আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
147 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
recategorized by
১)আজকে আমি হাত ধুয়ে পানির ফোটা আমার বোনের নাকে দেই। অই পানি সে মুখে খেতে গেলে আমি তাকে খেতে নিষেধ করি রোযা ভাংার ভয়ে। পরে সে তখনি থুথু র দেয় পানি যাতে না যায়। আমি আপুকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে সে খায় নি আর নাকে পানি গেলে রোজা ভাংে না এটা সে কোথাও দেখেছে। এখন তার কি রোজা আসলেই আছে?
(পানির ফোটা ১ বা ২ ফোটার মত)

২)যদি তার রোজা ভেংে যায় তাহলে সে তো ইফতার করছে তার রোজা হয়েছে ভেবে। এতে কি আমার কুফর হবে?

৩) হিন্দু একজন শিক্ষিকার কাছে পড়তে গেলে আমার মনে কিছু চিন্তা আসে যে সে যে এই চাপ্টার পড়াচ্ছে তা কোন রাশিফল দেখে আসল কিনা তাদের, যদি বলে পরীক্ষায় এই প্রশ্ন আসে তখন মনে আসে যে সে গায়েবের জ্ঞান বলার দাবি করল কিনা
অনেক কারনে ভাবছি বাদ দিয়ে দেই কারন তার সাথে অনেক দিনের পরিচয় তাই আমার মা বোন তার সাথে মিশে। অনেক কারনে মনে হয় যে তার কোন ধর্মের রীতিনীতি ভুলে আমরা ফলো করে ফেললাম কিনা। এসব চিন্তায়ই ভাবছি বাদ দিব তাকে
এখন আমি যদি মিথ্যা বলে বাদ দেই তাহলে কি শুধুমাত্র মিথ্যা বলার পাপই হবে না? নাকি কুফর/ মুনাফিকি হবে?

আমি ইমান ঠিক রাখার জন্য তাকে বাদ দিতে চাই। ইমান রক্ষার জন্য মিথ্যা বলে তাকে বাদ দেওয়া কি আল্লাহর সাথে বেয়াদবি মানে কুফর হবে অথবা মুনাফিকি হবে?

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://www.ifatwa.info/1282 নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

ওজুর ধারাবাহিক সুন্নত বর্ণানায় ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় উল্লেখিত রয়েছে-

 (ومنها المضمضة والاستنشاق) والسنة أن يتمضمض ثلاثا أولا ثم يستنشق ثلاثا ويأخذ لكل واحد منهما ماء جديدا في كل مرة وكذا في محيط السرخسي. وحد المضمضة استيعاب الماء جميع الفم وحد الاستنشاق أن يصل الماء إلى المارن. كذا في الخلاصة. إن ترك المضمضة والاستنشاق أثم على الصحيح؛ لأنهما من سنن الهدى وتركها يوجب الإساءة بخلاف السنن الزوائد فإن تركها لا يوجب الإساءة هكذا في السراج الوهاج.

ওজুর সুন্নত সমূহের মধ্যে একটি সুন্নত হলো,

(১) মাদমাদাহ তথা গড়গড়া করে কুলি করা

(২)ইস্তেনশাক্ব তথা নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো।নতুন পানি দ্বারা প্রথমে তিনবার মাদমাদাহ করা তারপর আবার নতুন পানি দ্বারা তিনবার ইস্তেনশাক্ব করা সুন্নত। বিশুদ্ধ মতানুযায়ী মাদমাদাহ এবং ইস্তেনশাক্ব ছেড়ে দিলে গোনাহ হবে।কেননা এ দু'টো সুন্নতে মু'আক্বাদাহ (অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিয়মিত সুন্নত)।এবং ছেড়ে দেওয়া গোনাহকে ওয়াজিব করে।তবে অন্যান্য সুন্নতে যায়েদাহ কে ছেড়ে দিলে কেউ গোনাহগার হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৭)

 

