ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/13900/?show=13900#q13900
নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,
শরীয়তের বিধান মতে বান্দা যেকোনো
অবস্থাতেই হোক, তার জন্য চুরি করা হারাম।
ইসলামে চুরির শাস্তিঃ
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«وَالسَّارِقُ وَالسَّارِقَةُ فَاقْطَعُوْا أَيْدِيَهُمَا جَـزَاءً بِمَا كَسَبَا نَكَالًا مِّنَ اللهِ، وَاللهُ عَزِيْزٌ حَكِيْمٌ»
‘‘তোমরা চোর ও চুন্নির (ডান) হাত কেটে দিবে তাদের
কৃতকর্মের (চৌর্যবৃত্তি) দরুন আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে শাস্তি
সরূপ। বস্তত আল্লাহ্ তা‘আলা অতিশয় ক্ষমতাবান মহান প্রজ্ঞাময়’’। (মায়িদাহ্ : ৩৮)
‘আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لَا تُقْطَعُ يَدُ السَّارِقِ إِلاَّ فِيْ رُبْعِ دِيْنَارٍ فَصَاعِدًا.
‘‘সিকি দিনার তথা এক গ্রাম থেকে একটু বেশি স্বর্ণ
(অথবা উহার সমমূল্য) এবং এর চাইতে বেশি চুরি করলেই কোন চোরের হাত কাটা হয়। নতুবা নয়’’। (বুখারী ৬৭৮৯, ৬৭৯০)
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
قَطَعَ رَسُوْلُ اللهِ يَدَ سَارِقٍ فِيْ مِجَنِّ ثَمَنُهُ ثَلَاثَةُ دَرَاهِمَ.
‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক
চোরের হাত কাটলেন একটি ঢাল চুরির জন্য যার মূল্য ছিলো তিন দিরহাম তথা প্রায় নয় গ্রাম
রূপা কিংবা উহার সমমূল্য’’। (বুখারী ৬৭৯৫)
,
চোরের শাস্তি সম্পর্কে শায়েখ মোস্তাফিজুর
রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী হাফিঃ লিখেছেনঃ
কারোর ব্যাপারে তার নিজস্ব স্বীকারোক্তি
অথবা গ্রহণযোগ্য যে কোন দু’ জন সাক্ষীর মাধ্যমে চৌর্যবৃত্তি প্রমাণিত হয়ে
গেলে অথচ চোরা বস্ত্তটি যথাযোগ্য হিফাযতে ছিলো এবং বস্ত্তটি তার মালিকানাধীন হওয়ার
ব্যাপারে তার কোন সন্দেহ ছিলো না এমনকি বস্ত্তটি সোয়া চার গ্রাম স্বর্ণ অথবা পৌনে তিন
গ্রাম রূপা সমমূল্য কিংবা এর চাইতেও বেশি ছিলো তখন তার ডান হাত কব্জি পর্যন্ত কেটে
ফেলা হবে, আবার চুরি করলে তার বাম পা, আবার
চুরি করলে তার বাম হাত এবং আবার চুরি করলে তার ডান পা কেটে ফেলা হবে।
কারোর চুরির ব্যাপারটি যদি বিচারকের
নিকট না পৌঁছায় এবং সে এতে অভ্যস্তও নয় এমনকি সে উক্ত কাজ থেকে অতিসত্বর তাওবা করে
নেক আমলে মনোনিবেশ করে তখন আল্লাহ্ তা‘আলা
তার তাওবা কবুল করবেন। এমতাবস্থায় তার ব্যাপারটি বিচারকের নিকট না পৌঁছানোই উত্তম।
,
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«فَمَنْ تَابَ مِنْ بَعْدِ ظُلْمِهِ وَأَصْلَحَ فَإِنَّ اللهَ يَتُوْبُ عَلَيْهِ، إِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٍ»
‘‘অনন্তর যে ব্যক্তি যুলুম তথা চুরি করার পর
(আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট) তাওবা করে এবং নিজ আমলকে সংশোধন করে নেয়
তবে আল্লাহ্ তা‘আলা তার তাওবা কবুল করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলা পরম ক্ষমাশীল অতিশয় দয়ালু’’। (মায়িদাহ্ : ৩৮)
,
আর যদি কোন ব্যক্তি চুরিতে অভ্যস্ত
হয় এবং সে চুরিতে কারোর হাতে ধরাও পড়েছে তখন তার ব্যাপারটি বিচারকের নিকট অবশ্যই জানাবে।
যাতে সে শাস্তিপ্রাপ্ত হয়ে অপকর্মটি ছেড়ে দেয়।
কারোর নিকট কোন কিছু আমানত রাখার
পর সে তা আত্মসাৎ করলে এবং কেউ কারোর কোন সম্পদ লুট অথবা ছিনতাই করে ধরা পড়লে চোর হিসেবে
তার হাত খানা কাটা হবে না। পকেটমারের বিধানও তাই। তবে তারা কখনোই শাস্তি পাওয়া থেকে
একেবারেই ছাড় পাবে না। এদের বিধান হত্যাকারীর বিধানাধীন উল্লেখ করা হয়েছে।
,
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি
বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لَيْسَ عَلَى خَائِنٍ، وَلَا مُنْتَهِبٍ وَلَا مُخْتَلِسٍ قَطْعٌ.
