আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
400 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
আমার বাবা মারা গেছেন প্রায় ১ বছর হয়ে আসছে। আমি আর আমার পরিবারের সদস্য বহুবার বিভিন্ন স্বপ্ন দেখেছি আব্বুকে নিয়ে। কিন্তু স্বপ্নগুলো অদ্ভুত, আমরা কখনো এমন দেখি নাই যে সে কান্নাকাটি বা আহাজারি করছে আবার খুব হাসিখুশিও দেখি না মানে একেবারে তাকে বাস্তব জীবনে যেমন দেখতাম ঠিক অমনই স্বাভাবিক দেখি।  বেচে থাকতে যেমন স্বাভাবিক ভাবে কথা বার্তা হাটা চলা করত ঠিক অমনই দেখি নরমাল ভাবে কিন্তু প্রতিবারেই তাকে খালি গায়ে দেখি এবং পরিবারের যতজনই দেখেছি ততজনই তাকে নরমাল ভাবে হয় লুংগি পড়া খালি গা যেভাবে বাসায় থাকত আবার প্যান্ট পড়া কিন্তু খালি গা এ দেখি। অনেক স্বপ্ন দেখলেও প্রতি স্বপ্নে এই কমন জিনিসটা মিল পাই যে তিনি খালি গা এ থাকেন। তার নামে দান সদকা দোয়া করি খুব।কিন্তু প্রতিবার তাকে এই খালি গা এ অবস্তায় কেন দেখি কি সে চায় আমরা কেউই বুঝতে পারছি না। আর বেশিরভাগ স্বপ্নের আরো একটা কমন দিক ছিল যে বলতাম" আব্বু তুমি না মারা গেছ আবার আসলা কিভাবে" জানি না কি ব্যাখ্যা কিন্তু এই দিকগুলো প্রতি স্বপ্নে মিল পাই। কি সে চাচ্ছে তা মোটেও বুঝতে পারছি না। উস্তাদ দয়া করে ব্যাখ্যা দিয়েন সে অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিব ইং শা আল্লাহ। তার জন্য দান সদকা আর দোয়া ছাড়াও কি অতিরিক্ত কিছু করতে হবে বা বিশেষ কোন দোয়া কি করতে হবে? আর বেশিরভাগ স্বপ্নই আমি তাহাজ্জুদ এর সময় অর্থাৎ ২টা ৩টা বা ফজরের সময় দিয়ে দেখি। বাম কাত হয়েও দেখি আবার ডান কাত হয়েও দেখি

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার।

১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে। তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।

 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়।

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়।

হাদীস শরীফে এসেছে 

خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.

আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭]

স্বপ্নে মৃত ব্যক্তিকে দেখতে পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক্ষণে যদি কেউ স্বপ্নে এরূপ মৃত ব্যক্তিকে ভাল অবস্থায় দেখে বা মৃত ব্যক্তিকে ভাল কোন সংবাদ বা উপদেশ দিতে শুনে, তবে আল্লাহর শুকরিয়া করবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যখন তোমরা কেউ ভালো স্বপ্ন দেখবে, তখন আলহামদুলিল্লাহ পড়বে এবং সে নিজের প্রিয় লোকদের কাছে তা বলতে পারে (বুখারী হা/৬৯৮৫)।

আর যদি মৃত ব্যক্তিকে খারাপ অবস্থায় দেখা যায় বা সে খারাপ সংবাদ প্রদান করে তাহ’লে বুঝতে হবে যে, এই স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। এক্ষেত্রে রাসূল (ছাঃ)-এর নির্দেশনা হ’ল, বাম দিকে তিনবার থুক মেরে ‘আ‘ঊযুবিল্লা-হি মিনাশ শায়ত্বা-নির রজীম’ বলবে এবং পার্শ্ব পরিবর্তন করবে (মুসলিম: ২২৬২, মিশকাত: ৪৬১৩)

 অন্য বর্ণনায় এসেছে দাঁড়িয়ে (দু’রাক‘আত) ছালাত আদায় করবে এবং কাউকে বলবে না। কারণ এই স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করে না (মুসলিম:২২৬১-৬৩; বুখারী:৭০৪৪; মিশকাত: ৪৬১২)।

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!

আলহদু্ল্লিল্লাহ আপনি যেভাব আপনার বাবার জন্য দোয়া করছেন ও সদকা করছেন তা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবেন। পাশাপাশি আপনি আপনার পরিবারের সকলকে বিশেষ করে যারা আপনার বাবা ওয়ারিশ তাদেরকে বেশি বেশি নেক আমল করার তাকিদ করবেন যেন, সকলের নেক আমলের অংশ মরহুমও পেয়ে যান। কারণ, সন্তানাদি কোন গুনাহ করলে তার কিছু অংশ বাবা মায়ের আমল নামাতেও চলে যায় আবার তারা কোন নেক আমল করলে তার কিছু অংশও তাদের আমল নামাতে যোগ হয়। মোটকথা প্রশ্নেল্লিখিত বিষয়টি মরহুমের জন্য বেশী বেশী নেক আমল ও দুআর প্রতিই ঈঙ্গিত বহন করে, যা পরিবারের সকলের জন্যই করা উচিত।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...