আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,368 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্যের এক পর্যায়ে স্বামী যদি স্ত্রীকে বলে যদি ভালো না লাগলে চলে যাও, তাহলে কি তালাক হবে? এক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীকে "চলে যাও" বা "ছেড়ে দিলাম"  এমন কথা বলেনি।  বলেছে, সংসার করতে না চাইলে চলে যেতে পারে।

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم

স্বামী যদি কথা তা’ই বলে থাকেন, যা উপরে উদ্ধৃত হয়েছে,এবং স্ত্রীও যদি নিজের নফসের উপর তালাক না দেয়,  তাহলে এর দ্বারা কোন তালাক পতিত হয়নি।

তালাক কোন খেলনার বস্তু নয় ইচ্ছে হলেই মুখে বলা যায়। আর বৈবাহিক সম্পর্ক ও কোন পুতুল খেলা নয়, ইচ্ছে হল গড়ে তোলা হল, আবার ভেঙ্গে ফেলা হল। এভাবে বাচ্চাদের মত সামান্য ঝগড়া হতেই তালাক শব্দ বলা শিশুসূলভ অপরিণামদর্শী মানসিকতা ছাড়া কিছু নয়। তাই এমন বোকামী করা থেকে ভবিষ্যতে মুক্ত থাকতে হবে।

إذَا قَالَ لَا أُرِيدُك أَوْ لَا أُحِبُّك أَوْ لَا أَشْتَهِيك أَوْ لَا رَغْبَةَ لِي فِيك فَإِنَّهُ لَا يَقَعُ وَإِنْ نَوَى فِي قَوْلِ أَبِي حَنِيفَةَ – رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى – كَذَا فِي الْبَحْرِ الرَّائِقِ.(الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل الخامس فى الكنايات-1/376، البحر الرائق، كتاب الطلاق، باب الكنايات-3/528، بزازية على هامش الهندية-4/198)

যদি কেহ তার স্ত্রীকে বলে যে আমি তোমাকে চাইনা,আমি তোমাকে মুহাব্বত করিনা,তোমার প্রতি আমার কোনো খাহেশ নাই,তাহলে তালাক পতিত হবেনা।  

قَالَ لِامْرَأَتِهِ اذْهَبِي إلَى بَيْتِ أُمِّك فَقَالَتْ طَلَاق دَهٍ تابروم فَقَالَ تَوّ بَرْو مِنْ طَلَاقِ دُمَادِم فَرُسْتُمُ قَالَ لَا تَطْلُقُ لِأَنَّهُ وَعْدٌ كَذَا فِي الْخُلَاصَةِ. (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السابع فى الطلاق بالفاظ الفارسية-1/384، خلاصة الفتاوى، كتاب الطلاق، جنس آخر فى الفاظ الطلاق-2/80، بزازية على الهندية-4/176

যার সারমর্ম হলো ওয়াদা বাচক শব্দ বলার দ্বারা তালাক পতিত হয়না । 
,
ইসলাম স্বামী স্ত্রীর বিচ্ছেদের কখনোই কামনা করে না। তা’ই যথা সম্ভব আপনারা আপনাদের বিবাহ সম্পর্কটি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করুন।

যদি কোনভাবেই সংসারটি টিকানো সম্ভব না হয়, তাহলে স্বামী এক তালাক নিতে পারে। দুই বা তিন তালাক কিছুতেই দিবে না। কারণ, তিন তালাক যে কারণে দেয়া হয়, এক তালাকের মাধ্যমেও তা’ই অর্জিত হয়ে যায়। অর্থাৎ স্বামী স্ত্রীর বিচ্ছেদ। বাকি এক তালাকের দ্বারা একটি ফায়দা এই হয় যে, পরবর্তীতে নিজেদের ভুল বুঝতে পারলে সেই ভুল শুধরে নেবার সুযোগ থাকে। কিন্তু তিন তালাক দিলে আর সেই সুযোগ থাকে না। তাই কিছুতেই তিন তালাক পতিত করা উচিত হবে না।

বাকি এই সংসারের জন্য দুআ থাকবে আল্লাহ তাআলা আপনাদের বিচ্ছেদ ঘটাক। সংসারে শান্তি ফিরিয়ে দিন।মোহাব্বত ভালবাসায় ও ইবাদতে কেটে যাক আপনাদের জীবন।সমস্যাগুলোর সুষ্ঠু সমাধান করে দিন মহান রাব্বুল আলামীন। আমীন।

الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ ۖ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ ۗ وَلَا يَحِلُّ لَكُمْ أَن تَأْخُذُوا مِمَّا آتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا إِلَّا أَن يَخَافَا أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا افْتَدَتْ بِهِ ۗ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَعْتَدُوهَا ۚ وَمَن يَتَعَدَّ حُدُودَ اللَّهِ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ [٢:٢٢٩] 

তালাকে-‘রাজঈ’ হ’ল দুবার পর্যন্ত তারপর হয় নিয়মানুযায়ী রাখবে, না হয় সহৃদয়তার সঙ্গে বর্জন করবে। আর নিজের দেয়া সম্পদ থেকে কিছু ফিরিয়ে নেয়া তোমাদের জন্য জায়েয নয় তাদের কাছ থেকে। কিন্তু যে ক্ষেত্রে স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই এ ব্যাপারে ভয় করে যে, তারা আল্লাহর নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে না, অতঃপর যদি তোমাদের ভয় হয় যে, তারা উভয়েই আল্লাহর নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে না, তাহলে সেক্ষেত্রে স্ত্রী যদি বিনিময় দিয়ে অব্যাহতি নিয়ে নেয়, তবে উভয়ের মধ্যে কারোরই কোন পাপ নেই। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা। কাজেই একে অতিক্রম করো না। বস্তুতঃ যারা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করবে, তারাই জালেম। [সূরা বাকারা-২২৯] 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...