উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১) শরীয়তের বিধান হলো হালাল এবং হারাম মাল দিয়ে তৈরীকৃত বাসা বাড়িতে যতটুকু হারাম মাল ছিলো, ততটুকু পরিমাণ টাকা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দেয়া অবশ্যক।
,
যদি ততটুকু পরিমাণ সম্পদ সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করা না হয় তাহলে উক্ত প্রপার্টিজের পুরোপুরি মালিক আপনার পিতা হবেন না।
সে হিসেবে আপনার পিতা মারা যাওয়ার পর আপনিও মিরাসসূত্রে তার পুরোপুরি মালিক হবেন না।
যদি হারাম টাকা পরিমাণ টাকা দান করে দেয়া হয়, তাহলেই কেবল সে টাকা দিয়ে যে সম্পত্তি করা হয়েছে তার মালিক আপনার পিতা সাব্যস্ত হবে, সে হিসেবে আপনিও তার মৃত্যুর পর পুরোপুরি মালিক হবেন।
আল্লাহ তায়ালা বলেন
يا ايها الذين امنوا لا تاكلوا الربا اضعافا مضاعفه واتقوا الله لعلكم تفلحون
‘হে মুমিনগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেও না। আল্লাহকে ভয় করো। তাহলে তোমরা সফল হতে পারবে। ’ -সূরা আল ইমরান: ১৩০
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)
فى معارف السنن- من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37)
কেহ যদি হারাম সম্পদের মালিক হয়,তাহলে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে গরীব মিসকিনকে ছদকাহ করে দিতে হবে।
★সুদ, দেয়া ও নেয়া সবই গোনাহের কাজ। তাই সুদী অর্থে নির্মিত বা প্রস্তুতকৃত বস্তু থেকে দূরে থাকাই উচিত।
বাকি যেহেতু উক্ত বাড়ী নির্মাণে উক্ত ব্যক্তি নিজেও অর্থ প্রদান করেছেন। সেই অর্থ যেহেতু হালাল। তাই উক্ত অংশের টাকায় নির্মিত বাড়ির অংশও হালাল হবে।
তাই তার অংশের বাসায় থাকা বা ভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্জন করা সবই তার জন্য বৈধ হবে।
وَ اَحَلَّ اللهُ الْبَیْعَ وَ حَرَّمَ الرِّبٰوا ؕ.
আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম। -সূরা বাকারা (২) : ২৭৫
অপর এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَ ذَرُوْا مَا بَقِیَ مِنَ الرِّبٰۤوا اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا فَاْذَنُوْا بِحَرْبٍ مِّنَ اللهِ وَ رَسُوْلِهٖ.
হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যা কিছু অবশিষ্ট আছে তা পরিত্যাগ করো। যদি তোমরা মুমিন হও। যদি তা না কর তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের সংবাদ জেনে নাও। -সূরা বাকারা (২) : ২৭৮-২৭৯
হাদীস শরীফে এসেছে, জাবের রা. বলেন,
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آكِلَ الرِّبَا، وَمُؤْكِلَهُ، وَكَاتِبَهُ، وَشَاهِدَيْهِ، وَقَالَ: هُمْ سَوَاءٌ.
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুদ ভক্ষণকারী, সুদ প্রদানকারী, সুদের লেখক এবং সাক্ষীগণকে অভিসম্পাত করেছেন এবং বলেছেন, (গুনাহের ক্ষেত্রে) তারা সবাই বরাবর।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৯৮
,
(০২)
ফাতিরের১৮ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন:
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى وَإِنْ تَدْعُ مُثْقَلَةٌ إِلَى حِمْلِهَا لَا يُحْمَلْ مِنْهُ شَيْءٌ وَلَوْ كَانَ ذَا قُرْبَى إِنَّمَا تُنْذِرُ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَيْبِ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَمَنْ تَزَكَّى فَإِنَّمَا يَتَزَكَّى لِنَفْسِهِ وَإِلَى اللَّهِ الْمَصِيرُ (18)
“কেউ অপরের (গোনাহর) বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহ্বান করে কেউ তা বহন করবে না- যদি সে নিকটাত্নীয় (এমনকি পিতা বা সন্তানও) হয়। (হে রাসূল) আপনি কেবল তাদেরকে সতর্ক করেন, যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখে ভয় করে এবং নামায কায়েম করে। যে কেউ (গোনাহ ও মন্দ আচরণ থেকে) নিজেকে পুতপবিত্র করে- এর ফল সে নিজেই ভোগ করে। আল্লাহর নিকটই সকলের প্রত্যাবর্তন।” (৩৫:১৮)
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যাকে বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়েছে,সে যদি টিভি দেখে, পর্দা না করে,তাহলে এর দায়ভার বাড়িওয়ালার উপর বর্তাবেনা ।
তবে এহেন ব্যাক্তিদেরকে বাসা ভাড়া না দেওয়াই উচিত,এতে দ্বীনি পরিবেশ নষ্ট হয়।