بسم الله الرحمن الرحيم
জাবাব,
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী
হায়েযের সর্বনিম্ন সময় সীমা ৩ দিন,আর সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০দিন। আর দুই হায়েযের মাঝে
পবিত্রতার সময়সীমা হলো ১৫ দিন।
হয়েযের ১০ দিনের ভিতর
লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি
বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে। যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী
জেওর-১/২০৬)
হায়েজের দিন গুলোতে যেই
কালারেরই রক্ত হোক,সেটি হায়েজের রক্ত বলেই গন্য হবে।
উক্ত সময় নামাজ রোযা
ইত্যাদি আদায় করা যাবে না। (কিতাবুল ফাতওয়া ২/৭৬)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী বোন!
তিন দিন পর যদি আপনার
হায়েয সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে যায়,তাহলে আপনি পবিত্র হয়ে যাবেন। আপনার এ হায়েয
বন্ধ হয়ে যাওয়া চায় ঔষধের কারণে হোক বা অন্য কোনো কারণে হোক,আপনি পবিত্র হয়ে যাবেন।
তবে যদি দশ দিনের ভিতর
আবার হায়েয চলে আসে,তাহলে আবার আপনি অপবিত্র হয়ে যাবেন। তথা মাঝে বন্ধ হওয়ার পর আবার চালু হলে,সেই রক্তকে হায়েযের রক্ত হিসেবে গণ্য করা হবে। যেমন বর্ণিত রয়েছে,
اذا عاودها الدم في العشرة بطل الحكم بطهارتها مبتدأة كانت او
معتادة و كأنها لم تطهر اصلا
হায়েয বন্ধ হওয়ার পর
দশ দিনের ভিতর আবার যদি হায়েয চলে আসে,তাহলে পূর্বের পবিত্রতার বিধান খতম হয়ে যাবে।
চায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন ঐ মহিলা প্রথমবার হোক বা এ ব্যাপারে অভ্যস্ত থাকুক। যেমন
ঐ মহিলা পূর্বে পবিত্রই হয়নি। (ফাতাওয়ায়ে তাতারখানিয়া-১/৪৮৫,
যাকারিয়া)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায়
বর্ণিত রয়েছে,
فَإِنْ لَمْ يُجَاوِزْ الْعَشَرَةَ فَالطُّهْرُ وَالدَّمُ
كِلَاهُمَا حَيْضٌ سَوَاءٌ كَانَتْ مُبْتَدَأَةً أَوْ مُعْتَادَةً
মাঝেমধ্যে হায়েয হওয়া
আবার মাঝেমধ্যে বন্ধ হওয়া, দশ দিনের ভিতর সবকিছুই হায়েয হিসেবে গণ্য হবে। চায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন
ঐ মহিলা প্রথমবার হোক বা এ ব্যাপারে অভ্যস্ত থাকুক। (ফাতাওয়ায়ে
হিন্দিয়া-১/৩৭,কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/১০৮,কিতাবুন-নাওয়াযিল-৩/১৭২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ
النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَيْسَ إِذَا حَاضَتْ لَمْ
تُصَلِّ وَلَمْ تَصُمْ، فَذَلِكَ نُقْصَانُ دِينِهَا»
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী
রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, হায়েজা মহিলা নামায পড়বে না এবং রোযা রাখবে
না, এটা কি ঠিক নয়? আর এটাই তাদের দ্বীনের
ত্রুটি। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৯৫১]
عَنْ مُعَاذَةَ، قَالَتْ: سَأَلْتُ عَائِشَةَ فَقُلْتُ: مَا
بَالُ الْحَائِضِ تَقْضِي الصَّوْمَ، وَلَا تَقْضِي الصَّلَاةَ. فَقَالَتْ:
أَحَرُورِيَّةٌ أَنْتِ؟ قُلْتُ: لَسْتُ بِحَرُورِيَّةٍ، وَلَكِنِّي أَسْأَلُ.
قَالَتْ: «كَانَ يُصِيبُنَا ذَلِكَ، فَنُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّوْمِ، وَلَا
نُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّلَاةِ»
হযরত মুআজা বলেন, আমি আয়শা রাঃ কে জিজ্ঞাসা
করলাম-হায়েজার হুকুম কী? সে কি রোযার কাযা করবে? নামাযের কাযা করবে না? আম্মাজান বললেন- তুমি হারুরিয়ার
অধিবাসী? আমি বললাম- নাহ।আমিই প্রশ্ন করছি। তিনি বললেন- “আমাদের
এমন হলে, আমাদের রোযার কাযার আদেশ দেয়া হতো, কিন্তু নামাযের কাযার নির্দেশ দেয়া হতো না। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৩৩৫]
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/ বোন!
প্রশ্নেলিখিত বর্ণনানুপাতে ৬ষ্ঠ
দিন আপনার হয়েযের ১০ম দিন। আপনি সেহেরীর সময় রক্ত বন্ধ দেখার পরে পুনরায় দশম দিন পূর্ণ
হওয়ার পূর্বেই রক্ত দেখেছেন বিধায় তা হায়েযের রক্ত হিসেবেই গন্য হবে। ৬ তারিখ আসরের
পরে যদি আপনি যদি কোন রক্ত দেখতে পান তাহলে তা ইস্তেহাযা হিসেবে গন্য হবে। ১ম দিন যেই সময় শুরু হয়েছিল দশম
দিন সেই সময়ের পূর্ব পর্যন্ত যেই রক্ত আসবে তা হয়েযে হিসেবেই গন্য হবে। তবে এর পরে
যেই রক্ত আসবে তা ইস্তেহাযা হিসেবে বিবেচিত।