আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
333 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (55 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম হুজুর।
১। সাবালক দুইজন পুরুষের সামনে যদি,,, একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী পুরুষ একে অপরকে স্বামী স্ত্রী/ বর বউ,,,  সম্মোধন করে,,, তাহলে কি তাদের ইজাব কবুল হয়ে যায়??

২।যদি এরকম ঘটনা যাদের সামনে ঘটেছিল সেই দুইজন সাবালক ছেলে যদি সঠিক মনে না করতে পারে,, বা যে দুইজনের মধ্যে ঘটেছিল তারা সঠিক মনে না করতে পারে যে দুইজনই বর বউ ডেকেছিল নাকি শুধু একজন ডেকেছিল। তাহলে হুকুম কি?? যেকোনো একজন সম্মোধন করেছিল বলে মনে আছে কিন্তু সেই কথার উত্তরে কি হ্যাঁ বোধক বা সম্মতিসূচক  কিছু বলেছিল কিনা মনে না থাকলে হুকুম কি??

৩। যদি এই ঘটনা স্পষ্ট মনে না থাকে তাহলে কি তারা ধরে নিবে যে ইজাব কবুল হয়নি??,,,, এরকম  সন্দেহ থাকার কারণে  ইজাব কবুল হয়নি ধরে নিলে কি আল্লাহ মাফ করবেন?? বা তারা কি পাপী হবে অন্য কাউকে বিয়ে করলে??

৪। যদি এমন হয় যে সত্যি সত্যি ইজাব কবুলের মত ঘটনা ঘটেছিল কিন্তু তারা সন্দেহ থাকার কারণে ধরে নেয় ইজাব কবুল হয়নি,,, তাহলে কি আল্লাহ মাফ করবেন??

৫।কোন স্বামী স্ত্রী হাসি খুশির মধ্যে বা অন্তরঙ্গ সম্পর্ক কাটানোর পর,, স্ত্রী যদি নিজেকে আবৃত করে নেয় কাপড়ের মাধ্যমে।  আর স্বামী যদি স্ত্রীকে বলে আমিও পর্দা করি তুমিও করছো যেহেতু এইটা বলে স্বামীও দুষ্টুমি করে কাথা জড়িয়ে নেয় নিজের শরিরে।
এইখানে দুষ্টামি করে পর্দার কথা বলাতে কোন সমস্যা হবে??

৬। কোন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে একটি বিষয় নিয়ে কথা হয়, ছোট বেলার টিকা/ ইঞ্জেকশন নিয়ে। স্বামীর শরীরে টিকার দাগ না থাকায় স্ত্রী মজা করে বলে তোমার মা মনে হয় তোমাকে টিকা দেন নি৷  এইভাবে কথা হতে হতে স্বামী রেগে যান আর বলেন,"" তুমি আমাকে জন্ম দিয়েছো তো, তাই তুমি বেশি জানো। তাই না?।"""

এই কথা সে রেগে গিয়ে বলে ফেলেছে,, স্বামী খুবই রাগী তাকে নিয়ত জিজ্ঞেস করলে হিতে বিপরীত হবে৷ এখন ওই স্ত্রী কি করবে?? তাদের সম্পর্কে কি কোন সমস্যা হবে??

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল  আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দু’জন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। সুতরাং বিয়ের মজলিসে সাক্ষীর উপস্থিত ছাড়া বিয়ে সহীহ হবে না।

 

হাদিস শরিফে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ لا نِكَاحَ إِلا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ ، فَهُوَ بَاطِلٌ

আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্  বলেছেন, অভিবাক ও দু’জন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত হবে তা বাতিল। (সহিহ ইবন হিব্বান ৪০৭৫)

 

ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}

 

বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হল মৌলিকভাবে দু’টি। যথা-

১-ইজাব কবুল হওয়া।

২-দুইজন মুসলিম প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা উক্ত ইজাব কবুল স্বকর্ণে শুনা।

 

ব্যস উক্ত দু’টি শর্ত পাওয়া গেলেই বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়।

যার পুরোপুরি ব্যাখ্যা হলোঃ- 

স্বামী স্ত্রীকে ইজাব তথা প্রস্তাব দিবে বা কোন ব্যক্তিকে উকিল বানিয়ে স্বামীর পরিচয় ও দেনমোহর উল্লেখ করে প্রস্তাব দিবে, আর স্ত্রী সেই প্রস্তাবকে কবুল করবে। কিংবা স্ত্রী নিজে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে, কিংবা স্ত্রীর অনুমতিক্রমে তার উকীল গিয়ে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে। আর উক্ত প্রস্তাব এবং কবুল বলার বিষয়টি উপস্থিত থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক দুইজন মুসলিম পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বকর্ণে শুনবে। তাহলেই শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. না, এতে ইজাব কবুল হবে না।

২. না, শুধু এভাবে বলার দ্বারা বিয়ে হবে না।

৩. না, শুধু এভাবে বলার দ্বারা বিয়ে হবে না।

৪. ঘটনা যদি বাস্তবে এমনই ঘটে থাকে তাহলে স্বামী স্ত্রী পরিচয় দেওয়ার কারণে তাদের মারাত্মক গোনাহ হবে। সুতরাং এর জন্য তাওবা করতে হবে। তবে এর দ্বারা ইজাব কবুল হবে না এবং বিয়েও হবে না।

৫. না, এতে কোনো সমস্যা  হবে না।

৬. না, এতে কোনো তালাক হবে না। তবে এভাবে কথা বলা ঠিক নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...