আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
148 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (35 points)
আল্লাহ তাআলার কোন গুণটা আবার সাময়িক? কোনটা সত্তাগত? যেমনঃ হাশরের ময়দানে তিনি কাহহার নাম ধারণ করবেন, তাই বলে কি এখন তার নাম কাহহার না?

....................................................................

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

আল্লাহর সিফাত বা গুণাবলীর মালিক এককভাবে আল্লাহ নিজেই। অন্য কাউকে তাঁর কোনো সিফাতের মালিক মনে করা শিরক। শিরক ফিল আসমা ওয়াসসিফাত তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাতের পরিপন্থি,

আল্লাহ নিজেকে যে সমস্ত নামে নামকরণ করেছেন এবং তাঁর কিতাবে নিজেকে যে সমস্ত গুণে গুণাম্বিত করেছেন সে সমস্ত নাম ও গুণাবলীতে আল্লাহকে একক ও অদ্বিতীয় হিসেবে মেনে নেওয়া। আল্লাহ নিজের জন্য যা সাব্যস্ত করেছেন, তাতে কোনো পরিবর্তন, পরিবর্ধন, তার ধরণ বর্ণনা এবং কোনো রূপ উদাহরণ পেশ করা ব্যতীত আল্লাহর জন্য তা সাব্যস্ত করার মাধ্যমেই এ তাওহীদ বাস্তবায়ন হতে পারে। সুতরাং আল্লাহ নিজেকে যে নামে পরিচয় দিয়েছেন বা নিজেকে যে গুণাবলীতে গুণান্বিত করেছেন, তাঁর ওপর ঈমান আনয়ন করা আবশ্যক। এ সমস্ত নাম ও গুণাবলীর আসল অর্থ আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করে তার ওপর ঈমান আনতে হবে- কোনো প্রকার ধরণ বর্ণনা করা বা দৃষ্টান্ত পেশ করা যাবে না। এ প্রকারের তাওহীদে আহলে কিবলা তথা মুসলিমদের বিরাট একটি অংশ গোমরাহীতে পতিত হয়েছে। এক শ্রেণির লোক আল্লাহর সিফাতকে অস্বীকারের ক্ষেত্রে এতই বাড়াবাড়ি করেছে যে, এর কারণে তারা ইসলাম থেকে বের হয়ে গেছে। আর এক শ্রেণির লোক মধ্যম পন্থা অবলম্বন করেছে। আর এক শ্রেণির লোক আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের কাছাকাছি; কিন্তু সালাফে সালেহীনের মানহাজ হলো, আল্লাহ নিজের জন্য যে নাম নির্ধারণ করেছেন এবং নিজেকে যে সবগুণে গুণান্বিত করেছেন, সে সব নাম ও গুণাবলীরর ওপর ঈমান আনয়ন করতে হবে।

হাদীস শরীফে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

«إِنَّ لِلَّهِ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ اسْمًا»

‘‘আল্লাহ তা‘আলার নিরানববইটি নাম রয়েছে।’’ (বুখারী, - ৬৯৫৭)( মুসলিম, হাদীস নং- ২৬৭৭)

কুরআনুল কারীমের সূরা ‘আল-বাকারাহ’-এর ২৫৫ নং আয়াতে, সূরা ‘আল-হাশর’-এর শেষ তিন আয়াতে ও সূরা ‘আল-হাদীদ’-এর দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সে সব নামসমূহের কতিপয় নামের বর্ণনা দিয়েছেন। জামে‘ তিরমিজীতে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে এ সব নাম সম্বলিত একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তাতে রয়েছে, ‘‘যে ব্যক্তি এ সব নামসমূহ স্মরণ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’’(সুনানে তিরমীযী)

* আল্লাহ তা’আলার সত্ত্বাগত নাম একটি। তা হল, “আল্লাহ্”। এই নামে কারো নাম রাখা না জায়েয ও হারাম। এছাড়া আল্লাহ তা’আলার গুণবাচক আরো অনেক নাম রয়েছে। এক হাদীসে বর্ণিত আছে,

حدثنا إبراهيم بن يعقوب قال: حدثني صفوان بن صالح، قال: حدثنا الوليد بن مسلم، قال: حدثنا شعيب بن أبي حمزة، عن أبي الزناد، عن الأعرج، عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: إن لله تعالى تسعة وتسعين اسما، مئة غير واحدة، من أحصاها دخل الجنة.