‘‘আমানত আত্মসাৎকারী, লুটেরা
এবং ছিনতাইকারীর হাতও কাটা হবে না’’। (আবূ দাউদ ৪৩৯১)
কেউ কারোর কোন ফলগাছের ফল গাছ
থেকে ছিঁড়ে খেয়ে ধরা পড়লে তার হাতও কাটা হবে না। এমনকি তাকে কোন কিছুই দিতে হবে না।
আর যদি সে কিছু সাথে নিয়ে যায় তখন তাকে জরিমানাও দিতে হবে এবং যথোচিত শাস্তিও ভোগ করতে
হবে। আর যদি গাছ থেকে ফল পেড়ে নির্দিষ্ট কোথাও শুকাতে দেয়া হয় এবং সেখান থেকেই কেউ
চুরি করলো তখন তা হাত কাটার সমপরিমাণ হলে তার হাতও কেটে দেয়া হবে।
রা’ফি’ বিন্ খাদীজ ও আবূ হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে
বর্ণিত তাঁরা বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لَا قَطْعَ فِيْ ثَمَرٍ وَلَا كَثَرٍ.
‘‘কেউ কারোর ফলগাছের ফল গাছ থেকে ছিঁড়ে খেলে অথবা
কারোর খেজুর গাছের মাথি-মজ্জা খেয়ে ফেললে তার হাতও কাটা হবে না’’।
(আবূ দাউদ ৪৩৮৮; তিরমিযী ১৪৪৯; ইব্নু মাজাহ্ ২৬৪২,
২৬৪৩; ইব্নু হিববান ১৫০৫ নাসায়ী ৮/৮৮; আহমাদ ৩/৪৬৩)
আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/13900/?show=13900#q13900
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. চোরের শাস্তি সম্পর্কে শায়েখ
মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী হাফিঃ লিখেছেনঃ
কারোর ব্যাপারে তার নিজস্ব স্বীকারোক্তি
অথবা গ্রহণযোগ্য যে কোন দু’ জন সাক্ষীর মাধ্যমে চৌর্যবৃত্তি প্রমাণিত হয়ে
গেলে অথচ চোরা বস্ত্তটি যথাযোগ্য হিফাযতে ছিলো এবং বস্ত্তটি তার মালিকানাধীন হওয়ার
ব্যাপারে তার কোন সন্দেহ ছিলো না এমনকি বস্ত্তটি সোয়া চার গ্রাম স্বর্ণ অথবা পৌনে তিন
গ্রাম রূপা সমমূল্য কিংবা এর চাইতেও বেশি ছিলো তখন তার ডান হাত কব্জি পর্যন্ত কেটে
ফেলা হবে, আবার চুরি করলে তার বাম পা, আবার
চুরি করলে তার বাম হাত এবং আবার চুরি করলে তার ডান পা কেটে ফেলা হবে।
উল্লেখ্য যে, নির্দিষ্ট পরিমাণ বা তার থেকে যত বেশী চুরি করুক তার হাতের কব্জি
পর্যন্ত কাটা হবে। আর এই বিধান কার্যকর করার দায়িত্ব সরকারের উপর বর্তাবে, সাধারণ জনগণের উপরে নয়।
২. হ্যাঁ, চোরকে সম্পদের মালিক ক্ষমা করে দিলেও উক্ত বিধান কার্যকর করা হবে।
৩. না, এভাবে মালিকের অনুমতি ছাড়া তার গাছের ফল বা সবজি খাওয়া জায়েজ হবে
না, খেলে গোনাহ হবে। তবে পরে অবশ্যই তার কাছ থেকে অনুমতি
নিয়ে নিতে হবে অথবা তার মূল্য পরিশোধ করে দিতে হবে।