আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
380 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ

আমাদের বিয়ে হয়েছে প্রায় পাঁচ বছর। আমাদের উভয় পরিবার নন-প্রাক্টিসিং। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর অশেষ রহমতে প্রায় দুই বছর হলো হেদায়েত পেয়েছি। প্রথম প্রথম চেষ্টা করতাম স্বামীকে দ্বীনে ফেরাতে। কিন্তু কাজ হতো না, যখন বাধ্য করতাম তখন অন্তত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পড়তো। এরপর আমি জোর করা ছেড়ে দেই, সেও আর সালাত পড়ে না, কখনো কখনো জুমআর সালাত টাও পড়ে না।
বিয়ের আগে থেকেই স্বামী ঋণগ্রস্ত ছিলো, যা আমার পরিবার জানতো না। আর এই ঋণ ক্রমে ক্রমে বাড়তে থাকে, যা এখন ৬/৭ লাখে দাঁড়িয়েছে। এক বছর আগে এক্সিডেন্ট করে সেই থেকে কোন কাজ করে না, এখান থেকে টাকা আনে ওখান থেকে আনে। আমি আমার বাবার বাড়ি থেকে দেড় লাখের মতো টাকা এনে দিয়েছি, সেখানের কিছু টাকা আমার বোন জামাইদের আছে। আমার বাবা অসুস্থ মানুষ, এই টাকা গুলোর জন্য আমার বোন জামাইরা বাবাকে কথা শুনায়। এতো এতো টাকা ঋণ যার জন্য সে এখন বাড়ি থেকে দূরে থাকে বলা যায় আত্মগোপন, আমিও তার সাথে আছি। তার পেশা ড্রাইভিং করা, এখানে এসে সে ঠিক মতো কাজে যায় না। একদিন গেলে তিন দিন বসে থাকে, নানান অজুহাতে, শুধু বলে হাতে ব্যথা (এক্সিডেন্ট এর সময় ব্যথা পেয়েছিলো) আসলে এটা তার অজুহাত।ঠিক মতো কাজ করে না, যা বর্তমানে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। বিয়ের এতো গুলো বছরে এটা ভালো করেই বুঝেছি সে প্রচন্ড অলস একজন মানুষ, উড়নচন্ডি স্বভাবের একজন মানুষ। স্ত্রীর ভরণপোষণের দিকে তার কোন খেয়াল নেই। আমি কখন তার থেকে কিছু চাইনি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছাড়া, তবুও আমার নিজেরই চেয়ে নিতে হয়, এই ব্যাপারে তার কোন খেয়াল নেই। সারাক্ষণ বাসায় ঘুমায় আর ফোন টিপে। ক্রিকেট ফুটবল খেলায় প্রচন্ড আসক্তি তার, এমনকি ফেইসবুকের ভিডিও তেও আসক্তি। তার সালাত নেই, সিয়াম নেই, এমনকি মাঝে মাঝে এমন সব কথা বলে, যা বলার সাথে সাথে তাৎক্ষণিক ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়, ঈমান-হীন হয়ে যায়। আমি চেষ্টা করেছি দ্বীনে ফেরাতে কিন্তু পারিনি ছেড়ে দিয়েছি। সে নিজের পরিবারের সাথে সাথে আমার পরিবারের এবং আমার মান সম্মান সব শেষ করে দিচ্ছে। এতো এতো ঋণ তার কোনো ভাবাবেগ নেই, কোন চেষ্টা নেই। এমন ভাব তার , যেন আপনাআপনিই শোধ হয়ে যাবে সব ঋণ।
এমতাবস্থায় আমার করণীয় কি???

