জবাব,
ওয়াকফ করার পর সেই ওয়াকফকৃত জায়গার মালিক কে হবে?
এ সম্পর্কে ফুকাহায়ে কেরামগণের কিছুটা মতবিরোধ মূলক আলোচনা থাকলেও পরবর্তী সময়ের ফকিহগণ নিম্নোক্ত সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছেন-
وَعِنْدَهُمَا حَبْسُ الْعَيْنِ عَلَى حُكْمِ مِلْكِ اللَّهِ تَعَالَى عَلَى وَجْهٍ تَعُودُ مَنْفَعَتُهُ إلَى الْعِبَادِ فَيَلْزَمُ وَلَا يُبَاعُ وَلَا يُوهَبُ وَلَا يُورَثُ كَذَا فِي الْهِدَايَةِ وَفِي الْعُيُونِ وَالْيَتِيمَةِ إنَّ الْفَتْوَى عَلَى قَوْلِهِمَا كَذَا فِي شَرْحِ أَبِي الْمَكَارِمِ لِلنُّقَايَةِ
ইমাম আবু ইউসুফ রাহ ও ইমাম মুহাম্মদ রাহ এর মতে ওয়াকফকৃত জিনিষ মালিকের মালিকানা থেকে বের হয়ে আল্লাহর মালিকানায় এমন পদ্ধতিতে চলে যাবে যে, ওয়াকফকৃত জিনিষ থেকে মাখলুকাত ফায়দা অর্জন করবে।
উক্ত ওয়াকফকৃত জিনিষকে বিক্রি করা যাবে না,কাউকে হাদিয়্যা ও দেয়া যাবে না,এবং তার ওয়ারিছও কেউ হবে না।
উক্ত মতামতের উপরই পরবর্তী হানাফি ফকিহগণ ফাতাওয়া দিয়েছেন।
(ফাতাওয়া হিন্দিয়া-২/৩৫)
ওয়াকফ করার পর উক্ত ওয়াকফ সম্পর্কে ওয়াকফকারী যদি শরীয়ত সমর্থিত কোনো শর্ত করে তাহলে তা গ্রহণযোগ্য।
এ সম্পর্কে ইবনে আবেদীন শামী রাহ বলেন-
ﻓَﺈِﻥَّ ﺷَﺮَاﺋِﻂَ اﻟْﻮَاﻗِﻒِ ﻣُﻌْﺘَﺒَﺮَﺓٌ ﺇﺫَا ﻟَﻢْ ﺗُﺨَﺎﻟِﻒْ اﻟﺸَّﺮْﻉَ ﻭَﻫُﻮَ ﻣَﺎﻟِﻚٌ، ﻓَﻠَﻪُ ﺃَﻥْ ﻳَﺠْﻌَﻞَ ﻣَﺎﻟَﻪُ ﺣَﻴْﺚُ ﺷَﺎءَ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦْ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔ
শরীয়ত বিরোধী না হলে ওয়াকফ কারীর শর্তসমূহ গ্রহণযোগ্য,কেননা সে তো উক্ত মালেক মালিক ছিলো,তাই গোনাহের সম্ভাবনা না থাকলে সে তার মালকে যেখানে ইচ্ছা যেভাবে ইচ্ছা সেখানেই রাখতে পারবে।
(রদ্দুল মুহতার-শামেলা৪/৩৪৩)
আপনার বর্ণনা অনুযায়ী,
যদি সে এটা বলতে চায় যে,সে মসজিদের মুতাওয়াল্লী এবং সে ওয়াকফ করার সময় সেটাই নিয়তে রেখেছিলো,যে সে আজীবন মুতাওয়াল্লি হবে,তাহলে শরীয়তের আলোকে সেই মুতাওয়াল্লী হবে যতক্ষণ না সে গোনাহের কোনো তাজে লিপ্ত হচ্ছে।
হ্যা শরীয়ত বিরোধী কোনে কাজে লিপ্ত হলে তখন মুসলমানদের দায়িত্ব শান্তির সাথে তাকে নিবৃত্ত রাখার চেষ্টা করা,অতপর নিবৃত না হলে বরখাস্ত করা।যেভাবেই হেক না কেন।
আর যদি সে এরকম মসজিদ বানিয়ে দিয়ে আত্ম অহংকারে লিপ্ত হয়,তাহলে এত টাকা খরছ করে মসজিদ বানিয়ে ও সে একটা কানা খড়ির ও সওয়াব পাবে না।উল্টো গোনাহের বোঝা ভাড়ী হওয়ার আশংকা তার জন্য সর্বদাই থাকবে।
তার এমন আত্ম অহংকার মূলক কথাবার্তা বলার দরূণ সেটা মসজিদের হুকুম থেকে বের হবে না।বরং মসজিদ মসজিদই থাকবে।সে অন্যায় কিছু বললে সেটা মানা যাবে না।
(কিতাবুন-নাওয়াযিল-৯২)