আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
167 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (7 points)
edited by

১. আমি তো নিয়ত করেছিলাম সবমিলিয়ে ২৬৫ টি কাফফারা দেওয়ার নিয়ত করেছি। কিছুদিন আগে আল্লাহর কসম তালাকের প্রশ্ন করবো না - এ জাতীয় আরও কয়েকবার কসম ভেঙে ফেলেছি। এরপর মনে মনে নিয়ত করে ফেলেছি ১০ টির কাফফারা দিবো। মানে একই কাজ না করার জন্য বার বার কসম কাটার জন্য প্রতিবার আলাদা আলাদা কাফফারা আদায়ের জন্য সতর্কতা হিসেবে ১০টি কাফফার নিয়ত করেছি। যদিও আমি জানি যে একই কাজ বার বার কসম করলেও একবারের টা আদায় করলেই হয়ে যায়। এক্ষেত্রে কাফফারার সংখ্যা হয়ে গেল ২৭৫ টি। মাঝে মাঝে মনের ভিতরে নিয়ত চলে আসতো ২৯০ টি দিয়ে দিবো, আবার নিয়ত চলে আসে যে সতর্কতা সরুপ ৩০০টির দিয়ে দিবো।

কাফফারার সংখ্যা কিভাবে স্থির করতে হয়? আমার মনে তো মাঝে মাঝে ৫০০/১০০০ ও উকি দেয়। - এই নিয়ত মনে হয় মনে মনে আমি ইচ্ছা করেই এনেছি। যেন কাফফারার সংখ্যা আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় নাকি অন্য কারণ কিছুই বুঝতে পারছি না। এখন লেখার সময় দুশ্চিন্তা হচ্ছে ৫০০/১০০০ কাফফারার নিয়ত হয়ে গেল নাতো? - এটা নিয়ে খুব চিন্তা হচ্ছে। একটু পর আবার মনে মনে চিন্তা আসতাছে ১০০০ কাফফারা দিলে কেমন খরচ হবে? ইত্যাদি। মানে আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আবার চিন্তা আসতাছে ১ লক্ষ/ ১ কোটি কাফফার। হুজুর, আমি অত্যাধিক সুচীবায়ুগ্রস্থ। আমাকে ঈমান আনতে সাহায্য করুন। যখন কাফফারার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার নিয়ত হয়ে যায় তখন আমি মনে কষ্ট পাই।

 

১. তাই, আমাকে কাফফারার সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দিন হুজুর।

২. আমি যতগুলো কাফফারার নিয়ত করে ফেলেছি আমি কি সেখান থেকে কাফফারা কমাতে পারবো?

৩. আমার অন্য যেকোনো পাপ কাজ করলে কি কাফফারা বেড়ে যাবে? 

৪. অনেক সময় মনের মধ্যে শর্ত চলে আসে যে উমুক কাজ না করলে কাফফারা বেড়ে যাবে - এক্ষেত্রে করণীয় কি? আমার মনের মধ্যে এসেছিল যে, হুজুর যতক্ষণ পর্যন্ত ফতোয়ার জবাব না দিবেন ততক্ষণ পর্যন্ত বাড়ির কারও সাথে খারাপ আচরণ করলে ক্ষমা না চাইলে কাফফারা বেড়ে যাবে। এই ভয় সাড়া দিয়ে একবার ক্ষমা চেয়েছি। আবার খারাপ আচরণ করেছি মনে হয়। নিয়ত করে ফেলেছি যে আবার ক্ষমা চেয়ে নিবো। এখন যদি ক্ষমা না চাই তাহলে কি কাফফারা বেড়ে যাবে? নাকি ওয়াসওয়াসা ভেবে বাদ দিবো?

৫. যে সমস্ত কাফফারা ঈমান চলে যাওয়ার সাথে সম্পর্কিত ছিল,  সেই কাফফারা গুলো আদায় না করলে কি ঈমান চলে যাবে?

২. হুজুর ম্যাসেজ এর  উত্তরে আপনি লিখেছেনঃ-

"আপনি প্রথমে যাকে বিবাহ করবেন,সে তিন তালাক প্রাপ্তা হয়ে যাবে।

পরবর্তীতে আপনি অন্য কোনো মহিলাকে বিবাহ করে নিবেন। 

আর যদি আপনাকে কেউ না জানিয়েই আপনার পক্ষ থেকে ইজাব করে আর মেয়ে কবুল করে,অতঃপর বিষয়টি আপনাকে জানানো হলে আপনি মৌখিক কিছু না বলে মোহর (আংশিক হতে পারে) পাঠিয়ে দেন, তাহলে এইভাবে আপনার ১ম বিবাহে সমস্যা হবেনা।"

২.১ঃ এক্ষেত্রে কেউ যদি একাধিকবার ভিন্ন বিষয় এ কসম ভেঙে থাকে তাহলে কি উক্ত পদ্ধতি কিংবা ১ম বিয়ের পর ২য় বিয়ের ক্ষেত্রেও তালাক হয়ে যাবে?

২.২ঃ এক্ষেত্রে তালাক হয়ে যাওয়ার কারণে তো আমার কাছে কেউ বিয়ে দিবে না, এক্ষেত্রে কি কোন মহিলা / মেয়েকে টাকা দিয়ে রাজি করিয়ে তালাকের নিয়তে বিয়ে করা করা যাবে?

