আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
702 views
in সালাত(Prayer) by (10 points)
এক ব্যাক্তির গ্রামের বাড়ি রংপুর। সেই ব্যক্তি মুন্সিগঞ্জ এ চাকরি থেকে অবসর গ্রহন করে সেখানে জমি কিনে বাড়ি করেছেন। পরবর্তীতে তিনি আবার ঢাকা তে একটি চাকরি করেন, সেখানে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। সপ্তাহে দুদিন এর জন্য তিনি মাঝেমধ্যে মুন্সিগঞ্জের বাড়িতে আসেন। আবার রংপুর এ বাবার থেকে প্রাপ্ত জমিতে একটি বাড়ি করেছেন। সেখানেও তিনি মাঝেমধ্যে ১-২ দিন এর জন্য যান। আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই তিন জায়গার মধ্যে কোন কোন জায়গায় তার কসরের নামাজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم 
,
রংপুরে আপনার গ্রামের বাসা,এবং মুন্সিগঞ্জের  আপনার নিজের বাসা,দুটোই আপনার আসল বাড়ি (ওয়াতনে আসলি)। 

ঢাকায় কেবল আপনি বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করছেন। সুতরাং এটি আপনার স্থায়ী নিবাস নয়। সুতরাং আপনি গ্রামের বাসায় বা মুন্সিগঞ্জের বাসায়  গেলে মুসাফির হবেন না। বরং আপনি মুকিমই থাকবেন। তাই সেখানে গেলে আপনাকে পূর্ণাঙ্গ নামাযই পড়তে হবে।

ব্যক্তি নিজে স্থায়ী নিবাসে গেলে কখনো মুসাফির হয়না। স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।

শরীয়তের বিধান হলো কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলেও কসর পড়তে হবে। বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।

সুতরাং  ঢাকাতে যদি আপনি পনের দিনের থেকে কম থাকার নিয়ত করেন,তাহলে সেটা যেহেতু আপনার উভয় বাসা থেকেই সফরের দুরত্বে। 
তাই সেখানে আপনি কসরের নামাজ পড়তে পারেন।
  
৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয় কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়তে পার। এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।

হাদীস শরীফে এসেছে  
سنن أبى داود -صلاة السفر باب متى يقصر المسافر (1 / 465)حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ يَحْيَى بْنِ يَزِيدَ الْهُنَائِىِّ قَالَ سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ عَنْ قَصْرِ الصَّلاَةِ فَقَالَ أَنَسٌ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- إِذَا خَرَجَ مَسِيرَةَ ثَلاَثَةِ أَمْيَالٍ أَوْ ثَلاَثَةِ فَرَاسِخَ – شُعْبَةُ شَكَّ – يُصَلِّى رَكْعَتَيْنِ.
যখন তিন ফারছাখ সফরের নিয়ত করে,তাহলে কসরের নামাজ পড়তে পারবে।

فى رد المحتار- (الوطن الاصلى يبطل بمثله) ( قوله إذا لم يبق له بالأول أهل ) أي وإن بقي له فيه عقار قال في النهر : ولو نقل أهله ومتاعه وله دور في البلد لا تبقى وطنا له وقيل تبقى كذا في المحيط وغيره (رد المحتار-كتاب الصلاة، باب صلاة المسافر، مطلب في الوطن الأصلي ووطن الإقامة-2/614)
ওয়াতনে আসলিতে যদি স্থায়ী আর না থাকার নিয়ত করে,এবং  পরিবার সামানা যদি সেখানে আর না থাকে,তাহলে সেটা আর ওয়াতনে আসলি থাকবেনা। 
অন্যথায় সেটা ওয়াতনে আসলি হিসেবেই থাকবে।   


প্রামান্য গ্রন্থাবলী:
১. ফাতওয়ায়ে শামী-২/৬১৪
২. তাবয়ীনুল হাকায়েক-১/৫১৭
৩. আল বাহরুর রায়েক-২/২৩৬
৪. খাইরুল ফাতওয়া-২/৬৮২-৬৮৩
৫. আহসানুল ফাতওয়া-৪/৭৫-৭৬
৬. সুনানে আবু দাউদ-১/৬১৪
,
 


