ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالَ أَنْبَأَنَا عَلِيٌّ، - يَعْنِي ابْنَ مُسْهَرٍ - عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ مُعَاذَةَ الْعَدَوِيَّةِ، أَنَّ امْرَأَةً، سَأَلَتْ عَائِشَةَ أَتَقْضِي الْحَائِضُ الصَّلاَةَ إِذَا طَهُرَتْ قَالَتْ أَحَرُورِيَّةٌ أَنْتِ كُنَّا نَحِيضُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ نَطْهُرُ فَيَأْمُرُنَا بِقَضَاءِ الصَّوْمِ وَلاَ يَأْمُرُنَا بِقَضَاءِ الصَّلاَةِ .
আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ... মুআযা আদাবীয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক মহিলা আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করল যে, ঋতুবতী মহিলা যখন ঋতু থেকে পবিত্র হবে তখন কি সে সালাত কাযা করবে? তিনি বললেন, তুমি কি হারুরী গোত্রের মহিলা? আমরা তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে ঋতুবতী হতাম এবং যখন পবিত্র হতাম তখন আমাদেরকে সাওম কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হল কিন্তু সালাত কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হত না।
(নাসায়ী শরীফ ২৩২০।)
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তো উক্ত স্রাব বের হয়ে আসেনি,বরং লজ্জাস্থানে টিস্যু প্রেস করে তারপর সেটি দেখেছেন।
এখানে যেহেতু সেটা আপনা আপনি বের হয়ে আসেনি,তাই আপনার হায়েজ সেই সময় শুরু হয়নি।
সুতরাং আপনার আছরের নামাজ পড়া উচিত ছিলো।
পরবর্তীতে এটির কাজা আদায় করে নিবেন।
(০২)
শরীয়তের বিধান হলোঃ
রমজান মাসে মহিলাদের পিরিয়ডের রোজা না রাখলে অথবা রোজা রাখার পর পিরিয়ড শুরু হলে তার জন্য পানাহার করা বৈধ। তবে অন্য লোকদের সামনে পানাহার করা উচিত নয়। দিনের বেলায় যদি ঋতু বন্ধ হয়ে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে, তাহলে দিনের বাকি অংশে রোজাদারের মতো পানাহার ও যৌনাচার বর্জন করা ওয়াজিব। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪২০)
یجب علی الصحیح وقیل یستحب "الإمساک بقیة الیوم علی من فسد صومہ" ولو بعذر ثم زال "وعلی حائض ونفساء طہرتا بعد طلوع الفجر".... "وعلی حائض ونفساء طہرتا" وأما فی حالة تحقق الحیض والنفاس فیحرم الإمساک لأن الصوم منہما حرام والتشبہ بالحرام حرام (حاشیة الطحطاوی علی مراقی الفلاح شرح نور الإیضاح ص: 678،ط: اشرفی، دیوبند)
সারমর্মঃ
রমজান মাসে ওযর বশত (যেমন হায়েজ) রোযা ভেঙ্গে গেলে বাকি দিন পানাহার থেকে বিরত থাকা মুস্তাহাব।
আর যদি আগে থেকেই হায়েজ নেফাস চলে,তাহলে পানাহার থেকে বিরত থাকা হারাম।
কেননা তাদের জন্য রোযা হারাম,তাই রোযাদারদের সাথে সাদৃশ্যও হারাম।
البحرالرائق :
"ومن لم یکن علی تلك الصفة لم یجب الإمساك کما في حالة الحیض والنفاس، ثم قیل: الحائض تأکل سرًّا لاجهرًا. وقیل: تأکل سرًّا وجهرًا". (2/289 ط: سعید)
সারমর্মঃ
হায়েজাহ মহিলারা গোপনে খানা খাবে,তাদের উপর পানাহার থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব নয়।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
রমদান মাসে হায়েজ আসলে বাকি দিন পানাহার থেকে বিরত থাকা মুস্তাহাব।
তবে হায়েজের অন্যান্য দিন বা আগে থেকেই হায়েজ চললে পানাহার থেকে বিরত থাকা জায়েজ নেই।
অনেকেই এটিকে হারাম বলে আখ্যায়িত করেছেন।
তাই এমতাবস্থায় রোযাদার থেকে অপ্রকাশ্যে পানাহার চালিয়ে যেতে হবে।
রোযা অবস্থায় হায়েজ চলে আসলে অপ্রকাশ্যে পানাহার করলে গুনাহ হবেনা।
বিস্তারিত জানুনঃ
(০৩)
হ্যাঁ উক্ত রোযা শুদ্ধ হবে।
(০৪)
এমতাবস্থায় আপনি রোযাদারদের ন্যায় করবেন।
অর্থাৎ গড়গড়িয়ে কুলি করবেননা,নাকের নরম জায়গায় পানি দিবেননা।
হালকা পানি দিবেন।
উক্ত রোযা হয়ে যাবে।
(০৫)
এই নিয়ম সুন্নাত।
আবশ্যক নয়।
আবশ্যক শুধুমাত্র তিনটি ফরজ।
(০৬)
হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি আর সর্বকনিষ্ঠ আঙুল নাকের যত দূর পর্যন্ত যাবে যথাসম্ভব ততটা দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
হালকা একটু আঙ্গুল দিলেও হবে।
তবে রোযা অবস্থায় নরম স্থান পর্যন্ত আঙ্গুল দেয়া যাবেনা।
(০৭)
আঙ্গুল ভিজিয়ে নিয়ে সামান্য কিছু অংশ নাকে প্রবেশ করাবেন।
(০৮)
স্বাভাবিক এভাবে পানি মলদ্বারে প্রবেশ করতে পারেনা।
তবে ভেজা আঙ্গুল ভিতরে গেলে সমস্যা হবে।
বিস্তারিত জানুনঃ
(০৯)
স্বাভাবিক এভাবে মলদ্বারে বা মহিলাদের লজ্জাস্থানে সাবান লাগলে ভিতরে সাবান যায়না।
তবে ভেজা আঙ্গুল ভিতরে গেলে সমস্যা হবে।
(১০)
এতে রোযা ভেঙ্গে যাবেনা।
(১১)
উভয়টিই করা যাবে।
তবে এগুলো আবশ্যক কিছু না।
(১২)
ওজু থাকা জরুরি নয়।
এটি আদব।
আর দুই হাত তুলেই মোনাজাত করাও জরুরি নয়।
এটিও আদব।