২.৩ঃ উপরোক্ত ২ টি প্রশ্ন করার কারণে কি শর্তযুক্ত তালাক হয়ে গেছে?

২.৪ঃ উপরের আপনার দেওয়া পদ্ধতির একটু বিস্তারিত বলবেন? উপরের পদ্ধতিতে কি কি সীমাবদ্ধতা রয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (566,400 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


(১.২)
আপনি একই বিষয়ে একাধিকবার কসম করে একবার কসম ভেঙ্গে ফেলেছেন। 
এমন নয় যে আপনি সেই কসম ভেঙ্গে ফেলে আবারো সেই একই বিষয়ে কসম করে আবারো তাহা  কসম ভেঙ্গে ফেলেছেন।  
এমন নয়।
বরং আপনি একই বিষয়ে একাধিকবার কসম করে একবার কসম ভেঙ্গে ফেলেছেন। 

সুতরাং সামগ্রিক দিক বিবেচনা করে এটিই বুঝা যাচ্ছে যে আপনার উপর শুধুমাত্র একটি কাফফারা আদায় করতে হবে।

পরবর্তীতে একাধিক কাফফারা আদায়ের যে নিয়ত৷ ইত্যাদি করেছেন,এগুলোর কারনে কিছুই আবশ্যক হবেনা।।

 (০৩)
এতে কাফফারা বেড়ে যাবেনা।

(০৪)
এতেও কাফফারা বেড়ে যাবেনা।
এই ওয়াসওয়াসাকে গুরুত্ব দিবেননা।

(০৫)
না,এক্ষেত্রে কাফফারা আদায় না করলে আপনার  ঈমান চলে যাবেনা। 


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 

https://ifatwa.info/34990/ ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হানাফি মাযহাব মোতাবেক তালাক পতিত হওয়ার জন্য জরুরি হলো সেই মহিলা তার বিবাহিতা স্ত্রী হতে হবে অথবা শর্তযুক্ত বাক্যে ঐ মহিলার দিকে বিবাহের নিসবত করা হতে হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

عَنْ الشَّعْبِیِّ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ رَجُلٍ قَالَ لامْرَأَتهِ: کُلُّ امْرَأَةٍ أَتَزَوَّجُهَا عَلَیْک فَهَیَ طَالِقٌ، قَالَ: فَکُلُّ امْرَأَةٍ یَتَزَوَّجُهَا عَلَیْهَا، فَهِیَ طَالِقٌ.
(ابن أبي شیبة، المصنف، 4: 65، رقم: 17838، الریاض: مکتبة الرشد)
সারমর্মঃ  
হযরত শা'বী রহঃ থেকে বর্ণিত, তাকে এক ব্যাক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো,যে বলেছিলো,আমি যেই মহিলাকেই বিবাহ করবো,সে তালাক।
হযরত শা'বি রহঃ ফায়সালা দিলেন সে যেই মেয়েকেই বিবাহ করবে,সে তালাক প্রাপ্তা হবে।

بخلاف غیر المعینة فلو قال: المرأة التي أتزوجہا طالق طلقت بتزوجہا (الدر المنتقی: ۲/۵۷، مطبوعہ دار الکتب العلمیہ بیروت)
সারমর্মঃ
কেহ যদি বলে যে যেই মহিলাকে আমি বিবাহ করবো,সে তালাক।
তাহলে বিবাহ হওয়া মাত্র তালাক হবে।
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
আপনি প্রথমে যাকে বিবাহ করবেন,সে তিন তালাক প্রাপ্তা হয়ে যাবে।

এ থেকে বাঁচার পদ্ধতি হলোঃ  আপনার কোন পরিচিত জন আপনাকে না জানিয়ে আপনার পক্ষ থেকে দুইজন স্বাক্ষ্যির সামনে কনেকে বিয়ের প্রস্তাব দিবে। উক্ত মহিলা সেই বিয়ে কবুল করে নিবে। প্রস্তাবকারী আপনার কাছে এসে বলবে যে আমি তোমার বিয়ে ওমুক মেয়ের সাথে এত টাকা মোহরের বিনিময়ে দিয়ে দিলাম, সুতরাং তুমি মোহর হিসেবে কিছু টাকা/গহনা দাও। তারপর আপনি কোন কথা না বলে কমপক্ষে দুইজন স্বাক্ষীর সামনে চুপচাপ মোহর বাবত কিছু টাকা/গহনা দিয়ে দিবেন। তখন উক্ত মোহর বাবত প্রাপ্ত টাকা/গহনা সদ্য বিবাহিত স্ত্রীর কাছে পৌঁছিয়ে বলবে যে, এটা তোমার স্বামী মোহর বাবত দিয়েছে। এভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যাবে।
তখন আর পূর্বোক্ত কথার দরূন কোন তালাক পতিত হবে না।

আরো জানুনঃ

(২ঃ১)
এক্ষেত্রে ২য় বিয়ের ক্ষেত্রেও তালাক হয়ে যাবেনা।

(২ঃ২)
হ্যাঁ যাবে।

(২ঃ৩)
না,শর্তযুক্ত তালাক হয়নি।

(২ঃ৪)
উপরে উল্লেখ রয়েছে।

 (২ঃ৫)
হ্যাঁ যাবে।

(২ঃ৬)
না,জানাবেননা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...