প্রস্রাব পায়খানা চেপে রেখে নামাজ পড়া মাকরুহ।
এতে নামাজের খুশু-খুজু (একাগ্রতা) বিঘ্নিত হয় এবং হৃদয় মন নিবিষ্ট করে পরিপূর্ণ তৃপ্তির সঙ্গে নামাজ আদায় করা সম্ভব হয় না। তাই এসব চাপ থেকে মুক্ত হয়ে পূর্ণ তৃপ্তি ও স্থিরতার সঙ্গে নামাজ আদায় করা উচিত।
হাদিস শরিফে প্রস্রাব-পায়খানা ও বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الأَرْقَمِ، قَالَ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَأَخَذَ بِيَدِ رَجُلٍ فَقَدَّمَهُ وَكَانَ إِمَامَ قَوْمِهِ وَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ وَوَجَدَ أَحَدُكُمُ الْخَلاَءَ فَلْيَبْدَأْ بِالْخَلاَءِ "
وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ قَالاَ لاَ يَقُومُ إِلَى الصَّلاَةِ وَهُوَ يَجِدُ شَيْئًا مِنَ الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ . وَقَالاَ إِنْ دَخَلَ فِي الصَّلاَةِ فَوَجَدَ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ فَلاَ يَنْصَرِفْ مَا لَمْ يَشْغَلْهُ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ بَأْسَ أَنْ يُصَلِّيَ وَبِهِ غَائِطٌ أَوْ بَوْلٌ مَا لَمْ يَشْغَلْهُ ذَلِكَ عَنِ الصَّلاَةِ .
হান্নাদ ইাবনুস সারী (রহঃ) ..... উরওয়া থেকে বর্ণনা করেন যে, আবদুল্লাহ ইবনুল আরকাম রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন তাঁর কওমের ইমাম। একদিন ইকামত হওয়ার পর তিনি জনৈক মুসুল্লিকে হাত ধরে সামনে দাঁড় করিয়ে দিলেন এবং বললেন রাসূলল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, ইকামত হয়ে যাওয়ার পর যদি তোমাদের কেউ শৌচাগার গমনের তাকিদ অনুভব করে তবে তা আগে সেরে নিবে। - ইবনু মাজাহ ৬১৬, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৪২ [আল মাদানী প্রকাশনী]
★ইমাম আহমদ ও ইসহাক ও এই ধরনের অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেন সালাত শুরু করে দেওয়ার পর যদি কেউ পেশাব পায়খানার প্রয়োজন অনুভব করে তবে সালাত আদায়ে অমনোযোগীতা সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত সে সালাত ত্যাগ করবে না। কোন কোন আলিম বলেন সালাত আদায়ে অমনোযোগিতা সৃষ্টির আশংকা না হওয়া পর্যন্ত পেশাব পায়খানার তাকিদ সত্ত্বেও সালত আদায়ে কোন অসুবিধা নেই।
★প্রস্রাব-পায়খানা এবং বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ শুরু করা মাকরূহে তাহরিমি। আর স্বাভাবিক অবস্থায় নামাজ শুরু করার পর নামাজের মাঝে এমন চাপ সৃষ্টি হলে নামাজের পর্যাপ্ত ওয়াক্ত বাকি থাকা সত্ত্বেও এ অবস্থায় নামাজ চালিয়ে যাওয়া মাকরূহ। এ ধরনের ক্ষেত্রে নামাজ ছেড়ে দিয়ে প্রয়োজন শেষ করে পূর্ণ চাপমুক্ত হয়ে নামাজ আদায় করা উচিত। অবশ্য নামাজের ওয়াক্ত যদি এতটাই কম থাকে, যাতে প্রয়োজন সারতে গেলে নামাজ কাজা হয়ে যেতে পারে; সেক্ষেত্রে সম্ভব হলে এ অবস্থায়ই নামাজ পড়ে নেওয়া যাবে। তবে পর্যাপ্ত ওয়াক্ত থাকার পরও কোনো ইমাম বা একাকী নামাজ আদায়কারী যদি এ অবস্থায় নামাজ পড়ে নেয় তবে এমনটি করা মাকরূহ হলেও তাদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে। পুনরায় পড়া জরুরি নয়। কিন্তু ভবিষ্যতে এরূপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। (রদ্দুল মুহতার/১; ৩৪১ ও ৬৪৪)
প্রস্রাব-পায়খানা এবং বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ শুরু করা মাকরূহে তাহরিমি।
(০২)
হ্যাঁ আপনি এখন যে কোনো সময় প্রসাব পায়খানার চাপ নিয়ে নামাজ পড়তে পারবেন।
(০৩)
হ্যাঁ মুখ বেজার করে থাকা যাবে।
আপনি তাদেরকে প্রথমে ভালোভাবে বুঝাবেন।
প্রয়োজনে ইমাম সাহেব বা অন্য কোনো মুরব্বিকে দিয়ে বুঝাতে পারেন।
কাজ না হলে ধমক দিবেন।
(০৪)
এতে আপনার গুনাহ হবেনা।
(০৫)
অর্ধদিন পর্যন্ত বাকি থাকে।
তবে শুরুর ওয়াক্ত তথা সুর্য উদয়ের আনুমানিক ১৫/২০ মিনিট পরেই ইশরাকের নামাজ আদায় করা উত্তম।
