আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
123 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (36 points)
edited by
শায়েখ,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

শায়েখ, খুবই আকিদা সম্পর্কে বিভ্রান্তিতে রয়েছি।যদি আমার প্রশ্নগুলো ভালো করে পড়ে যদি উত্তর দিতেন তাহলে অনেক উপকৃত হব ইন শা আল্লাহ।
প্রশ্নগুলো হলো,

১।কেউ যদি আল্লাহর থেকে অন্য কাউকে বেশি লজ্জা করে তাহলে কি বড় শিরক হবে ইমান নষ্ট হয়ে যাবে?

২। এক নং প্রশ্ন অনুসারে লজ্জার শিরকের কিছু উদাহরণ দিলে অনেক উপকৃত হব ইন শা আল্লাহ।

৩।আল্লাহ যে আমাদেরকে জ্ঞান দান করেছে আল্লাহ কি এই জ্ঞান সৃষ্টি করে আমাদেরকে দান করছে?

৪।গায়েবের খবর একমাত্র আল্লাহ জানে আমি এটা বিশ্বাস করি। কার অন্তরে কি আছে সেটা গায়েবের খবর সেটা একমাত্র আল্লাহ জানে। এখন প্রশ্ন হলো যার অন্তরে যেটা চলতাছে সে তো সেটা জানে? এই বিষয়টা ভালো করে পড়ে যদি আমাকে বলতেন তাহলে অনেক উপকৃত হবো ইন শা আল্লাহ।

৫।এখন বারযাখের জগৎ এটা গায়েবের জগৎ সেটা একমাত্র আল্লাহ জানে। উদাহরণঃ ফেরশতা কবরে প্রশ্ন করবো সেই প্রশ্ন কীভাবে করবে সেটা গায়েবের খবর সেটা একমাত্র আল্লাহ জানে। এখন প্রশ্ন হলো তাহলে ফেরশতারা যে প্রশ্ন করে সেটা তাহলে কি ফেরশতাও জানে না?  এই বিষয়টি ভালো করে পড়ে যদি আমাকে বলতেন তাহলে অনেক উপকৃত হবো ইন শা আল্লাহ।

৬।আমার সাথে একটা ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনাটা অন্য কোন মানুষ যানে না তাহলে কি এই ঘটনাটা আমার কাছে প্রকাশ্য হয়ে গেছে যে জানে না তার কাছে গায়েব হয়ে রয়েছে?যদি এর ব্যাখ্যা দিতেন তাহলে অনেক উপকৃত হব ইন শা আল্লাহ।

৭।আমরা যে কথা বলি সেটাও আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন মানে আমাদের কথাও আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন এই আকিদা কি সঠিক?

৮।কুরআন আল্লাহর বাণী মানুষ কুরআন তিলাওয়াত করে মানে আল্লাহর বাণী তিলাওয়াত করে। এই আকিদা কি সঠিক?

৯।আমার আকিদার মধ্যে এত বিভ্রান্তি তাহলে কি আমি ইমান হারা হয়ে গেছি নাকি?

১০।চিকিৎসার জন্য চালের পানি ধুয়ে খাওয়া কি জায়েজ নাকি কুসংস্কার?

১১।অনেক সময় মোবাইল টাকা রিচার্জ করার সময় দোকানদার এক টাকা বেশি নেয় তখন কেউ লজ্জায় সেই এক টাকা দোকদারের কাছে আর ফেরত চায় না দোকানদার সেই এক টাকা রেখে দেয়।এখন প্রশ্ন হলোঃ

ক) সেই এক টাকা দোকাদারের কাছে লজ্জায় না চেয়ে দোকানদারকে দিয়ে আসলে কি সেটা সুদ হিসেবে গণ্য হবে? হারাম হবে নাকি হালাল হবে?

খ)সেই এক টাকা নেয়া দোকাদারের জন্য কি হারাম হবে নাকি হালাল হবে?

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَن عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ ذَاتَ يَوْمٍ اسْتَحْيُوا مِنْ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ حَقَّ الْحَيَاءِ قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّا نَسْتَحِي وَالْحَمْدُ لِلهِ قَالَ لَيْسَ ذَلِكَ وَلَكِنْ مَنْ اسْتَحَى مِنْ اللهِ حَقَّ الْحَيَاءِ فَلْيَحْفَظْ الرَّأْسَ وَمَا حَوَى وَلْيَحْفَظْ الْبَطْنَ وَمَا وَعَى وَلْيَذْكُرْ الْمَوْتَ وَالْبِلَى وَمَنْ أَرَادَ الْآخِرَةَ تَرَكَ زِينَةَ الدُّنْيَا فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَقَدْ اسْتَحْيَا مِنْ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ حَقَّ الْحَيَاءِ

আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা আল্লাহকে যথাযথভাবে লজ্জা কর। সকলে বলল, ‘হে আল্লাহর নবী! আমরা তো—আলহামদু লিল্লাহ—আল্লাহকে লজ্জা করে থাকি।’ তিনি বললেন, না, ঐরূপ নয়। আল্লাহকে যথাযথভাবে লজ্জা করার অর্থ এই যে, মাথা ও তার সংযুক্ত অন্যান্য অঙ্গ (জিভ, চোখ এবং কান) কে (অবৈধ প্রয়োগ হতে) হিফাযত করবে, পেট ও তার সংশ্লিষ্ট অঙ্গ (লিঙ্গ, হাত, পা ও হৃদয়) কে (তাঁর অবাধ্যাচরণ ও হারাম হতে) হিফাযত করবে এবং মরণ ও তার পর হাড় মাটি হয়ে যাওয়ার কথা (সর্বদা) স্মরণে রাখবে। আর যে ব্যক্তি পরকাল (ও তার সুখময় জীবন) পাওয়ার ইচ্ছা রাখে, সে ইহকালের সৌন্দর্য পরিহার করবে। যে ব্যক্তি এ সব কিছু করে, সেই প্রকৃতপক্ষে আল্লাহকে যথাযথভাবে লজ্জা করে।

(মুসনাদে আহমাদ ৩৬৭১, তিরমিযী ২৪৫৮, সহীহ তিরমিযী ২০০০)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উল্লেখিত ছুরতে বড় শিরক হবেনা।

(০২)
উদাহরণ জানতে ও বুঝতে উপরোক্ত হাদীস দ্রষ্টব্য।

(০৩)
হ্যাঁ, এটা সৃষ্ট।

(০৪)
যার অন্তরে যেটা চলতাছে সেটা তো সে জানবেই,কারন তার অন্তরেই যে এটা চলছে।
সুতরাং এটি গায়েন জানা হবেনা।

(০৫)
সেটি সম্পর্কে ফেরেশতাদের জানানো হয়েছে।
সুতরাং সেটি তাদের কাছে গায়েব নয়।

(০৬)
গায়েব বলতে অদৃশ্যের কিছু অজানা জিনিস বা ভবিষ্যতে হবে এমন কোনো জিনিস  কোনো মাধ্যম ব্যাতিত বলে দেয়া।

 তাই উপরোক্ত ছুরত গায়েবের অন্তর্ভুক্ত নয়।

(০৭)
এটা সঠিক।

(০৮)
এটা সঠিক।

(০৯)
আপনি ঈমান হারা হননি।

(১০)
কোনো বিজ্ঞ ডাক্তার যদি সেটি বলে,তাহলে তাহা জায়েজ হবে।
নতুবা তাহা কুসংস্কার।

(১১)
ফ্লেক্সিলোডে যত টাকার ফ্লেক্সি করা হচ্ছে এর চেয়ে কম-বেশীতে লেনদেন করাতে সুদ নেই। 

নির্ধারিত অংকের ফ্লেক্সি অর্থাৎ ঐ পরিমাণ টেলি যোগাযোগ আউটগোয়িং সেবা, যা বিক্রয়যোগ্য। তাই এটা নির্ধারিত মূল্যের বেশীতে লেনদেন করা সুদ নয়। 

কিন্তু কোম্পানির পক্ষ থেকে লোডকারী তথা দোকানীকে যেহেতু কমিশন দেওয়া হয় এবং গ্রাহক থেকে এবাবদ অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়া কোম্পানি কর্তৃক নিষিদ্ধ তাই নির্ধারিত মূল্যের বেশী নেওয়া ঠিক হবে না। একইভাবে ফ্লেক্সিকারী দোকানীকে দেওয়া কমিশন তার জন্য বৈধ। এখানেও সুদের কিছুই নেই। বরং এ কারবারের ব্যাখ্যা হল, ১০ হাজার টাকার সেবা কোম্পানি তার ডিলারদের নিকট নয় হাজার টাকায় বিক্রি করছে। 
(ফাতহুল কাদীর ৬/১৫৯; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/৪০০)
(সংগৃহীত)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
এক্ষেত্রে একজাতীয় জিনিসের লেনদেন হয় না। কেননা মোবাইলে টাকা রির্চাজ করার মানে হচ্ছে, টেলি-যোগাযোগ সেবা ক্রয় করা।

সুতরাং একদিকে টাকা অন্যদিকে মোবাইল অপারেটরের সেবা ক্রয় করা হচ্ছে। টাকার মোকাবেলায় টাকা হচ্ছে না।

তাই মোবাইলে কম টাকা রির্চাজ হলেও তা সুদ হবে না।

★তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে  অতিরিক্ত এক টাকা নেয়াকে সুদ বলা যাবেনা। 

★এখানে যেহেতু সে কোম্পানি থেকে একটি পার্সেন্ট পায়,তাই এই এক টাকা অতিরিক্ত নেয়া তার জন্য ঠিক হচ্ছেনা।

তবে উভয়েই যেহেতু জেনে শুনেই সন্তুষ্টি  সেই অতিরিক্ত টাকা দিচ্ছে নিচ্ছে,তাই তাহা গ্রহন হারাম হবেনা।

হ্যাঁ যদি বিষয়টি গ্রাহক আগে থেকে না জেনেই রিচার্জ করতে যায়,আত দোকানদার বিষয়টি আগে না বলেই রিচার্জ করে দেয়ার পর দোকানদার সেই অতিরিক্ত এক টাকা দাবী করলে গ্রাহক তাহা দিতে না চাইলে দোকানদার যদি জোড় করে জুলুম করে টাকা নেয়,তাহলে সেটি গ্রহন দোকানদারের জন্য হারাম হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...