অর্থাৎ, হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা’আলার গুণবাচক নিরানব্বইটি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এই নামগুলো গণনা করে এবং উচ্চারণ করে, আল্লাহ তা’আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিবেন। (সুনানে তিরমিযী: ৫/৪১১, হাদীস নং-৩৫০৭)

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!

 আল্লাহ তা‘আলার এ সব নামের মধ্যকার কেবলমাত্র একটি নাম হচ্ছে তাঁর জাতি বা সত্তাগত নাম। সে নামটি হচেছ-‘আল্লাহ’। আর অবশিষ্ট নামসমূহ হচ্ছে তাঁর সিফাতী বা গুণগত নাম। গুণগত এ নামগুলো প্রকৃতপক্ষে তাঁর রুবূবিয়্যাতের সাথে সম্পর্কিত।

সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে আল্লাহ তায়ালার গুনগত বা সিফাতী নামসমূতের মধ্য হতে একটি নাম হলো, “আল-কাহহার অর্থাৎ যিনি ঊর্ধ্বজগত ও নিম্নজগতের সব কিছুর উপর মহাপ্রতাপশালী ও দমনকারী। তিনি সব মাখলুকের উপর প্রতাপশালী, সকলেই তাঁর মহা সম্মান, মহা শক্তি ও পূর্ণ ক্ষমতার কাছে নতশির।

তিনি সৃষ্টিকুলকে দমন করে রাখেন, সকলে তাঁর কাছে বিনয়ী-বিনম্র অথবা তাঁর কুদরত ও ইচ্ছার কাছে বিনীত। ঊর্ধ্ব ও নিম্নজগতের সকল জীব ও সব উপাদান তাঁরই কাছে নতজানু। সুতরাং কোন কিছুর তাঁর এ সম্রাজ্যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত বসবাস করতে পারে না। তিনি যা চান তা হয়ে যায়, আর তিনি যা চান না তা কখনো-ই হবে না। সসম্ত সৃষ্টি তাঁর কাছে অভাবী, মুখাপেক্ষী, তারা সকলেই অক্ষম, নিজেরা নিজেদের উপকার-ক্ষতি, কল্যাণ-অকল্যাণ কিছুই করতে পারে না। অত:পর তাঁর প্রতাবশালীতা তাঁর জীবন, ইজ্জত ও কুদরতকে অত্যাবশ্যকীয় করে; কেননা কারো পরিপূর্ণ জীবন, পূর্ণ শক্তি ও ক্ষমতা না থাকলে সে সত্ত্বা সৃষ্টকুলের উপর প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয় না।

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿قُلِ ٱللَّهُ خَٰلِقُ كُلِّ شَيۡءٖ وَهُوَ ٱلۡوَٰحِدُ ٱلۡقَهَّٰرُ١٦﴾ [الرعد: ١٦]

“বলুন, ‘আল্লাহই সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা এবং তিনি  এক, একচ্ছত্র ক্ষমতাধর’। [সূরা আর-রাদ, আয়াত” ১৬] ( আত-তাফসীর, ৫/৬২৪ ও ৬/৪৪৮)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (35 points)
প্রশ্ন করলাম কি, আর উত্তর দিলেন কি!!!
আপনারা আকিদা বিষয়ে ভালো জ্ঞান রাখেন না। এই বিষয়ে ভালো আলিম নিয়োগ করা উচিত।

এই লিখাটা পড়ুন।

https://islamqa.info/bn/353989

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...