আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
381 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (2 points)
অনেকে বলেন যোগ্যতা থাকলে ঘুষ না দিলে যদি চাকরি টা না হয় তবে সেখানে ঘুষ দেয়া বৈধ অর্থাৎ চাকরির বেতন টা হালাল হবে। এখানে যোগ্যতা বলতে কি বুঝানো হয়েছে। একটা পরীক্ষার কয়েকটা স্টেপ থাকে যেমন লিখিত, মৌখিক। এখন সাধারণত লিখিতর আগেই মানুষ ঘুষ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে। শেষের স্টেপ হলো মৌখিক, লিখিততে টিকলে অনেকে মৌখিক এর আগে ঘুষ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে। এখন মৌখিক পরীক্ষার আগেই ঘুষ এর মাধ্যমে চাকরিটা নিশ্চিত করলে সেটা কতটুকু হালাল? আবার মৌখিক দেওয়ার পর রেজাল্ট হওয়ার আগে দৌড়াদৌড়ি না করলে টিকার সম্ভাবনা কম অনেকেই মনে করেন।
যোগ্যতার বিচারে কোন স্টেপটাকে যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করবেন? ধরুন একজন গ্র্যাজুয়েশন করা মানুষ সে যেকোনো সরকারি চাকরি করতে পারে আর প্রাইমারি স্কুলের মত জায়গাতে শিক্ষকতা করা তো বাম হাতের খেলা। তাহলে যারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতেছে তারা সবাই যোগ্য হয়ে গেল কিন্তু পরীক্ষকদের বিচারে যে অধিক নাম্বার পাবে সেই বেশি যোগ্য। এবার যোগ্যতার বিচার কিভাবে করবেন আর মাসআলা টা এখন কিভাবে হবে?

বি:দ্র: দয়া করে বলবেন না যে পরীক্ষা কর্তারা পরীক্ষায় টিকার পর যদি ঘুষ এর দাবি করে তবে সেটা মাজলুম হিসেবে বৈধ। কারণ ওই দিন অনেক আগেই চলে গেছে এখন আর কোন পরীক্ষার্থীকে ব্ল্যাকমেইল করতে হয় না। এমনিতেই আকাঙ্ক্ষার চেয়েও বেশি মানুষ টাকার বস্তা নিয়ে তাদের পেছনে দৌড়ায়।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


https://ifatwa.info/31470/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
ঘুষ কবিরা গুনাহ সমূহের একটি। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,

 ﻋﻦ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟﺮَّﺍﺷِﻲ ﻭَﺍﻟْﻤُﺮْﺗَﺸِﻲ .

অনুবাদঃ ঘুষ প্রদাণকারী ও গ্রহণকারী উভয়ের উপর রাসূলুল্লাহ সাঃ লা'নত দিয়েছেন। মুসনাদে আহমদ-৬৭৯১ সুনানে আবু-দাউদ-৩৫৮০ 

তবে একটি মাসয়ালা হলোঃ-  ঘুষ দেওয়া ব্যতীত যদি নিজ প্রাপ্য হক আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে এমতাবস্থায় ঘুষ দেয়া জায়েয।অন্যথায় ঘুষ দেয়া হারাম।তবে ঘুষ গ্রহণ করা সর্বাবস্থায়-ই নাজায়েয ও হারাম। প্রয়োজনে ঘুষ দেয়া জায়েয।

এ বিষয়ের উপর উলামায়ে কেরাম নিম্নোক্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করে থাকেন। হযরত উমর ইবনে খাত্তাব রাযি থেকে বর্ণিত,

