة، فإنه بنزوله إليها ينقض الوضوء (رد المحتار-١/٢٦٢؛ بدائع الصنائع-١/١٢١)

নাজাসত বের হওয়ার দ্বারা লজ্জাস্থানের বাহিরে নাজাসত প্রকাশ হওয়া উদ্দেশ্য। যদি প্রস্রাব লিঙ্গের ভিতরে থাকে,তবে ছিদ্রের বাহিরে না আসে, তাহলে নাজাসত প্রকাশ না হওয়ার কারণে অজু ভঙ্গ হবে না।তবে লিঙ্গের ভিতরে থেকে যদি ঐ চামড়ায় প্রস্রাব পৌছে যায়, যেই চামড়াকে খতনার সময়ে কর্তন করে নেয়া হয়, তাহলে অজু ভেঙ্গে যাবে।


ولو نزل البول الى قصبة الذكر لا ينقض، لأنه من الباطن، ولو خرج إلى القلفة او إلى اسكنى المرأة ينقض، لأنه من الظاهر (الفتاوى التاتارخانية-١/٢٤١، رقم- ١٨٥)

যদি প্রস্রাব লিঙ্গের ভিতরে থাকে,তবে ছিদ্রের বাহিরে না আসে, তাহলে নাজাসত প্রকাশ না হওয়ার কারণে অজু ভঙ্গ হবে না।তবে লিঙ্গের ভিতরে থেকে যদি ঐ চামড়ায় প্রস্রাব পৌছে যায়, যেই চামড়াকে খতনার সময়ে কর্তন করে নেয়া হয়, তাহলে অজু ভেঙ্গে যাবে।কেননা এটাকো লজ্জাস্থানের বাহির গণনা করা হয়।


البول المنتضح قدر رؤس الإبر معفو للضرورة وإن امتلأ الثوب كذا فى التبيين الخ، هذا إذا كان الانتضاح على الثياب والأبدان، أما إذا انتضح فى الماء فإنه ينجسه ولا يعفى عنه (الفتاوى الهندية-1/46) 

সূইয়ের আগা পরিমাণ প্রস্রাব জরুরতের দরুণ মাফ যদি এদ্বারা কাপড় ভড়ে যাকনা কেন? এই বিধান তখন যখন প্রস্রাব কাপড়ে বা শরীরে লাগবে।তবে যদি ঐ পরিমাণ প্রস্রাব পানিতে পড়ে,তাহলে পানি নাপাক হয়ে যাবে।এটাকে ক্ষমাযোগ্য মনে করা হবে না।


ولو عرض له الشيطان كثيرا لا يلتفت إلى ذلك كما فى الصلاة، وينضح فرجه بماء حتى لو راى بللا حمله على بلة الماء، هكذا فى الظهيرية (الفتاوى الهندية-1/491)

যদি কারো নিকট বেশী বেশী শয়তান উপস্থিত হয়, তাহলে সে ঐ দিকে লক্ষ করবে না,যেমন নামাযে।লজ্জাস্থানে পানি ছিটিয়ে দেওয়া হবে।যদি পরবর্তীতে কিছু দেখা যায়, তাহলে সেটাকে পানি মনে করে সন্দেহকে দূর করা সহজ হবে।


في الدر المختار ج١ ص:١١٨

(وَتَثْلِيثُ الْغَسْلِ) الْمُسْتَوْعِبُ؛ وَلَا عِبْرَةَ لِلْغَرَفَاتِ، وَلَوْ اكْتَفَى بِمَرَّةٍ إنْ اعْتَادَهُ أَثِمَ، وَإِلَّا لَا، وَلَوْ زَادَ لِطُمَأْنِينَةِ الْقَلْبِ 

قوله: لطمانينة القلب لأنه أمر بترك ما يريبه إلى مالا يربيه، وينبغى أن يقيد هذا بغير الموسوس، أما هو فيلزمه قطع مادة الوسواس عنه وعدم التفاته إلى التشكيك لأنه فعل الشيطان، وقد أمرنا بمعادته ومخالفته، (رد المحتار-1/240)

অজুতে তিনবার অঙ্গ ধৌত করা মুস্তাহাব।তবে ওয়াসওয়াসা রোগীর বেলায় তিনবার ধৌত করা জরুরী।যাতেকরে ওয়াসওয়াসা দূর হয়ে যায়।


হাসান বসরি রাহ কে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, যে ব্যক্তি অজু ও ইস্তেঞ্জার পর কাপড় বা শরীরে পানির চিহ্ন দেখতে পায়?

হাসান বসরি রাহ উত্তরে বলেন,সে ব্যক্তি এ সম্পর্কে মাশগুল হবে না।

وقد سئل الحسن البصري رحمه الله عما يجده الرجل من البلة بعد الوضوء والاستنجاء فقال : (الْهُ عنه ) أي : لا تشتغل به ولا تهتم به . 

ইবনে উসাইমিন রাহ কে জিজ্ঞাসা করা হল,

যখন আমি অজু শেষ করে নামাযের দিকে মনোনিবেশ করলাম,তখন লজ্জাস্থান দিয়ে প্রস্রাব নির্গত হওয়াকে অনুভব করলাম। এই মুহূর্তে আমি কি করতে পারি?

তিনি প্রতি উত্তরে বললেন,

" الذي ينبغي أن يُتلهَّى عن هذا ويُعرض عنه ، كما أمر بذلك أئمة المسلمين ، ولا يلتفت إليه ، ولا يذهب ينظر في ذكره ، هل خرج أو لا ؟ وهو بإذن الله إذا استعاذ بالله من الشيطان الرجيم وتركه يزول عنه ، أما إذا تيقن يقيناً مثل الشمس فلا بد أن يغسل ما أصابه البول ، وأن يعيد الوضوء ؛ 

এই প্রস্রাব নির্গত হওয়ার বিষয়কে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করতে হবে।এ বিষয়ে অমনোযোগী হতে হবে।যেমনটা ফুকাহায়ে কেরামগণ বলে থাকেন।সেই বিষয়ে প্রতি কোনো দৃষ্টি দেয়া যাবে না।প্রস্রাব বাস্তবে বের হল কি না? সেটা জানার জন্য লজ্জাস্থানের দিকে দৃষ্টি দেয়া যাবে না। আল্লাহর কাছে পানাহ চাওয়া দ্বারা এবং উক্ত বিষয়ে অমনোযোগী হওয়ার দ্বারা এটা অবশ্যই দূর হবে।তবে সূর্য উদিত হওয়ার মত নিজের কাছে পূর্ণ ইয়াকিন বিশ্বাস জন্মে গেলে তখন লজ্জস্থানের প্রস্রাব লেগেছে এমন জায়গাকে ধৌত করে অজু করে নিতে হবে। (লিকাউল বাবিল মাফতুহ-১৫/১৮৪)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
অযু করতে হবে বুঝলাম। কিন্তু যদি প্রশ্রাবের ফোটা বের হয় থাকে তাহলে সেটা পরিষ্কার করার ব্যাপারে বিধান কি?
by (589,680 points)
প্রস্রাবের ফোটাকে ধৌত করে নিবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 210 views
+1 vote
1 answer 154 views
...