আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
123 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (41 points)
আসসালামু আলাইকুম

বলা হয়েছে স্বামীর পছন্দ কে নিজের পছন্দ বানাতে,স্বামীর অপছন্দ কে নিজের অপছন্দ বানাতে। সর্বদা স্বামীর খুশি-অখুশির দিকে খেয়াল রাখতে। এখন প্রশ্ন হলো-
১. স্বামীর যদি গাইরে মাহরাম দের সাথে অনেক ঘনিষ্ঠতা থাকে,মেয়ে বান্ধবী থাকে এবং স্বামী চায় এসবে তার স্ত্রী কোন বাধা প্রদান না করুক,স্বামীকে সন্দেহ না করুক, স্ত্রীর সামনেই স্বামী তাদের সাথে যোগাযোগ করেন, এগুলা ও কি স্ত্রী মেনে নিবে? এসব বিষয়ে নসীহত করলে স্বামী উল্টা রাগ হোন আর তখন গোপনে যোগাযোগ রাখেন। এমতাবস্থায় স্ত্রী কি করবেন? স্বামীর এসব পছন্দ কি স্ত্রী পছন্দ করবে?

২. নফল নামাজ,ইলম অর্জন স্বামী খুব একটা পছন্দ করেন না। স্ত্রী কি তাহলে এসব বাদ দিবেন? ফরজ নামাজ ও অনেক লম্বা করলে স্বামী পছন্দ করেন না। মুখে বলেন না যদিও তবু বুঝা যায় উনি পছন্দ করছেন না।
৩. স্বামীর প্রতি যদি স্ত্রী বিরক্ত থাকেন আর ভালোবাসা কম থাকে, কিন্তু এমনিতে ভালো ব্যবহার করছেন, মুখে  বলে আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি, স্বামীকে কিছু বুঝতে দিচ্ছে না এতে কি স্ত্রীর গুণাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (681,320 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


প্রশ্নে উল্লেখিত স্বামীর কাজ গুলি স্পষ্ট হারাম।  
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّ السَّمْعَ وَالبَصَرَ وَالفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا.
...নিশ্চয় কান, চোখ, হৃদয় এর প্রতিটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ৩৬

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

আলী রা.-কে নবীজী বলেছেন,
يَا عَلِيُّ لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ، فَإِنَّ لَكَ الأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الآخِرَةُ.
হে আলী! (হঠাৎ) দৃষ্টি পড়ে যাওয়ার পর আবার দ্বিতীয়বার তাকিয়ো না। কারণ, (হঠাৎ অনিচ্ছাকৃত পড়ে যাওয়া) প্রথম দৃষ্টি তোমাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু দ্বিতীয় দৃষ্টি ক্ষমা করা হবে না। জামে তিরমিযী, হাদীস ২৭৭৭

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ


রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

(০১)
শরীয়তের খেলাফ স্বামীর কোনো কাজকে স্ত্রীর পছন্দের কোনো সুযোগ নেই।
স্বামীর হারাম কাজেও তাকে সমর্থন দিতে হবে,এমন কোনো কথা শরীয়তে নেই।
বরং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীর এহেন হারাম কাজের বিরোধিতা করতে হবে।

(০২)
উনি যেহেতু স্পষ্ট আকারে নিষেধ করেননি,সুতরাং উল্লেখিত কোনো আমল বাদ দেয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই।
       
তবে স্বামী অসন্তুষ্ট হলে নামাজ লম্বা না করে ছোট কিরা'আতে পড়তে পারেন।
সময় সুযোগ মোতাবেক দীর্ঘ করবেন।

(০৩)
স্বামীর খেদমত হক আদায় করা হলে উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রীর কোনো গুনাহ হবেনা।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...