আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
261 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আমি একটি মহিলা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। আমি ঠিক করেছি এবার রমাদানে ঘরে থেকে ইবাদাত করবো যেহেতু পর্দা করে বের হলেও গায়রে মাহরাম শিক্ষকদের সামনে যেতে হবে, চোখের জিনা হবে তাছাড়া ফেতনার সম্ভাবনা তো রয়েছেই। আমি ক্লাসের সময়টায় বাসায় নফল ইবাদাত করতে পারি এসব ভেবে ক্লাস করবো না রমাদানে ঠিক কিরেছি। ২০ রমাদান পর্যন্ত স্কুল কলেজ খোলা থাকবে তাই আমার মা ও আমার সৎ-বাবা আমাকে বকাবকি করছে জোর করছে ক্লাস করতে। আমি কলেজে যাই না দেখে আমার সৎ বাবা আমার মা কেও কথা শোনাচ্ছে এবং তারা কষ্ট পাচ্ছে। #এক্ষেত্রে আমার কি ক্লাস করা উচিত? #ওনাদের কথা অমান্য করার কারণে কি আমার গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক, ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। আর মেয়েরা মহিলা টিচারের কাছে পড়বে এটাই উত্তম। কারণ, অনেক সময় পুরুষ টিচারের কাছে পড়ার কারণে তাদের সাথে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে যায়। তবে ফিতনার আশংকা না থাকলে পরিপূর্ণ পর্দার সাথে পুরুষ টিচারের কাছে পড়া জায়েজ আছে। তবে ফিতনার আশংকা থাকলে পড়া জায়েজ নেই।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী (সূরা আলি ইমরান ১৪)

 

রাসুলুল্লাহ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)

 

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া। (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

 

একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

 

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

মেয়েরা মহিলা টিচারের কাছে পড়বে এটাই উত্তম। কারণ, অনেক সময় পুরুষ টিচারের কাছে পড়ার কারণে তাদের সাথে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে যায়। তবে ফিতনার আশংকা না থাকলে পরিপূর্ণ পর্দার সাথে পুরুষ টিচারের কাছে পড়া জায়েজ আছে। তবে ফিতনার আশংকা থাকলে পড়া জায়েজ নেই। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনিই সিদ্ধান্ত নিবেন যে, আপনার জন্য যাওয়া ঠিক হবে কি না?

 

তবে প্রতিষ্ঠানে গেলে চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে, প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষকের দিকে তাকানো যাবে না। কোনো পুরুষ টিচারের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না। সর্বদা গায়রে মাহরাম থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।

ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১;

উল্লেখ্য যে, লেখা পড়ায় একটু ত্রুটি হলে হয়তো দুনিয়াতে ক্ষতি হবে। কিন্তু ঈমান আমলের ত্রুটি বা পর্দার বিধান লঙ্ঘন অথবা চোখের যিনা হলে আখিরাতে শাস্তি পেতে হবে, যা খুব ভয়ানক।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (59,970 points)
একটু সংযোজন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...