আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
2,391 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (1 point)
retagged by
আমাদের এলাকায় প্রায়ই মাইক দিয়ে কোরআন তেলাওয়াত খতম পড়া হয় এবং তা সমস্ত এলাকার মানুষ শুনতে পায়। এক্ষেত্রে কোন কোন সময় বিব্রতকর অবস্থায় পরতে হয়। যেমন - বাথ্রুমে থাকার সময়, স্ত্রীর সাথে থাকার সময় ইত্যাদি ইত্যাদি  আরো অনেক সময়ই ব্যাপারটা বাজে অনুভূত হয়।

1 Answer

+1 vote
by (574,050 points)
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো মাইকে উচ্চস্বরে কুরআন তেলাওয়াত করা,(যেখানে আওয়াজ যতদুর পর্যন্ত পৌছে,সকলের  মনযোগ সহকারে না শোনার সম্ভাবনা রয়েছে) কুরআনের সাথে কঠিন বেয়াদবির শামিল। 
ইমাম সাহেবকে বুঝানোর পড়েও যদি সে এহেন কাজ থেকে বিরত না থাকে,তাহলে তার পিছনে নামাজ মাকরুহ থেকে খালি নয়। 
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১২/৪৩১)  
           
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মাইক যোগে কোরআন খতমের তেলাওয়াত করা নাজায়েজ। 
এথেকে বিরত থাকতে হবে।
,
কোরআনে বলা হয়েছে, 
قال اللّٰہ تعالیٰ: {وَاِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُوْا لَہُ وَاَنْصِتُوْا لَعَلَّکُمْ تُرْحَمُوْنَ} [الأعراف: ۲۰۴]
"যখন কোরআন পাঠ করা হয় তা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করো, এতে তোমাদের উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হবে"।
,
 অর্থাৎ কোরআন কারো সামনে পাঠ করা হলে বা কোরআন পাঠের আওয়াজ কারো কানে পৌছলে তার জন্য কোরআন তেলাওয়াত মনোযোগ দিয়ে শ্রবণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর নির্দেশ পালন করা ফরয। অর্থাৎ কেউ যদি কোরআন তেলাওয়াত মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ না করে তবে সে ফরয ছেড়ে দিল যা শক্ত গোনাহ । 
কোরআনের যে আয়াত স্পষ্টভাবে কোনো কিছুর নির্দেশ দেয় তা ব্যাখ্যার দাবি রাখেনা। 
,
এর লঙ্ঘন করলে পরিণামে কী হবেঃ 
১) মাইকে এই তেলাওয়াতের আওয়াজ অনেক দূর থেকে শোনা যায় বলে দুনিয়াবী অনেক ধরণের ব্যস্থতার কারণে প্রায় সব মানুষই এই কোরআন তেলাওয়াত শ্রবণে মনোযোগ দিতে পারেনা। এরা না শোনার কারনে গুনাহগার হবে। তেলাওয়াত কারী  অনেক মানুষকে গুনাহগার  বানালেন। এর দায়ভার সম্পূর্ণরুপে তেলাওয়াত কারীর। 

২) প্রশ্রাব-পায়খানার জায়গায় কোরআন তেলাওয়াত করা এবং শ্রবণ করা দুইটাই হারাম। মাইকের আওয়াজতো ওখানেও যায়। অতএব, এখানে তেলাওয়াত কারী মানুষকে গুনাহ করতে বাধ্য করছেন।

 ৩) এতে মানুষ বিরক্ত হলে কোরআনের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ হলো, এর পেছনে তেলাওয়াত কারীই দায়ী। 
,
★দ্বিতীয়তঃ একে যদি আমরা নাগরিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি তবে মাইক যোগে কোরআন খতম করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। 

কারণ,
 ১) আশে পাশে অনেক রুগী থাকতে পারে যাদের ভীষণ কষ্ট হবে মাইকের আওয়াজে।
 ২) আশ-পাশের বাড়ির মানুষের ঘুমের বা স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ব্যাঘাত ঘটবে।
 ৩) জোর করে মানুষের উপর ধর্মীয় একটা কাজ চাপিয়ে দেয়া হলো আর এই রকম চাপিয়ে দেয়াটা ইসলাম সমর্থন করেনা। 
৪) আশ-পাশে অনেক শিক্ষার্থী-পরীক্ষার্থী থাকে যাদের পড়া-শোনায় ভীষণ ব্যাঘাত ঘটে।
,
হাদীস শরীফে এসেছে  
عن الحسن أن النبي صلی اللّٰہ علیہ وسلم کان یکرہ الصوت عند ثلاث عند الجنازۃ، وإذا التقی الزحفان، وعند قراء ۃ القرآن۔ (المصنف لابن أبي شیبۃ ۷؍۲۰۲ رقم: ۱۱۳۱۶)
রাসুল সাঃ  উচ্চ আওয়াজ করা ০৩ জায়গায় নিষেধ করেছেন,জানাযা নামাজের সময়,স্ত্রীর সাথে সহবাস করার সময়,কুরআন তেলাওয়াত করার সময়।     

وکذا قولہم بکفرہ، إذا قرأ القرآن في معرض کلام الناس، کما إذا اجتمعوا فقرأ فجمعناہم جمعًا، ولہ نظائر کثیرۃٌ في ألفاظ التکفیر کلہا ترجع إلی قصد الاستخفاف، بہ قال قاضیخان الفقاعی إذا قال عند فتح الفقاع للمشتري صل علی محمد ، قالوا: یکون آثمًا۔ (الأشباہ والنظائر ۱۰۴ زکریا)
যার সারমর্ম হলো কুরআনের অসম্মান হয়,অবমাননা হয়,এহেন জায়গায় কুরআন তেলাওয়াত করা গুনাহ। 
,
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছে  
لا یقرأ جہرا عند المشتغلین بالأعمال ومن حرمۃ القرآن أن لا یقرأ في الأسواق وفي مواضع اللغو۔ (الفتاویٰ الہندیۃ، الکراہیۃ / الباب الثالث في الرجل
لأي رجل الخ ۵؍۳۱۶) 
যারা ভিন্ন কাজে লিপ্ত আছেন,তাদের কাছে কুরআন শরিফ জোড়ে আওয়াজে পড়া যাবেনা।
বাজার,এবং যেখানে অনার্থক কাজ বা কথা হয়,এহেন জায়গায় কুরআন তেলাওয়াত করা কুরআনের প্রতি অসম্মান করা।
,
★সুতরাং এহেন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।        


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (1 point)
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সালাম আলাইকুম।
by
reshown by
وَاِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُوْا لَہُ وَاَنْصِتُوْا لَعَلَّکُمْ تُرْحَمُوْنَ 
এই আয়াতের অর্থের মধ্যে  وَاَنْصِتُوْا  শব্দের অর্থ লেখাা হয়নি। (এবং তোমরা চুপ থাকো)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...