 ﻋﻦ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﺇِﻥَّ ﺃَﺣَﺪَﻫُﻢْ ﻟَﻴَﺴْﺄَﻟُﻨِﻲ ﺍﻟْﻤَﺴْﺄَﻟَﺔَ ﻓَﺄُﻋْﻄِﻴﻬَﺎ ﺇِﻳَّﺎﻩُ ﻓَﻴَﺨْﺮُﺝُ ﺑِﻬَﺎ ﻣُﺘَﺄَﺑِّﻄُﻬَﺎ ، ﻭَﻣَﺎ ﻫِﻲَ ﻟَﻬُﻢْ ﺇِﻻ ﻧَﺎﺭٌ ، ﻗَﺎﻝَ ﻋُﻤَﺮُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ، ﻓَﻠِﻢَ ﺗُﻌْﻄِﻴﻬِﻢْ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﺇِﻧَّﻬُﻢْ ﻳَﺄْﺑَﻮْﻥَ ﺇِﻻ ﺃَﻥْ ﻳَﺴْﺄَﻟُﻮﻧِﻲ ، ﻭَﻳَﺄْﺑَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻲ ﺍﻟْﺒُﺨْﻞَ ) 

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ আমার কাছে যাকাতের মাল থেকে কিছু দেওয়ার জন্য সুওয়াল করে।অতঃপর আমি তাকে কিছু দিয়ে দেই।তথা তার সুওয়াল আমার কাছ থেকে কিছু নিয়ে নেয়।তবে এই গ্রহণকৃত জিনিষ তাদের জন্য আগুনের মত।তখন উমর রাযি বললেন, হে রাসূলুল্লাহ! তাহলে আপনি কেন দেন?তারা আমারকে লেপ্টে ধরেছে।অথচ আল্লাহ আমাকে কৃপণতা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছন।মসনাদে আহমদ-১০৭৩৯ 

বিস্তারিত জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
কোনো যোগ্য ব্যাক্তি যদি  নিজ প্রাপ্য হক আদায়ের লক্ষ্যে ঘুষ দেয়,অবস্থা যদি এমন হয় যে ঘুষ না দিলে তার এই চাকুরী হবেনা,তাহলে  এমন অবস্থায় ঘুষ দেওয়া যাবে।
তার বেতন হালাল হবে।
তবে যারা এই ঘুষ গ্রহন করবে,তাদের ক্ষেত্রে তাহা গ্রহন হারাম হবে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
এখন সাধারণত লিখিত পরীক্ষার আগেই মানুষ ঘুষ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে।  
এটি বর্তমান সামাজিক পচন ধরার কারনেই এমনটি হয়েছে।
আগে ভাগেই দৌড়াদৌড়ি না করলে সে চাকুরীতে কোনো ভাবেই চান্স পাবেনা।
সিস্টেমই এখন এমন হয়ে দাড়িয়েছে। 

শেষের স্টেপ হলো মৌখিক, লিখিত তে টিকলে অনেকে মৌখিক এর আগে ঘুষ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে। এখন মৌখিক পরীক্ষার আগেই ঘুষ এর মাধ্যমে চাকরিটা নিশ্চিত করলে সেটা জায়েজ হবেনা।

তবে সে যেহেতু তার চাকুরীতে শ্রমের বিনিময়েই বেতন পাবে,তাই তার চাকুরীর বেতন হালাল হবে।

প্রশ্নে উল্লেখিত উদাহরণঃ
একজন গ্র্যাজুয়েশন করা মানুষ সে যেকোনো সরকারি চাকরি করতে পারে।
আর প্রাইমারি স্কুলের মত জায়গাতে শিক্ষকতা করা তো বাম হাতের খেলা। 

★সুতরাং উপরোক্ত ছুরতে তাদের সকলেই যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
তাদের যে কাহারো তার যোগ্যতা অনুপাতে উক্ত চাকুরীতে ঘুষ প্রদান জায়েজ হবে।      

পরীক্ষকদের বিচারে যে অধিক নাম্বার পাবে সেই বেশি যোগ্য,এটি তো বাস্তব কথা।
তবে এই অধিক নাম্বার পাওয়া তো বর্তমান অনেকটা ঘুষের উপরেই নির্ভরশীল।

ঘুষ দেয়া ছাড়া অধিক নাম্বার পাওয়া যাবেনা,পাওয়া গেলেও তাহা প্রকাশিত হবেনা। 

★সুতরাং যারা চাকুরীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতেছে তারা সবাই যোগ্য হলে তাদের সকলের জন্য সেই চাকুরী নেয়ার জন্য  ঘুষ প্রদান জায়েজ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...