আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
74 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (41 points)
এক বোনের পক্ষ থেকে প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম।

আমার স্বামি মাসনা করেছিলেন। কিন্তু আমি জানতাম না। দীর্ঘ দিন গোপনে সংসার করার পর ঐ স্ত্রী কে তালাক দেন। এবং উনি নিজেই আরেকজনের কাছে উক্ত স্ত্রী কে বিয়ে দেন। আমার স্বামী তাঁর ২য় স্ত্রী কে একটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন,ঐ মহিলার নামে ছিলো ফ্ল্যাট টা। কিন্তু মহিলা না কি বলেছে " আপনার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে আপনার ফ্ল্যাট আপনাকে ফেরত দিবো"। আর আমার স্বামী প্রতিউত্তরে বলতেন, তোমাকে যা দিয়ে দিয়েছি তা আমি নিবো কেন? যাই হোক, এখন অন্য লোকের সংসারে যাবার পর আমার স্বামী ঐ মহিলার কাছে ঐ ফ্ল্যাট ফেরত চেয়েছেন।প্রথমে ঐ মহিলা দিতে চায় নাই। যেহেতু ফ্ল্যাট টা তার নামে। কিন্তু আমার স্বামী চাপ প্রয়োগ করেছেন কিছু টা আর মহিলার উক্ত কথা টা স্মরণ করিয়েছেন (তিনি যে বলছেন আপনার ফ্ল্যাট ফেরত দিবো)। ঐ মহিলার নতুন শ্বশুর বাড়ির লোকেরা ও চাচ্ছে না ফ্ল্যাট টা মহিলার নামে থাকুক। মহিলার স্বামী ও চাপ দিচ্ছে প্রাক্তন স্বামীর অর্থাৎ আমার স্বামীর দেওয়া সব জিনিস ফেরত দিতে। যাই হোক, অবশেষে ঐ মহিলা রাজি হয়েছে ফ্ল্যাট ফেরত দিতে। মহিলা আসলে মন থেকে দিচ্ছে না কি চাপে পড়ে দিচ্ছে তা জানি না। উনি ফ্ল্যাট না দিলে উনার ২য় সংসারে সমস্যা হবে,সংসার টিকানো মুশকিল হবে,হয়ত এ কারণে রাজি হচ্ছে। এখন,আমার স্বামী আমার নামে ফ্ল্যাট টা করে দিচ্ছেন। মানে আমাকে মালিক বানিয়ে দিচ্ছেন। ঐ মহিলা আমাকে লিখে দিয়েছেন ফ্ল্যাট টা। এখন আমার প্রশ্ন ২ টা।
১. উক্ত ফ্ল্যাট ভাড়ার টাকা কি আমার জন্য /আমার স্বামীর জন্য হালাল হবে?আমি কি এই টাকা খরচ করতে পারব?
২. আমি বিস্তারিত হয়ত বুঝাতে পারিনি। তবে এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে ফ্ল্যাট টা ফেরত না নিলেও মহিলার নতুন সংসারে শান্তি হবে না। উনার স্বামী প্রাক্তন স্বামীর কিছু রাখতে চাচ্ছে না। এই কাজটা তে কি উক্ত মহিলার হক নষ্ট করা হচ্ছে?
৩. এখন যেহেতু বাধ্য হয়ে নিতেই হচ্ছে তাইলে উক্ত ফ্ল্যাট ভাড়ার টাকা থেকে যদি আমি ঐ মহিলার নামে সাদকায়ে জারিয়া করি তাইলে কি তার হক আদায় হয়ে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (681,320 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো কাহারো সম্পদ তার সন্তুষ্টি ব্যাতিত ব্যবহার করা জায়েজ হবেনা। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمۡ رَحِیۡمًا ﴿۲۹﴾ 
হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে ব্যবসা করা বৈধ এবং নিজেদেরকে হত্যা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
(সুরা নিসা ২৯)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
عَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়।
আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ঐ মহিলা তো আপনাদের কোনো চাপে সেই ফ্ল্যাটটি দিচ্ছেনা।
বরং সম্ভবত ২য় সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য দিচ্ছে।
যেটাই হোক,এখানে যেহেতু আপনাদের পক্ষ থেকে তাকে চাপ দেয়া হয়নি,তাই এই ফ্ল্যাট টি গ্রহন জায়েজ হবে।
ভাড়া গ্রহনও হালাল হবে।

(০২)
সেই ২য় স্বামী যদি আসলেই উক্ত মহিলাকে বাধ্য করে এটি করিয়ে থাকে,তাহলে এতে ঐ মহিলার হক নষ্ট হবে।
২য় স্বামীর এক্ষেত্রে জুলুমের গুনাহ হবে।

(০৩)
আপনারা তো তার হক নষ্ট করেননি,সুতরাং আপনাদের হাক আদায় করতে হবেনা।
এখানে হক নষ্ট করেছে ঐ ২য় স্বামী। 

★উল্লেখ্য এখানে যদি ঐ মহিলাকে তার আগের স্বামী ফ্ল্যাট ফিরিয়ে দেয়ার জন্য চাপ দেয়,তাহলে এই চাপের ভিত্তিতে উক্ত মহিলা ফ্ল্যাট ফিরিয়ে দিয়ে থাকলে এটি জুলুম হবে।
বিধায় এই ছুরতে সেটি গ্রহন করা জায়েজ হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...