আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
301 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (36 points)
edited by
শায়েখ বার বার এত প্রশ্ন করার জন্য দুঃখিত।যদি বিষয়টি ভালো করে একটু বুঝিয়ে বলতেন তাহলে ইন শা আল্লাহ অনেক উপকৃত হব।

১।কুরআন তিলাওয়াত করার সময় যদি কেউ ডাক দেয় তাহলে কুরআন তিলাওয়াত একটু সময়ের জন্য বাদ দিয়ে তার ডাকে সারা দিয়ে তার কাছে গেলে কি শিরক হবে ?

২।মাঝে মধ্যে কথা বলার সময় একটা কথা বললে মনের মধ্যে আরেকটা কথা আসে খুব খারাপ জঘন্য চিন্তা আসে তাহলে কি শিরক হবে ইমান চলে যাবে?

৩।মাঝে মধ্যে একজন আরেক জনের একটা ভালো কথা বললে আমি আরেকজনের সাথে কথা বলি এবং সেই সময় আমার পাশে থাকা লোকদের কথা আমি ভালো ভাবে শুনতে পাই না  আমি আরেকজনের কথায় না/হা বলে ফেলি তারপর মনে পরে ওই লোকটাতো ভালো কথা বলছিল। এই কারনে কি ইমান চলে যাবে নাকি এই গুলো ওয়াসওয়াসা?

৪।হালকা ঘুম এমন সময় এমন কথা মনের মধ্যে আশে যা খুব খারাপ জঘন্য চিন্তা আমি সেই চিন্তার প্রতিবাদ করতে আরেক চিন্তা আশে। মানে একটু ঘুমভাব হয় আবার আগে কি বলছি ভুলে যাই মানে একবার কি বলছি আমি বুঝি আবার কি বলছি আমি বুঝি না। এতে কি ইমান চলে যাবে?  নাকি এই গুলো ওয়াসওয়াসা?

৫।আবার নফল বা সুন্নত ইবাদত করার সময় যদি কেউ ডাকে তাহলে কিছুক্ষণ এর জন্য ইবাদত বন্ধ রেখে সে কি বলছে সেটা শুনে তার কাজ করে দিলে কি শিরক হবে?
৬।ফরজ নামজের সময় যদি একজন বলে এই কাজটা করে তারপর ওয়াক্ত এর মধ্যে নামাজ পইরো আমি যদি তার কথা শুনে জামাতে নামাজ না পরে ওয়াক্ত এর মধ্যে নামাজ পড়ি তাহলে জামাতে নামাজ না পরার কারনে শিরক হবে? ইমান চলে যাবে?

৭।কোন কাজের চাপের কারনে যদি ফরজ নামাজ ইচ্চাকৃত ছুটে যায় এবং পরে তা কাজা করলেও কি ইমান চলে যাবে? শিরক হবে?

৮।কোন একজন যদি আমাকে হারাম কাজ করতে বলে আর আমি জানি এই কাজটি হারাম এই কাজ করতে আল্লাহ নিষেধ তার পর যদি করি তাহলে কি ইমান চলে যাবে?  শিরক হবে?

৯।আমি জানি হারাম কে হালাল বা হালাল কে হারাম বললে ইমান চলে যায় এখন যদি না জেনে বা সন্দের কারনে হারাম কে হালাল বা হালাল কে হারাম বললে ইমান চলে যাবে?

১০। উদাহরণ ঃআমি জানি যে এই জিনিসটা হারাম এখন আমি ভুলবশত যদি ওই জিনিসটাকেই হালাল বলি বা ভুলবশত মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায় তাহলে কি ইমান চলে যাবে?

১১।উদাহরণ ঃআমি একবার শুনেছিলাম এবং বিশ্বাস করেছিলাম যে জিনিসটা হারাম/হালাল কিন্তু ভুলে যাওয়ার কারনে যদি ওই জিনিসটা হারাম নাকি হালাল মনে করতে না পেরে চুপ থাকি তাহলে কি ইমান চলে যাবে?

১২।কোন এক ইসলামিক কথা হচ্ছে সেই সময় সেই বক্তা একটা ভালো কথা বলল আর তখনি আমার মনে খারাম কথা আসার কারনে বা খারাপ কিছু দেখা বা শোনার কারনে আমি নাউজুবিল্লাহ বললাম সেই বক্তার কথার কারনে না ওই খারাপ কথা,শোনা বা দেখার কারনে তাহলেও কি আমার ইমান চলে যাবে?

১৩।আমি জানি যে আল্লাহর ইচ্ছে ছাড়া কোন কিছুই হয় না এবং আমি এইটাই বিশ্বাস করি।
এখন যদি আমি বলি আমি এই কাজ করেছি। এখানে আল্লাহর ইচ্ছায়  করেছি কথাটি বলতে ভুলে গেলে কি ইমান চলে যাবে?

১৪।আমি যদি বলি আমি পরে এই কাজ করবো বা এই কাজ করলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে এখানে যদি ইন শা আল্লাহ বলতে ভুলে যাই তাহলে কি ইমান চলে যাবে?

১৫।বিয়ে করার পর যদি দেখি স্ত্রীর মধ্যে অনেক বড় শিরক/কুফুরি আকিদা আছে এবং সেটা তাকে বুঝানোর পরে সে আল্লাহর কাছে তাওবা করে তাহলে ওই বিবাহ কি হয়েছে বা বিবাহ কি টিকে আছে নাকি আবার বিবাহ করতে হবে?শায়েখ তাহলে নতুন করে বিবাহ করতে হবে নাকি করতে হবে না???

