আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
957 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
edited by
১ঃচাকরির জন্য বাহিরে থাকতে হয়। আর স্ত্রীর সাথে ফোনে কথা বলি।ফোনে প্রায় সময় ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে বলে আমি আপনার সাথে থাকবো না।আমি তাকে বলেছিলাম, তোর যা ইচ্ছা তাই কর, যেখানে খুশি সেখানে যা, যাকে খুশি তাকে বিয়ে কর।

একই ফোন কলে যখন সে সরাসরি তালাক চাই তখন আমি তাকে বলেছিলাম বাড়িতে গিয়ে ২ পরিবার আলোচনা করে  সিদ্ধান্ত নিবো। একই সময় সে আবার যখন বলে আমি আপনার সাথে থাকবো না। অনুরুপভাবে তাকে আবার এই কথাগুলো বলি। আবার যখন সে সরাসরি তালাক চাই  তখন বলি আবার বলি বাড়িতে গিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবো।
এভাবে আমাদের মাঝে ঘন্টার পর ঘন্টা ঝগড়া চলত। তাকে তালাক দেওয়ার কোন নিয়ত ছিল না। এখন আমি জানতে চাচ্ছি আমাদের কোন তালাক হয়েছে কি না?

২ঃ কেউ যদি মনে মনে তালাক দেয় আর তার জিহব্বা নড়ে কিন্তুু মুখ দিয়ে উচ্চারণ করল না। এতে কি তার স্ত্রীর উপর কোন তালাক পতিত হবে?

৩ঃ বারবার তালাকে কথা মনে আসা এটা কি ওয়াসওয়াসা রোগ?

৪ঃ ওয়াসওয়াসা রোগি তালাক দিলে সেটা কি কার্যকর হয়?

৫ঃ আমরা জানি যে, স্ত্রী বিনা কারণে তালাক চাইলে তার গুনাহ হয়। কিন্তু স্ত্রী যদি বিনা কারণে খোলা তালাক চাই তাহলে কি তার কোন গুনাহ হবেে?

৬ঃ তিন তালাক প্রাপ্ত কোন স্ত্রী যদি শুধুমাত্র তার প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে আসার জন্য দ্বিতীয় স্বামীর নিকট খোলা তালাক চাই তাইলে কি সে গুনাহগার হবে?

৭ঃ ৩ তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে তার স্বামী অন্য কোন ব্যাক্তির নিকট বিবাহ দিল অতপর তার নিকট থেকে তালাকের ব্যবস্থা করল এবং পুনরায় ইদ্দত শেষে ১ম স্বামী তাকে আবার বিয়ে করল। এক্ষেড়ে উক্ত স্ত্রী কি তার ১ম স্বামীর জন্য হালাল হবে?

৮ঃ তালাক  সন্দেহে কোন স্বামী যদি তার স্ত্রীকে বলে যে, তাদের সম্পর্ক জায়েজ আছে কি না তা আল্লাহই জানে।  উক্ত বাক্য বলার দ্বারা কি কোন তালাক পতিত হবে?

৯ঃ তালাকের সন্দেহে যদি কোন ব্যাক্তি তার স্ত্রীকে বলে যে, আল্লাহ না করুক যদি তাদের তালাক হয়ে যায় তাহলে সে তাকে হিল্লা বিয়ের মাধ্যমে আবার পুনরায় গ্রহণ করবে করবে । উক্ত বাক্যটি বলার জন্য তাদের  কি কোন তালাক পতিত হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


তালাক খুবই মারাত্মক  একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★তালাক স্পষ্ট বাক্য দ্বারাও হতে পারে,আবার কেনায়া শব্দ,ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারাও হতে পারে।
কেনায়া তালাক বলা হয় স্পষ্ট তালাক শব্দ না বলে বরং তালাকের ইঙ্গিতসূচক শব্দ বলে তালাক দেওয়া। 

★★শরিয়তের পরিভাষায় তালাকের ইঙ্গিত সূচক    শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

আরো জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,

(০১)
""তোর যা ইচ্ছা তাই কর, যেখানে খুশি সেখানে যা, যাকে খুশি তাকে বিয়ে কর""

এটি কেনায়া বাক্য।
তাই উল্লেখিত বাক্য বলার সময় আপনার তালাকের নিয়ত থাকলে তালাক পতিত হবে।

(০২)
না,এতে তার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفٰى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي مَا حَدَّثَتْ بِه„ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ
قَالَ قَتَادَةُ إِذَا طَلَّقَ فِي نَفْسِه„ فَلَيْسَ بِشَيْءٍ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে।
ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেনঃ মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুইতালাক হবে না। [বুখারী শরীফ ৫২৬৯.২৫২৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৮)

(০৩)
হ্যাঁ এটি ওয়াসওয়াসার রোগ।

(০৪)
যদি স্পষ্ট আকারে জিহবা নাড়িয়ে  মুখ দিয়ে উচ্চারণ করে,তাহলে তালাক হবে।

(০৫)
হ্যাঁ তাহলেও গুনাহ হবে।

(০৬)
হ্যাঁ গুনাহগার হবে।

(০৭)
যদি ২য় স্বামীর সাথে সহবাস হয়,তাহলে এক্ষেত্রে তাকে প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে ১ম স্বামীর সাথে বিবাহ  হালাল হবে।

২য় স্বামীর সাথে সহবাস না হলে এই পদ্ধতিতে ১ম স্বামীর সাথে বিবাহ হালাল হবেনা 

(০৮)
না,এতে তালাক হবেনা।

(০৯)
না,এতে তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...