আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ,
একজন মাওলানা সাহেব আমার পরিচিত এবং আমি তাকে 'ভাই' বলেই ডাকি। তিনি একবার বলতেছিলেন, তার ওস্তাদ একবার ক্লাসে বলছিলেন যে, 'ধরো তোমার কাছে টাকা চাইলো কেউ। তোমার পকেটে টাকা আছে। কিন্তু তুমি তাকে বললা যে,আমার কাছে তো টাকা নেই। আর এই কথা বলার সময় অন্তরে এটা যদি থাকে যে, তোমাকে দেবার জন্য আমার কাছে টাকা নেই। তবে এই কথা মিথ্যে হবে না' (সম্ভবত এটাকে হেকমতপূর্ন কথা বলে। কিন্তু আমার প্রশ্নটা হচ্ছে,আসলেই কি এরকম হেকমতরূপে কথা বললে মিথ্যে হবে না?)
হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের এক ঘটনা সম্ভবত। এক জালেম বাদশাহের কবলে যখন তিনি পড়লেন। তো সেই জালেম বাদশাহ থেকে নিজ স্ত্রীকে রক্ষার্থে তিনি তার স্ত্রীকে নিজের 'বোন' বলে সাব্যস্ত করেছেন। (অর্থাৎ কথাটি মিথ্যে নয়,তিনি তাকে দ্বীনি বোন হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন।) এটাও সম্ভবত হেকমত পূর্ণ কথা-ই..
এই বিষয়গুলো আমি আমার সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করলে। তারা এখন হেকমত খাটিয়ে অনেক কাজ করে। যেমন একবার কোচিং এ ক্লাস ছিল। কোচিং এ গনিত। আর আর্কিটেকচারাল ড্রয়িং করি আমরা। তো সেদিন সম্ভবত আর্কিটেকচারাল ডিজাইন ক্লাসটা আগে ছিল,এরপর গনিত। তো আমার এক সহপাঠীর ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা ছিল। তো তিনি স্যারের আর্কিটেচারাল ড্রয়িং ক্লাস শেষ হলে,স্যারকে বলেন যে, তিনি ডাক্তারের কাছে যাবেন তাই ছুটি দিলে ভালো হত। তো স্যার ছুটি দিলেন,গনিতটা করলো না। স্যার জিজ্ঞেস করলো, 'কখন হসপিটালে যাবে?' সহপাঠী উওর দিল, 'কোচিং এর পরে' তো স্যার ছুটি দিয়ে দিলেন। কিন্তু কথা হচ্ছে। আমাদের কোচিং ১১ টা বাজে। সহপাঠী ডাক্তার দেখাতে যাবে রাত্রে বা সন্ধ্যাবেলা। তো এখানে হেকমত খাটিয়েছে এভাবে, কোচিং তো শেষ ধরূন ১২টা বাজে । কিন্তু সহপাঠী দুপুরে যাক, বা বিকেলে যাক বা যখনই যাক ডাক্তারের কাছে,সে তো কোচিং এর পরেই যাচ্ছে। কিন্তু কথাটাকে হেকমতে জানিয়ে সে স্যারের কাছে গনিত ক্লাস না করে,ছুটি নিয়ে চলে গেছে।
এবং সহপাঠী নিজেও কোচিং এ হসপিটালের কথা বলে বেড়িয়েছে। এবং আরেকজন হসপিটালে যেত না। কিন্তু তাকে হসপিটালের কথা বলে বের করিয়েছে। এবং পরবর্তীতে যতটুকু জানা অপরজন সত্যি হসপিটালে গিয়েছে যাতে কথাটা মিথ্যে পরিনত না হয়। এখন এগুলো কি সত্যি হেকমতপূর্ন হবার কারনে মিথ্যে হয়নি, নাকি মিথ্যে হয়েছে?
যদি না হয়,তাহলে এসব হেকমত খাটিয়ে কথা বলা জায়েজ হবার ক্ষেত্রে কোনো শর্ত আছে কি শরীয়তে? জানালে আশা করি উপকৃত হব। শয়তান তো নেক সুরুতে বহু ধোকা দেয়। এভাবে আমাদের ধোকা দিয়ে মিথ্যে কথা বলিয়ে দিচ্ছে না তো,সেই ভয়ে প্রশ্ন করা। আল্লহ আপনাদের উওম জাযা (পুরস্কার) দান করুক। আমীন।