১৬।মাঝে মধ্যে ইমান ধ্বংসকারী চিন্তা আছে সেটা আসার পরে আল্লাহর রহমতে আল্লাহর দয়ায় আল্লাহর ইচ্ছায় আমি বুঝতে পারি যে এইটা ইমান ধ্বংসকারী চিন্তা এইটা বুঝার পর কি ওই চিন্তা আসার পরও ইমান চলে যাবে?

১৭।অনেকে অনেককে বলে ভুল হলে ক্ষমা করে দিয় এটা কি শিরক হবে?  যদি একটু বুঝিয়ে বলতেন।
১৮।কোন কাজ করার পরে মনে হয় ইমান ধ্বংস কারী কাজ করেফেলেছি কিন্তু কি কাজ করেছি তা মনে না থাকলে কি ইমান চলে যাবে নাকি এইটা ওয়াসওয়াসা?

১৯।কাউকে মনে মনে গালি দিলে কি হারাম হবে?

২০।অনেক সময় হারাম কাজ হয়ে যায় তখন মনে থাকে যে কাজটা হারাম অনেক ক্ষন পরে মনে পরে যে কাজটা হারাম। তাহলে কি ইমান থাকবে?

২১।প্রথম বার অনিচ্ছায় কোন গায়রে মাহরাম মহিলার সতর দেখলে সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিলে গুনাহ হবে না কিছুক্ষণ পর যদি ভুলবশত অনিচ্ছায় আবার ওই মহিলার সতর দেখলে কি গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-



শিরক দুই প্রকার: এক. শিরকে জলী, দুই. শিরকে খফী। শিরকে জলী সবচেয়ে মারাত্মক। শিরকে জলীর অনেক প্রকার রয়েছে। 
যেমন ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি। 
,
কিছু বিষয় আছে এমন, যা তাওহীদ-পরিপন্থী তো নয়, তবে তা ‘তাওয়াক্কুলে’র সর্বোচ্চ স্তর থেকে নিম্নস্তরের। এ ধরনের বিষয়গুলোকে শিরক বলা স্পষ্ট ভুল। যে বিষয়ে যতটুকু কমতি আছে তাতে ততটুকু কমতির কথাই বলা উচিত। বাড়াবাড়ি করে বিদআতকে শিরক বলে দেওয়া অথবা তাওয়াক্কুলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পরিপন্থী বিষয়কে তাওহীদের পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে শিরক বানিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।

আল্লাহ তাআলা নবীকে সতর্ক করে বলেছেন-
وَ لَقَدْ اُوْحِیَ اِلَیْكَ وَ اِلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكَ  لَىِٕنْ اَشْرَكْتَ لَیَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ.
নিশ্চয় আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি এই ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, যদি আপনি শিরক করেন তাহলে অবশ্যই আপনার সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে এবং নিশ্চিত আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। -সূরা যুমার (৩৯) : ৬৫

অন্যত্র আল্লাহ আরো বলেছেন-
اِنَّهٗ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَیْهِ الْجَنَّةَ وَ مَاْوٰىهُ النَّارُ.
আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। -সূরা মায়েদা (৫) : ৭২

আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেছেন-
اِنَّ اللهَ لَا یَغْفِرُ اَنْ یُّشْرَكَ بِهٖ وَ یَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذٰلِكَ لِمَنْ یَّشَآءُ وَ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدِ افْتَرٰۤی اِثْمًا عَظِیْمًا.
নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করা ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। এবং যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে এক মহাপাপ করে। -সূরা নিসা (৪) : ৪৮

বিস্তারিত  জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

(০১)
এতে শিরক হবেনা।

(০২)
শিরক হবেনা। ঈমান চলে যাবেনা।   

(০৩)
এতে ঈমান চলে যাবেনা। 

(০৪)
এতে ঈমান চলে যাবেনা। 
এগুলো ওয়াসওয়াসা।

(০৫)
এতে শিরক হবেনা।
নামাজের মধ্যে এভাবে যাওয়া যাবেনা।
তবে মা বাবা ডাকলে বিশেষ শর্ত স্বাপেক্ষে নফল নামাজ ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।  

(০৬)
এতে ঈমান চলে যাবেনা।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত মাসয়ালা জানুনঃ-  

(০৭)
এতে ঈমান চলে যাবেনা।
এতে শিরক হবেনা।

(০৮)
এতে ঈমান চলে যাবেনা।
এতে শিরক হবেনা।

হারাম কাজ করার গুনাহ হবে।

(০৯)
এতে ঈমান চলে যাবেনা।   

(১০)
এতে ঈমান চলে যাবেনা।   

(১১)
এতে ঈমান চলে যাবেনা।   

(১২)
এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।   

(১৩)
এতে ঈমান চলে যাবেনা।   

(১৪)
এতে ঈমান চলে যাবেনা।   

(১৫)
সে যেহেতু বিষয়টি সম্পর্কে জানেনা,তাই তওবা যথেষ্ট। নতুন ভাবে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবেনা।    

(১৬)
এতে ঈমান চলে যাবেনা।   

(১৭)
এতে ঈমান চলে যাবেনা।   
এটি তার কাছে তার সাথে ঘটে যাওয়া নিজ কৃত কর্মের মধ্যে ভুলের ক্ষমা চাওয়া।
যেটি বান্দার হক,তাই এই হক নষ্ট করে থাকলে তার কাছেই এর ক্ষমা চাইতে হবে।

(১৮)
এতে ঈমান চলে যাবেনা। 
এগুলো ওয়াসওয়াসা।

(১৯)
এতে গালি দেয়ার গুনাহ হবেনা।
তবে অন্যকে ঘৃনা করার গুনাহ হবে।
শরীয়তে গ্রহনযোগ্য কোনো কারনে এই ঘৃনা হলে সমস্যা নেই।  

(২০)
এতে ঈমান চলে যাবেনা। 

(২১)
ভুলবশত অনিচ্ছায় হলে গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...