আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
482 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (-1 points)
আসসালামু আলাইকুম,

কিছুদিন পূর্বে একজন আলেমের কাছ থেকে আমি হানাফি মাযহাবের একটি নীতি সম্পর্কে জানতে পারি সেটা হলো: কোন আমলের নিয়ত গলদ হলে সেই আমলটি আদায় হয়ে যাবে কিন্তু তার সওয়াব পাওয়া যাবে না। যেমন: হাদিসে বর্ণিত এক সাহাবী এক মহিলাকে বিয়ের করার জন্য হিযরত করে।
এতে ঐ সাহাবীর হজ্জ আদায় হলেও সে এর সওয়াব পাবে না বলে হাদিসে উল্লেখ আছে।

তাহলে আমার প্রশ্ন:

কুরবানীর নিয়ত গলদ হলে কুরবানী বাতিল হবে কেনো? কুরবানীর সওয়াব না পাওয়া গেলেও তো কুরবানী আদায় হয়ে যাওয়ার কথা।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো যেসমস্ত ঈবাদত ঈবাদতে গায়রে মাকসুদা অর্থাৎ যেগুলো নিজে ইবাদত নয়,বরং অন্য একটি ইবাদতের মাধ্যম (যেমন অযু গোসল ইত্যাদি)  সেগুলো নিয়ত না করলেও  আদায় হয়ে যাবে,তবে নিয়ত করলে ছওয়াব পাওয়া যাবে।
,
আর যেই সমস্ত ইবাদত ইবাদতে মাকসুদা যেমন নামাজ,রোজা,কুরবানী ইত্যাদি 
এগুলো নিয়ত না করলে ইবাদত আদায়ই হবেনা। 
তার যিম্মায় এটা থেকেই যাবে,তাকে আবার আদায় করতে হবে।
(ফাতাওয়ায়ে শামী, হেদায়া,শরহে বিকায়াহ কিতাবুত তহারত দ্রষ্টব্য) 

عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ «إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوٰى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِه فَهِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُولِه وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ اِلٰى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوِ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهٗ إِلٰى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিয়্যাতের উপরই কাজের ফলাফল নির্ভরশীল। মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী ফল পাবে। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরত করবে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্যই গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার স্বার্থপ্রাপ্তির জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিবাহের জন্য হিজরত করবে সে হিজরত তার নিয়্যাত অনুসারেই হবে যে নিয়্যাতে সে হিজরত করেছে। 
  সহীহ : বুখারী ১, মুসলিম ১৯০৭, তিরমিযী ১৬৩৭, নাসায়ী ৭৫, আবূ দাঊদ ২২০১, ইবনু মাজাহ্ ৪২২৭, আহমাদ ১৬৯, ৩০২।

★এখানে হিজরত ইবাদতে মাকসুদা নয়,তাই নিয়ত গলতের কারনে হিজরত হলেও ছওয়াব হবেনা।
তবে কুরবানী হলো ইবাদতে মাকসুদা,তাই নিয়ত গলত হলে ইবাদতই হবেনা। 
পুনরায় আদায় করতে হব৷     
.
★কুরবানীতে গোশত খাওয়ার মাদয়ালা বিস্তারিতঃ 
যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কুরবানী না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী করে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে শরীকদের কারো কুরবানী হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরীক নির্বাচন করতে হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮, কাযীখান ৩/৩৪৯

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
فصل لربك وانحر
 (তরজমা) অতএব আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কুরবানী আদায় করুন।
অন্য আয়াতে এসেছে-
قل ان صلاتى ونسكى ومحياى ومماتى لله رب العالمين.
 (তরজমা) (হে রাসূল!) আপনি বলুন, আমার নামায, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ (অর্থাৎ আমার সবকিছু) আল্লাহ রাববুল আলামীনের জন্য উৎসর্গিত। (সূরা আনআম : ১৬২)
.
কুরবানী শরীকদার দ্বীনদার ও আল্লাহর জন্যই কুরবানী দিচ্ছে এমন ব্যক্তি হওয়া আবশ্যক। যদি একজন শরীকের নিয়তও খারাপ থাকে, তাহলে সকল শরীকের কুরবানী বাতিল বলে সাব্যস্ত হবে।

فى رد المحتار- ( وإن ) ( كان شريك الستة نصرانيا أو مريدا اللحم ) ( لم يجز عن واحد ) منهم لأن الإراقة لا تتجزأ (رد المحتار، كتاب الاضحية-9/472)

প্রামাণ্য গ্রন্থাবলী
১-ফাতওয়া শামী-৯/৪৭২
২-ফাতওয়া তাতারখানিয়া-৩/৪৫৪
৩-মিনহাতুল খালেক আলাল বাহরির রায়েক-৯/৩২৫
৪-খানিয়া আলা হামিশিল হিন্দিয়া-৩/৩৪৯
৫-ফাতওয়া আলমগীরী-৫/৪০৪
৬-ফাতওয়া আল ওয়াল ওয়ালিজিয়্যাহ-৩/৭৫
৭-তাবয়ীনুল হাকায়েক-৬/৪৮৪
৮-খুলাসাতুল ফাতওয়া-৪১৫


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...