বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
যাকাতের সওয়াব ও ফজীলত:
আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
مَثَلُ الَّذِينَ
يُنْفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنْبَتَتْ
سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنْبُلَةٍ مِائَةُ حَبَّةٍ وَاللَّهُ يُضَاعِفُ
لِمَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ.
যারা আল্লাহর রাস্তায় মাল খরচ করে, তাদের খরচকৃত জিনিসের উদাহরণ হলো ঐ শষ্যদানার
মতো, যে
এক দানা থেকে সাতটি শীষ উদগত হয়, যে
শীষগুলির প্রত্যেকটিতে আবার থাকে একশ করে দানা। আর আল্লাহ যাকে চান তাকে এর চেয়েও বেশী
দান করেন। তিনি সব ধরণের স্বচ্ছলতার অধিকারী, সর্ব
বিষয়ে সম্যক অবগত। সুরা বাকারা ২/২৬১
অন্য আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন,
الَّذِينَ يُنْفِقُونَ
أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ لَا يُتْبِعُونَ مَا أَنْفَقُوا مَنًّا
وَلَا أَذًى لَهُمْ أَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا
هُمْ يَحْزَنُونَ.
যারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে এবং ব্যায় করার পর
খোটা বা কষ্ট দেয় না, তাদের
জন্য তাদের প্রতিপালকের নিকট মহাপুরস্কার অপেক্ষা করছে। তারা আগত পরিস্থিতিতে ভীত সন্ত্রস্ত
হবে না এবং বিগত কিছুর জন্য তারা দুঃখিত হবে না। সুরা বাকারা ২/২৬২
যাকাতের হকদার:
আল্লাহ তাআলা বলেন-
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ
لِلْفُقَرَاء وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ
قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللّهِ وَابْنِ
السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللّهِ وَاللّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকীন, যাকাত
আদায়কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক এবং তা দাস-মুক্তির জন্য, ঋণ গ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের
জন্যে, এই
হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
-সরা তাওবাহ, আয়াত-৬০
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -ও তাঁর বংশধরদেরকে সদকা
দেয়া সম্পর্কে আলোচনা।:
حَدَّثَنَا آدَمُ،
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ زِيَادٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا
هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ أَخَذَ الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ ـ رضى الله
عنهما ـ تَمْرَةً مِنْ تَمْرِ الصَّدَقَةِ، فَجَعَلَهَا فِي فِيهِ، فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " كِخٍ كِخٍ ـ لِيَطْرَحَهَا ثُمَّ قَالَ ـ
أَمَا شَعَرْتَ أَنَّا لاَ نَأْكُلُ الصَّدَقَةَ ".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, হাসান ইব্নু ‘আলী
(রাঃ) সদকার একটি খেজুর নিয়ে মুখে দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা ফেলে দেয়ার জন্য ওয়াক
ওয়াক (বমির পূর্বের আওয়াজের মত) বললেন। অতঃপর বললেনঃ তুমি কি জান না যে, আমরা সদকা ভক্ষণ করি না! হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
। সহীহ বুখারী, হাদীস
নং-১৪৯১
যাদেরকে যাকাত দেওয়া জায়েয নেই:
১. কাফেরকে।
২. ধনী অর্থাৎ নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিককে; যদিও সে শিশু হয়।
৩. হাশেমী ও তাদের ক্রীতদাসদেরকে
৪. যাকাত দাতার ঊর্ধ্বতন এবং অধঃস্তন কাউকে। যেমন:-
পিতা, দাদা
বা এর ঊর্ধ্বতন কাউকে। এমনিভাবে পুত্র, পৌত্র
বা এর অধস্তন কাউকে।
৫. স্ত্রী, স্বামীকে
এবং স্বামী, স্ত্রীকে।
সাইয়্যেদ বংশীয় তথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লামের এর বংশীয় কাউকে যাকাত ও সদকায়ে ফিতির দেয়া বৈধ নয়। তবে অন্যান্য সাধারণ
দান করা যাবে। তবে যদি নামকাওয়াস্তে সৈয়দ বংশীয় হয়। অর্থাৎ মূলত রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর বংশীয় না হয়, তাহলে
যাকাত গ্রহণ করতে পারে। -সহীহ বুখারী, হাদীস
১৪৯১; সহীহ
মুসলিম, হাদীস
১০৬৯; মুসনাদে
আহমাদ, হাদীস
১৫৭০৮
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
আমার যতটুকু জানা আছে যে, বাংলাদেশের প্রচলিত সাইয়্যেদ বংশ নামকাওয়াস্তে
সৈয়দ বংশীয়। তারা মূলত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর বংশীয় কেউ নয়। তাই
তারা যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হলে তাদেরকে যাকাত দেওয়া যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। (তবে
যদি বাংলাদেশের কোনো সৈয়দ বংশ বাস্তবেই রাসূল সা. এর বংশীয় হয় (আর এটা না হওয়ার সম্ভবনাই
খুব বেশী) এবং তাদের নিকট প্রমাণও রয়েছে। তাহলে
তাদেরকে যাকাত দেওয়া যাবে না।