(০৬)
যদি সুন্নায় তরীকায় নামাজের যাবতীয় রুকন আদায় করতে পারেন,তাহলে এমতাবস্থায় নামাজ পড়া যাবে।
তবে এটি নামাজের খুশু খুজুতে প্রতিবন্ধক,তাই এমন অবস্থা দূর করার চেষ্টা করবেন।
(০৭)
ইশরাকের নামাজ কমপক্ষে ২ রাকাত।
আর সর্বোচ্চ চার রাকাত।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
হযরত আনাস রাযি,থেকে বর্ণিত
(مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللَّهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ، كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ ، وَعُمْرَةٍ ، تَامَّةٍ ، تَامَّةٍ ، تَامَّةٍ)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি জামাতের সাথে ফজরের নামায পড়বে,অতঃপর সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহর যিকিরে লিপ্ত থাকবে,তারপর দু'রাকাত নামায পড়বে,তাহলে সে একটি হজ্ব ও একটি উমরার সওয়াব পাবে।এরপর তিনি তাকিদ করে বলেন,হ্যা পূর্ণ হজ্ব ও উমরার সওয়াব সে পাবে।(সুনানু তিরমিযি-৫৮৬)
(০৮)
রোযা রেখে স্বাভাবিকভাবে গরমে ঠোঁট যে সামান্য ঘাম আসে, যেটির সামান্য সিক্ততা অনুভূত হয়, সেই ঢুক গিলে ফেলার দ্বারা রোযার কোন সমস্যা হয় না।
তবে বেশি হলে সমস্যা হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ دِينَارٍ، حَدَّثَنَا سَعْدُ بْنُ أَوْسٍ الْعَبْدِيُّ، عَنْ مِصْدَعٍ أَبِي يَحْيَى، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُقَبِّلُهَا وَهُوَ صَائِمٌ وَيَمُصُّ لِسَانَهَا .
মুহাম্মাদ ইবন ঈসা ......... আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোযা থাকাবস্থায় তাঁকে চুম্বন করতেন এবং তাঁর জিহবা লেহন করতেন।
(আবু দাউদ ২৩৭৮)
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ الطَّيَالِسِيُّ حَدَّثَنَا لَيْثُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْأَشَجِّ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ سَعِيدٍ الْأَنْصَارِيِّ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ هَشِشْتُ فَقَبَّلْتُ وَأَنَا صَائِمٌ فَجِئْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ إِنِّي صَنَعْتُ الْيَوْمَ أَمْرًا عَظِيمًا قَبَّلْتُ وَأَنَا صَائِمٌ قَالَ أَرَأَيْتَ لَوْ مَضْمَضْتَ مِنْ الْمَاءِ قُلْتُ إِذًا لَا يَضِيرُ قَالَ فَفِيمَ
জাবির ইবন আবদুল্লাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমার ইবনুল খাত্তাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদা রোযাদার অবস্থায় আমি (আমার স্ত্রীর সাথে) আনন্দ করতে করতে চুম্বন করে ফেলি। এরপর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলি, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আজ আমি একটি গুরুতর কাজ করে ফেলেছি - রোযাদার অবস্থায় আমি (আমার স্ত্রীকে) চুম্বন করে ফেলেছি।’ তিনি বলেন, “তুমি যদি (রোযাদার অবস্থায়) পানি দিয়ে কুলি করতে, তবে (সে ক্ষেত্রে) তোমার মতামত কি? আমি বলি, ‘সেক্ষেত্রে তো কোন ক্ষতি হতো না।’ তিনি বললেন: “তদ্রূপ এতে আর কি?” (কোনো ক্ষতি নেই)।
(আদ দারেমী ১৭৬১.ইবনু হিব্বান নং ৩৫৪৪ ও মাওয়ারিদুয যাম’আন নং ৯০৫)
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি ঠোটের ঘাম নিতান্তই কম হয়,একফোটাও না হয়,তাহলে ঠোট মিলানোর কারনের তাহা মুখে চলে আসার পর তাহা গিলে ফেললে রোযা ভেঙ্গে যাবেনা।
(০৯)
আপনি যদি বায়ু বের হওয়ার আওয়াজ পান বা গন্ধ তবেই আপন অযু ভেঙ্গে গিয়েছে বলে ধরে নিবেন।
নতুবা নামাজ চালিয়ে যাবেন।
(১০)
হ্যাঁ জায়েজ আছে।
(১১)
যদি জিহবা নাড়িয়ে উচ্চারণ করে গালি দেয়া হয়ে যায়,তাহলে আপনি কাফের হয়ে যাবেন।
আপনাকে পুনরায় ঈমান আনতে হবে।
বিবাহিত হলে পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।
নিজের নফসের কারনে রমজান মাসেও আপনার এমন হচ্ছে।