তবে যদি আপনি মুন্সিগঞ্জ কেই  ওয়াতলে আসলী তথা মূল বাড়ি হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। 
অর্থাৎ সেখানেই আপনি মূলত থাকেন পরিবার নিয়ে। 
এবং স্থায়ী ভাবে সেখানেই থাকার নিয়ত করেন।
তাহলে এমতাবস্থায় গ্রামের  বাড়িতে বেড়াতে এলে পনের দিনের কম থাকার নিয়ত করলে তিনি মুসাফির হবেন। তাই তার কসরই পড়তে হবে।

{ফাতাওয়া দারুল উলুম জাকারিয়া-২/৫১৪, ফাতাওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ-৪/৪৮৩, আপকি মাসায়িল আওর উনকা হল-২/৩৮৩}

অথবা যদি আপনি রংপুরের বাসাকেই  ওয়াতলে আসলী তথা মূল বাড়ি হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। 
অর্থাৎ সেখানেই আপনি মূলত থাকেন পরিবার নিয়ে। 
এবং স্থায়ী ভাবে সেখানেই থাকার নিয়ত করেন।
তাহলে এমতাবস্থায় মুন্সিগঞ্জের বাড়িতে বেড়াতে এলে পনের দিনের কম থাকার নিয়ত করলে তিনি মুসাফির হবেন। তাই তার কসরই পড়তে হবে।

وَالْوَطَنُ الْأَصْلِيُّ هُوَ وَطَنُ الْإِنْسَانِ فِي بَلْدَتِهِ أَوْ بَلْدَةٍ أُخْرَى اتَّخَذَهَا دَارًا وَتَوَطَّنَ بِهَا مَعَ أَهْلِهِ وَوَلَدِهِ، وَلَيْسَ مِنْ قَصْدِهِ الِارْتِحَالُ عَنْهَا بَلْ التَّعَيُّشُ بِهَا وَهَذَا الْوَطَنُ يَبْطُلُ بِمِثْلِهِ لَا غَيْرُ، وَهُوَ أَنْ يَتَوَطَّنَ فِي بَلْدَةٍ أُخْرَى وَيَنْقُلَ الْأَهْلَ إلَيْهَا فَيَخْرُجَ الْأَوَّلُ مِنْ أَنْ يَكُونَ وَطَنًا أَصْلِيًّا حَتَّى لَوْ دَخَلَهُ مُسَافِرًا لَا يُتِمُّ (البحر الرائق، كتاب الصلاة، باب المسافر-2/136، حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح، باب صلاة المسافر-429، شرح منية المصلى-541)
,
আর যদি আপনি ঢাকাতেই থাকেন,মুন্সিগঞ্জের বাসায় স্থায়ী ভাবে বসবাসের আপনার কোনো নিয়ত না থাকে,সেখান থেকে আপনার পরিবার এবং সামানাপত্র যদি নিয়ে এসে থাকেন,তাহলে আপনি মুন্সিগঞ্জের বাসায় ২/৩ দিনের জন্য আসলে কসরের নামাজ পড়তে পারবেন।   

فى رد المحتار- (الوطن الاصلى يبطل بمثله) ( قوله إذا لم يبق له بالأول أهل ) أي وإن بقي له فيه عقار قال في النهر : ولو نقل أهله ومتاعه وله دور في البلد لا تبقى وطنا له وقيل تبقى كذا في المحيط وغيره (رد المحتار-كتاب الصلاة، باب صلاة المسافر، مطلب في الوطن الأصلي ووطن الإقامة-2/614)
ওয়াতনে আসলিতে যদি স্থায়ী আর না থাকার নিয়ত করে,এবং  পরিবার সামানা যদি সেখানে আর না থাকে,তাহলে সেটা আর ওয়াতনে আসলি থাকবেনা। 
অন্যথায় সেটা ওয়াতনে আসলি হিসেবেই থাকবে।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...