১. তার সুদের টাকার ব্যাপারে আমি স্বাক্ষী, যা সমান সমান গুনাহ

২. ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছে যা আমি উঠিয়ে দিয়েছি

স্ত্রীর ইজ্জত আব্রু রক্ষাতে তার কোন মাথা ব্যাথা নেই। সে প্রচন্ড গায়রত-হীন একটা পুরুষ।
আমার আসলে কি করণীয়। আমার পরিবার থেকে আমাকে চলে যেতে বলে, অন্তত কিছু দিনের জন্য হলেও তার থেকে দূরে থাকতে বলে।

আমার আসলে কি করণীয়? প্লিজ আমায় পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করুন। আমার ইচ্ছে করে না এই মানুষ টার সাথে সংসার করতে।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
নেককার স্বামী/স্ত্রী পাওয়া এবং সুস্থ সবল সন্তানের পিতা-মাতা হওয়া, বান্দার উপর আল্লাহ তা'আলার এক বিশেষ নেয়ামত।এজন্য প্রত্যেক স্বামী/স্ত্রী এর জন্য মহান রবের শুকরিয়া আদায় করা উচিৎ।এ বিশেষ নেয়ামতের অকৃতজ্ঞা প্রকাশ করার অর্থই হল নিজের জীবনকে বিপর্যয়ের দিকে ঢেলে দেয়া।

অাল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻭَﺇِﺫْ ﺗَﺄَﺫَّﻥَ ﺭَﺑُّﻜُﻢْ ﻟَﺌِﻦ ﺷَﻜَﺮْﺗُﻢْ ﻷَﺯِﻳﺪَﻧَّﻜُﻢْ ﻭَﻟَﺌِﻦ ﻛَﻔَﺮْﺗُﻢْ ﺇِﻥَّ ﻋَﺬَﺍﺑِﻲ ﻟَﺸَﺪِﻳﺪٌ
যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর। (সূরা ইবরাহিম-৭)


আমি আপনাকে বিশেষ কয়েকটি নসিহত করবো-
(ক)
আপনার স্বামীর উক্ত পাপ সম্পর্কে অন্য কাউকে জানাবেন না।কেননা গোনাহে গোপন রাখা ওয়াজিব।তাই গোপন রাখার চেষ্টা করুন।

(খ)
পূর্ণ আগ্রহের সাথে তাকে সময় দিন।তাকে কখনো একা ছেড়ে দিবেন না।বরং সর্বদা তার সাথে লেগে থাকুন।তার সকল প্রকার পছন্দের জিনিষকে নিজের পছন্দ বানিয়ে তার সাথে সর্বদা থাকার চেষ্টা করুন।

(গ)
তার হেদায়তের জন্য দু'আ করতে থাকুন।

এসবের পরেও যদি কোনো প্রকার ফায়দা না হয় তথা যদি স্বামী গোনাহ থেকে বিরত না থাকে, তাহলে এমতাবস্থায় স্ত্রী তালাক চাইতে পারবে বা খূলা করতে পারবে।

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
আমাদের মনে রাখতে হবে,
পরকালে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ আ'মলের হিসাব নিকাশ দিতে হবে।কারো পাপের বোঝাকে অন্য কেহ বহন করবে না।

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺰِﺭُ ﻭَﺍﺯِﺭَﺓٌ ﻭِﺯْﺭَ ﺃُﺧْﺮَﻯ ﻭَﺇِﻥ ﺗَﺪْﻉُ ﻣُﺜْﻘَﻠَﺔٌ ﺇِﻟَﻰ ﺣِﻤْﻠِﻬَﺎ ﻟَﺎ ﻳُﺤْﻤَﻞْ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْﺀٌ ﻭَﻟَﻮْ ﻛَﺎﻥَ ﺫَﺍ ﻗُﺮْﺑَﻰ الخ
কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়। 
(সূরা ফাতির-১৮)

সুতরাং বর্তমান পরিস্থিতে স্বামীকে বুঝিয়ে এই গোনাহের কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করুন।ধর্য্য সহকারে পরিস্থিতির মোকাবেলা করার চেষ্টা করুন।আল্লাহ অবশ্যই এর জন্য আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করবেন। হ্যা, আপনি কিছুদিনের জন্য তার থেকে দূরে থাকতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...