আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,184 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (1 point)
আমার এক বান্ধবী (সে আমাকে ভালোবাসে) স্বপ্নে দেখেছে তার বাবা তার বিয়ে অন্য ছেলের সাথে দিবে বলেছে তাকে বলেছে দুইদিন পর গায়ে হলুদ, সে মনে করেছে তার বাবা তার সাথে মজা করছে এখন সত্যি তার গায়ে হলুদ কিন্তু সে ওই ছেলে কে বিয়ে করবে না সে আমাকে বিয়ে করবে,তাই সে পুরো বাড়ি আগুন ধরিয়ে দিয়েছে আর সে তার বাবা বলছে হয় সে মরবে না হয় আমি মরবো তারপর তার বাবা তাকে বলছে তোর বিয়াই করা লাগবে না
এর ব্যাখ্যা কি

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/7321/  নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

যদি স্বপ্নে কেউ বিয়ে করতে দেখে, তার দ্বারা আসন্ন বিবাহ বুঝায়। স্বপ্নের সময় যদি বিয়ের পরিকল্পনা না থাকে তাহলে হয়তো যার যঙ্গে বিয়ে হতে দেখেছে তারা বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারে।

 

নিম্নোক্ত ঘটনাটি ইহা নির্দেশ করে:

হয়রত আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন, (স্বপ্নে) তোমাকে আমার নিকট দুবার দেখানো হয়েছে তোমাকে আমি বিয়ে করার পূর্বেই। আমি দেখলাম একজন ফেরেশতা কাউকে রেশমী কাপড়ের মধ্যে বহন করে নিয়ে যাচ্ছে, আমি তাকে বললাম: তাকে উন্মুক্ত করুন এবং আমি আশ্চর্য হয়ে দেখলাম ইহা তুমি। আমি নিজে নিজে বললাম: যদি ইহা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয় তাহলে অবশ্যই হবে। অতঃপর, তোমাকে পুনরায় দেখানো হলো।

 

পরবর্তীতে আমি একই ফেরেশতাকে স্বপ্নে দেখলাম কাউকে রেশমী কাপড়ের মধ্যে বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন এবং তাকে বললাম তাকে উন্মুক্ত করুন এবং আমি আশ্চর্য হয়ে দেখলাম পুনরায় ইহা তুমিই। আমি নিজে নিজে বললাম: যদি ইহা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয় তাহলে অবশ্যই ইহা ঘটবে।

حَدَّثَنَا مُعَلًّى حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهَا أُرِيْتُكِ فِي الْمَنَامِ مَرَّتَيْنِ أَرَى أَنَّكِ فِيْ سَرَقَةٍ مِنْ حَرِيْرٍ وَيَقُوْلُ هَذِهِ امْرَأَتُكَ فَأَكْشِفُ فَإِذَا هِيَ أَنْتِ فَأَقُوْلُ إِنْ يَكُ هَذَا مِنْ عِنْدِ اللهِ يُمْضِهِ

আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বলেন, দুবার তোমাকে আমায় স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। আমি দেখলাম, তুমি একটি রেশমী কাপড়ে আবৃতা এবং আমাকে বলছে ইনি আপনার স্ত্রী, আমি তার ঘোমটা সরিয়ে দেখলাম, সে মহিলা তুমিই। তখন আমি ভাবছিলাম, যদি তা আল্লাহর পক্ষ হতে হয়ে থাকে, তবে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন। (বুখারী শরীফ ৫০৭৮, ৫১২৫, ৭০১১, ৭০১২, মুসলিম ৪৪/১৩, হাঃ নং ২৪৩৮, আহমাদ ২৪১৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৬১৩)

 

আরো জানুনঃ 

https://ifatwa.info/4733/

 

মাতাপিতার বৈধ আদেশ মানা, তাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক ঘোষনা করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

 

আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,

وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে উহশব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)

 

সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে উহশব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল, ২৩)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

 

১. যদি স্বপ্নে কেউ বিয়ে করতে দেখে, তার দ্বারা আসন্ন বিবাহ বুঝায়। স্বপ্নের সময় যদি বিয়ের পরিকল্পনা না থাকে তাহলে হয়তো যার যঙ্গে বিয়ে হতে দেখেছে সে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারে।

 

২. মাতাপিতা সন্তুষ্টি ও অনুমতি নিয়ে সবাইকে অগ্রসর হতে হবে এবং মাতাপিতার সন্তুষ্টিই দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের উত্তম মাধ্যম। মাতাপিতাকে কষ্ট দিয়ে জীবনে সূখী হওয়া যাবে না। তাছাড়া বৈধ ও ভালো কাজে মাতাপিতার নির্দেশ মান্য করাও ওয়াজিব। পিতা মাতা সাধারণত সন্তানদের থেকে ভালো বুঝেন৷ সর্বদা তারা সন্তানদের কল্যাণ চান৷ বিশেষ করে বিয়ে শাদীর বিষয়ে পিতা মাতার মতকেই প্রাধাণ্য দেওয়া উচিত৷ অন্যথায় অনেক সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়৷ এটা বিয়ের আগে বুঝে আসে না, তবে বিয়ের পরে ঠিকই সবাই বুঝে৷ অনেক ছেলে মেয়ে যারা নিজেদের পছন্দের ছেলে মেয়েকে আবেগবশত বিয়ে করে পরবর্তীতে অনেক কষ্টে আছে৷

 

৩. জাহান্নামের শাস্তি অনেক কঠিন। তাই হারাম রিলেশন থেকে বিরত থাকা চাই। হারাম রিলেশনের কারণে কিয়ামতের দিন অনেককে জাহান্নামে যাওয়া লাগবে। বেগানা নারীর দিকে তাকানোর কারণে তার চোখে শিশা গরম করে ঢালা হবে। আরো অনেক শাস্তি দেওয়া হবে।  তাই আল্লাহকে ভয় করুন। আর তাকে আপনার পছন্দ ও আপনাকে তার পছন্দ থাকলে আপনাদের উভয় পরিবারকে বিয়ের দিকে অগ্রসর হতে পারেন। তবুও হারাম রিলেশন থেকে দূরে থাকুন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...