উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
স্বামী যদি কথা তা’ই বলে থাকেন, যা উপরে উদ্ধৃত হয়েছে,এবং স্ত্রীও যদি নিজের নফসের উপর তালাক না দেয়, তাহলে এর দ্বারা কোন তালাক পতিত হয়নি।
তালাক কোন খেলনার বস্তু নয় ইচ্ছে হলেই মুখে বলা যায়। আর বৈবাহিক সম্পর্ক ও কোন পুতুল খেলা নয়, ইচ্ছে হল গড়ে তোলা হল, আবার ভেঙ্গে ফেলা হল। এভাবে বাচ্চাদের মত সামান্য ঝগড়া হতেই তালাক শব্দ বলা শিশুসূলভ অপরিণামদর্শী মানসিকতা ছাড়া কিছু নয়। তাই এমন বোকামী করা থেকে ভবিষ্যতে মুক্ত থাকতে হবে।
إذَا قَالَ لَا أُرِيدُك أَوْ لَا أُحِبُّك أَوْ لَا أَشْتَهِيك أَوْ لَا رَغْبَةَ لِي فِيك فَإِنَّهُ لَا يَقَعُ وَإِنْ نَوَى فِي قَوْلِ أَبِي حَنِيفَةَ – رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى – كَذَا فِي الْبَحْرِ الرَّائِقِ.(الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل الخامس فى الكنايات-1/376، البحر الرائق، كتاب الطلاق، باب الكنايات-3/528، بزازية على هامش الهندية-4/198)
যদি কেহ তার স্ত্রীকে বলে যে আমি তোমাকে চাইনা,আমি তোমাকে মুহাব্বত করিনা,তোমার প্রতি আমার কোনো খাহেশ নাই,তাহলে তালাক পতিত হবেনা।
قَالَ لِامْرَأَتِهِ اذْهَبِي إلَى بَيْتِ أُمِّك فَقَالَتْ طَلَاق دَهٍ تابروم فَقَالَ تَوّ بَرْو مِنْ طَلَاقِ دُمَادِم فَرُسْتُمُ قَالَ لَا تَطْلُقُ لِأَنَّهُ وَعْدٌ كَذَا فِي الْخُلَاصَةِ. (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السابع فى الطلاق بالفاظ الفارسية-1/384، خلاصة الفتاوى، كتاب الطلاق، جنس آخر فى الفاظ الطلاق-2/80، بزازية على الهندية-4/176
যার সারমর্ম হলো ওয়াদা বাচক শব্দ বলার দ্বারা তালাক পতিত হয়না ।
,
ইসলাম স্বামী স্ত্রীর বিচ্ছেদের কখনোই কামনা করে না। তা’ই যথা সম্ভব আপনারা আপনাদের বিবাহ সম্পর্কটি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করুন।
যদি কোনভাবেই সংসারটি টিকানো সম্ভব না হয়, তাহলে স্বামী এক তালাক নিতে পারে। দুই বা তিন তালাক কিছুতেই দিবে না। কারণ, তিন তালাক যে কারণে দেয়া হয়, এক তালাকের মাধ্যমেও তা’ই অর্জিত হয়ে যায়। অর্থাৎ স্বামী স্ত্রীর বিচ্ছেদ। বাকি এক তালাকের দ্বারা একটি ফায়দা এই হয় যে, পরবর্তীতে নিজেদের ভুল বুঝতে পারলে সেই ভুল শুধরে নেবার সুযোগ থাকে। কিন্তু তিন তালাক দিলে আর সেই সুযোগ থাকে না। তাই কিছুতেই তিন তালাক পতিত করা উচিত হবে না।
বাকি এই সংসারের জন্য দুআ থাকবে আল্লাহ তাআলা আপনাদের বিচ্ছেদ ঘটাক। সংসারে শান্তি ফিরিয়ে দিন।মোহাব্বত ভালবাসায় ও ইবাদতে কেটে যাক আপনাদের জীবন।সমস্যাগুলোর সুষ্ঠু সমাধান করে দিন মহান রাব্বুল আলামীন। আমীন।
الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ ۖ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ ۗ وَلَا يَحِلُّ لَكُمْ أَن تَأْخُذُوا مِمَّا آتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا إِلَّا أَن يَخَافَا أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا افْتَدَتْ بِهِ ۗ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَعْتَدُوهَا ۚ وَمَن يَتَعَدَّ حُدُودَ اللَّهِ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ [٢:٢٢٩]
তালাকে-‘রাজঈ’ হ’ল দুবার পর্যন্ত তারপর হয় নিয়মানুযায়ী রাখবে, না হয় সহৃদয়তার সঙ্গে বর্জন করবে। আর নিজের দেয়া সম্পদ থেকে কিছু ফিরিয়ে নেয়া তোমাদের জন্য জায়েয নয় তাদের কাছ থেকে। কিন্তু যে ক্ষেত্রে স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই এ ব্যাপারে ভয় করে যে, তারা আল্লাহর নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে না, অতঃপর যদি তোমাদের ভয় হয় যে, তারা উভয়েই আল্লাহর নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে না, তাহলে সেক্ষেত্রে স্ত্রী যদি বিনিময় দিয়ে অব্যাহতি নিয়ে নেয়, তবে উভয়ের মধ্যে কারোরই কোন পাপ নেই। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা। কাজেই একে অতিক্রম করো না। বস্তুতঃ যারা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করবে, তারাই জালেম। [সূরা বাকারা-২২৯]