আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
245 views
in সালাত(Prayer) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম
সলাতের ওয়াক্ত হয়ে যাবার পরে মেয়েরা রিক্সা কিংবা অন্য যানবাহনে  থাকা অবস্থায় কি সলাত আদায় করতে পারবে।

বিশেষ করে জ্যামে থাকা অবস্থায়।

উল্লেখ্য যদি সম্ভপর হয় তবে পর্দার বিধানটি জানাবেন। এক্ষেত্রে উক্ত মহিলা যদি শুধু মুখমন্ডল খোলা রেখে সারা শরীর পর্দা করে তবে উক্ত অবস্থায় যানবাহনে সলাত আদায় করা যাবে কিনা?

জাযাকাল্লাহু খইরান।।

1 Answer

0 votes
by (60,240 points)
edited by

وﻋَﻠَﻴْــــــــــــــــــــﻜُﻢُ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ ﻭَ ﺭَﺣْﻤَﺔُ ﺍﻟﻠﮧِ ﻭَﺑَﺮَﻛَﺎﺗُﻪ

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ     

قَدْ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ ۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا ۚ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۚ وَحَيْثُ مَا كُنتُمْ فَوَلُّوا وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُ ۗ وَإِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَيَعْلَمُونَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعْمَلُونَ [٢:١٤٤] 

নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি আপনাকে সে কেবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব যাকে আপনি পছন্দ করেন। এখন আপনি মসজিদুল-হারামের দিকে মুখ করুন এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকে মুখ কর। যারা আহলে-কিতাব, তারা অবশ্যই জানে যে, এটাই ঠিক পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আল্লাহ বেখবর নন, সে সমস্ত কর্ম সম্পর্কে যা তারা করে। {বাকারা-১৪৪}

 

যানবাহনে নামাজ পড়ার হুকুম সম্পর্কে জানার আগে তিনটি বিষয় জেনে রাখার দরকারঃ

১মঃ দাঁড়িয়ে নামায পড়া ।

২য়ঃ কিবলার দিকে মুখ রাখা ।

৩য়ঃ নিয়ম মুতাবিক রুকু-সিজদা সহ নামায পড়া । অর্থাৎ, ইশারায় রুকূ সিজদা না করা । 

 

যদি ট্রেন বা লঞ্চে বা বাসে বা রিক্সায় উল্লেখিত তিনটির কোন একটি করা সম্ভব না হয়, তাহলে সে নামায ত্রুটিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে নিবে । কিন্তু পরে বাড়ীতে এসে দোহরানো জরুরী হবে।

 

গাড়ীতে লঞ্চে বা বাসে নামায পড়ার নিয়ম এই যে, প্রথমে দাঁড়িয়ে তাহরীমা বাঁধার পর পড়ে যাওয়ার ভয় থাকলে হেলান দিয়ে বা কোন কিছুকে ধরে দাঁড়াবে । মনে রাখতে হবে- হাত বাঁধা সুন্নাত । কিন্তু দাড়ানো ফরয । কাজেই প্রয়োজনের সময় সুন্নাত তরক করে ফরয আদায় করতে হবে । গাড়ী, লঞ্চ ও বাস কিবলা থেকে ঘুরতে থাকলে মুসল্লীও ঘুরবে এবং সর্বদা কিবলামুখী থাকবে । সিজদার সময় পিছনের সিটে পা ঝুলিয়ে বসে সামনের ছিটে কম করে ১ তাসবীহ পরিমাণ সময় সিজদা করবে আর খালি জায়গা পেলে লঞ্চে, বাস বা ট্রেনের ফ্লোরে সিজদাহ করবে । আর যদি সিজদা করার মত কোন খালি জায়গা না পাওয়া যায়, তাহলে ইশারায় রুকূ-সিজদা করে নামায পড়ে নিবে । তবে এ ক্ষেত্রে গন্তব্যে স্থলে পৌঁছে নামায দুহরিয়ে পড়তে হবে । 

 

যানবাহনে যদি কেউ বিনা ওযরে বসে নামায পড়ে কিংবা নামায অবস্থায় কিবলা থেকে চেহারা ফিরে যায়, তাহলে নামায দুহরিয়ে নিতে হবে ।

(প্রমাণঃ আহসানুল ফাতাওয়া-৪/৮৮  ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়াহ-২ /১২০)

 

যানবাহনে ত্রুটিপূর্ণ নামায আদায় কারার পর সেখান নেমে পরবর্তীতে স্বাভাবিক অবস্থায় আবার নামাযকে এজন্য দোহরাতে হবে।

প্রশ্ন হল,যদি পরবর্তীতে নামাযকে দোহড়ানো লাগে,তাহলে গাড়ীতে কেন পড়তে হয়?

উত্তরে বলা যায় যে,আল্লাহ না করুক যদি এই গাড়ীতে থাকায় অবস্থায় কারো মৃত্যু চলে আসে,তাহলে সে এমন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করবে যে,তার যিম্মায় এক ওয়াক্ত নামায অবশিষ্ট থেকে যাবে।তাই তার প্রতি হুকুম হল, সে ত্রুটিপূর্ণ   অবস্থায় সে তার নামাযকে আদায় করে নেবে। যেহেতু ত্রুটিপূর্ণ অবস্থায় নামায পড়া হয়েছে,তাই পরবর্তীতে স্বাভাবিক অবস্থায় উক্ত নামাযকে দোহড়াতে হবে।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. হ্যাঁ, সলাতের ওয়াক্ত শেষ হয়ে নামাজ কাযা হয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে মেয়েরা রিক্সা কিংবা অন্য কোনো যানবাহনে থাকা অবস্থায় নামাজ পড়ে নিবে।  তবে যদি ট্রেন বা লঞ্চে বা বাসে বা রিক্সায় উল্লেখিত তিনটির কোন একটি করা সম্ভব না হয়, তাহলে সে নামায ত্রুটিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে নিবে । কিন্তু পরে বাড়ীতে এসে  আবার উক্ত নামাজ কাযা করে নিবে

 

উল্লেখ্য যে, যদি নামাজের ওয়াক্ত বাকী থাকে এবং সম্ভবনা থাকে যে, সে যানবাহন থেকে নেমে  বাড়ীতে বা অন্য কোথাও কিবলা মুখী হয়ে, দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক রুকু সেজদা করে নামাজ পড়তে পারবে তখন যানবাহনে ইশারায় নামাজ পড়বে না। বরং যানবাহনে ইশারায় তখন নামাজ পড়বে যখন সলাতের ওয়াক্ত শেষ হয়ে নামাজ কাযা হয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে।

 

২. না, মেয়েরা যানবাহনে গায়রে মাহরামদের সামনে মুখ খোলা রেখে নামাজ পড়বে না। বরং পরিপূর্ণ পর্দার সাথে মুখ ঢেকে নামাজ পড়বে।

উল্লেখ্য যে, যদি ট্রেন বা লঞ্চে বা বাসে বা রিক্সায় উল্লেখিত তিনটি অর্থাৎ দাঁড়িয়ে নামায পড়া, কিবলার দিকে মুখ রাখা বা নিয়ম মুতাবিক রুকু-সিজদা সহ নামায পড়ার কোন একটি করা সম্ভব না হয়, তাহলে সে নামায ত্রুটিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে নিবে । কিন্তু পরে বাড়ীতে এসে উক্ত নামাজ কাযা করে নিতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...