জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
ঘুষ কবিরা গুনাহ সমূহের একটি। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟﺮَّﺍﺷِﻲ ﻭَﺍﻟْﻤُﺮْﺗَﺸِﻲ .
অনুবাদঃ ঘুষ প্রদাণকারী ও গ্রহণকারী উভয়ের উপর রাসূলুল্লাহ সাঃ লা'নত দিয়েছেন। মুসনাদে আহমদ-৬৭৯১ সুনানে আবু-দাউদ-৩৫৮০
তবে একটি মাসয়ালা হলোঃ- ঘুষ দেওয়া ব্যতীত যদি নিজ প্রাপ্য হক আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে এমতাবস্থায় ঘুষ দেয়া জায়েয।অন্যথায় ঘুষ দেয়া হারাম।তবে ঘুষ গ্রহণ করা সর্বাবস্থায়-ই নাজায়েয ও হারাম। প্রয়োজনে ঘুষ দেয়া জায়েয।
এ বিষয়ের উপর উলামায়ে কেরাম নিম্নোক্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করে থাকেন। হযরত উমর ইবনে খাত্তাব রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﺇِﻥَّ ﺃَﺣَﺪَﻫُﻢْ ﻟَﻴَﺴْﺄَﻟُﻨِﻲ ﺍﻟْﻤَﺴْﺄَﻟَﺔَ ﻓَﺄُﻋْﻄِﻴﻬَﺎ ﺇِﻳَّﺎﻩُ ﻓَﻴَﺨْﺮُﺝُ ﺑِﻬَﺎ ﻣُﺘَﺄَﺑِّﻄُﻬَﺎ ، ﻭَﻣَﺎ ﻫِﻲَ ﻟَﻬُﻢْ ﺇِﻻ ﻧَﺎﺭٌ ، ﻗَﺎﻝَ ﻋُﻤَﺮُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ، ﻓَﻠِﻢَ ﺗُﻌْﻄِﻴﻬِﻢْ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﺇِﻧَّﻬُﻢْ ﻳَﺄْﺑَﻮْﻥَ ﺇِﻻ ﺃَﻥْ ﻳَﺴْﺄَﻟُﻮﻧِﻲ ، ﻭَﻳَﺄْﺑَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻲ ﺍﻟْﺒُﺨْﻞَ )
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ আমার কাছে যাকাতের মাল থেকে কিছু দেওয়ার জন্য সুওয়াল করে।অতঃপর আমি তাকে কিছু দিয়ে দেই।তথা তার সুওয়াল আমার কাছ থেকে কিছু নিয়ে নেয়।তবে এই গ্রহণকৃত জিনিষ তাদের জন্য আগুনের মত।তখন উমর রাযি বললেন, হে রাসূলুল্লাহ! তাহলে আপনি কেন দেন?তারা আমারকে লেপ্টে ধরেছে।অথচ আল্লাহ আমাকে কৃপণতা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছন।মসনাদে আহমদ-১০৭৩৯
বিস্তারিত জানুনঃ
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কোনো যোগ্য ব্যাক্তি যদি নিজ প্রাপ্য হক আদায়ের লক্ষ্যে ঘুষ দেয়,অবস্থা যদি এমন হয় যে ঘুষ না দিলে তার এই চাকুরী হবেনা,তাহলে এমন অবস্থায় ঘুষ দেওয়া যাবে।
তার বেতন হালাল হবে।
তবে যারা এই ঘুষ গ্রহন করবে,তাদের ক্ষেত্রে তাহা গ্রহন হারাম হবে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এখন সাধারণত লিখিত পরীক্ষার আগেই মানুষ ঘুষ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে।
এটি বর্তমান সামাজিক পচন ধরার কারনেই এমনটি হয়েছে।
আগে ভাগেই দৌড়াদৌড়ি না করলে সে চাকুরীতে কোনো ভাবেই চান্স পাবেনা।
সিস্টেমই এখন এমন হয়ে দাড়িয়েছে।
শেষের স্টেপ হলো মৌখিক, লিখিত তে টিকলে অনেকে মৌখিক এর আগে ঘুষ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে। এখন মৌখিক পরীক্ষার আগেই ঘুষ এর মাধ্যমে চাকরিটা নিশ্চিত করলে সেটা জায়েজ হবেনা।
তবে সে যেহেতু তার চাকুরীতে শ্রমের বিনিময়েই বেতন পাবে,তাই তার চাকুরীর বেতন হালাল হবে।
প্রশ্নে উল্লেখিত উদাহরণঃ
একজন গ্র্যাজুয়েশন করা মানুষ সে যেকোনো সরকারি চাকরি করতে পারে।
আর প্রাইমারি স্কুলের মত জায়গাতে শিক্ষকতা করা তো বাম হাতের খেলা।
★সুতরাং উপরোক্ত ছুরতে তাদের সকলেই যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
তাদের যে কাহারো তার যোগ্যতা অনুপাতে উক্ত চাকুরীতে ঘুষ প্রদান জায়েজ হবে।
পরীক্ষকদের বিচারে যে অধিক নাম্বার পাবে সেই বেশি যোগ্য,এটি তো বাস্তব কথা।
তবে এই অধিক নাম্বার পাওয়া তো বর্তমান অনেকটা ঘুষের উপরেই নির্ভরশীল।
ঘুষ দেয়া ছাড়া অধিক নাম্বার পাওয়া যাবেনা,পাওয়া গেলেও তাহা প্রকাশিত হবেনা।
★সুতরাং যারা চাকুরীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতেছে তারা সবাই যোগ্য হলে তাদের সকলের জন্য সেই চাকুরী নেয়ার জন্য ঘুষ প্রদান জায়েজ হবে।