 وَالْمُبَالَغَةُ فِيهِمَا سُنَّةٌ أَيْضًا. كَذَا فِي الْكَافِي وَشَرْحِ الطَّحَاوِيِّ إلَّا أَنْ يَكُونَ صَائِمًا. كَذَا فِي التَّتَارْخَانِيَّة

ভালভাবে গড়গড়া করে কুলি করা, ও ভালভাবে নাকে পানি পৌঁছানো সুন্নত।তবে রোযাদারদের জন্য সুন্নত নয়। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৮)

 

রোযা অবস্থায় কুলি করা এবং নাকে পানি দেয়া যাবে।তবে মাদমাদাহ তথা গড়গড়া করে কুলি করা এবং ইসতেনশাক্ব তথা নাকে পনি দিয়ে জোড়ে টান দেয়া যাবে না।(আবকে মাসাঈল আউর উনকা হল-২৮৩)

 

আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ,লিখেন,

اﻟْﻘَﺎﻋِﺪَﺓُ اﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔُ: اﻟْﻴَﻘِﻴﻦُ ﻻَ ﻳَﺰُﻭﻝُ ﺑِﺎﻟﺸَّﻚِّ ﻭَﺩَﻟِﻴﻠُﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﺮْﻓُﻮﻋًﺎ {ﺇﺫَا ﻭَﺟَﺪَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺑَﻄْﻨِﻪِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻓَﺄَﺷْﻜَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﺧَﺮَﺝَ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْءٌ ﺃَﻡْ ﻻَ ﻓَﻼَ ﻳَﺨْﺮُﺟَﻦَّ ﻣِﻦْ اﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺴْﻤَﻊَ ﺻَﻮْﺗًﺎ، ﺃَﻭْ ﻳَﺠِﺪَ ﺭِﻳﺤًﺎ}

ভাবার্থঃতৃতীয় উসূল,ঈয়াক্বিন(দৃঢ় বিশ্বাস)সন্দের দ্বারা খতম হয় না।[তথা কারো কোনো বিষয় সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে, সে বিষয় সম্পর্কে বিপরিত কোনো সন্দেহের উদ্রেক হলে পূর্ব বিশ্বাসের কোনো ক্ষতি হবে না।অর্থাৎ নতুন করে জন্ম নেয়া সন্দেহ অগ্রহণযোগ্য ]

 

কয় অবস্থায় মিথ্যা বলা জায়েজ তা জানুন- https://ifatwa.info/40566/  

শিরক সম্পর্কে জানুন- https://ifatwa.info/36474/?show=36474#q36474

কুফরী সম্পর্কে জানুন- https://ifatwa.info/37105/?show=37105#q37105

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


১. শুধু নাকের বাহ্যিক অংশে পানি গেলে রোজা ভঙ্গ হয় না। তবে যদি নাকের ভিতর দিয়ে পেটের ভিতরে চলে যায় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দেখবেন যে, নাকে পানি দেওয়ার ফলে সেই পানি গলায় পৌছে গিয়েছিলো কি না? কারণ, গলায় পৌছে গেলে তা পেটে চলে যাওয়াই স্বাভাবিক। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি গলায় পানি পৌছে থাকে তাহলে রোজা ভেঙ্গে গিয়েছে বলে ধরে নিবেন। অন্যথায় নয়।

২. না, এতে আপনার  কুফরী হবে না।

৩. আপনি যেহেতু বোন। তাই আপনার জন্য হিন্দু শিক্ষিকার কাছে পড়া জায়েজ আছে। তবে যেহেতু তার কাছে পড়ার কারণে আপনার মনের মধ্যে ঈমান সম্পর্কে সন্দেহ বা সংশয় হয় তাই  আপনার জন্য উচিত ও উত্তম হলো কোনো মুসলিম শিক্ষিকার কাছে পড়া। সুতরাং বিষয়টি আপনি আপনার পিতা মাতার কাছে বুঝিয়ে বলবেন। আশা করি তারা আপনার কথা শুনবেন।

৪. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মিথ্যা বললে শুধু মিথ্যা বলার গোনাহ হবে। এতে কুফর বা মুনাফিকি হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...