আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
128 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
edited by
আমার এক ফ্রেন্ড দীনের আলোচনা করে।তা আলোচনা থেকে আমার অন্য ফ্রেন্ডসদের আমি দূরে রাখি এজন্য যে আমি চাইনা আমার ক্যাম্পাসে জানুক কেউ যে আমি ধার্মমিক বা অনেক মানি আর এতে আমার রিস্ক আরো বেড়ে যাক।আল্লাহ কি আমার এমন উদ্দেশ্যে নারাজ হবেন?আমার বয়স ২১.আমার মনে হয় আমি পড়াশোনা শেষ করে প্রতিষ্ঠিত হবো তখন দীনের জন্য আরো কিছু করবো।এখন কিছু করতে গেলে আমার পড়াশোনায় ঝুকিপূর্ণ হয়ে যাবে!

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


দ্বীনের কাজ মূলতঃ আল্লাহর নির্দেশ। এ নির্দেশ বাস্তবায়নে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ) তাকে বিভিন্নভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। 
এ কাজে বাধা দেওয়া যাবেনা।
দ্বীনী কাজে বাধা প্রদান করতে মহান আল্লাহ কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। 

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَلاَ تَقْعُدُوْا بِكُلِّ صِرَاطٍ تُوْعِدُوْنَ وَتَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِ اللّهِ مَنْ آمَنَ بِهِ وَتَبْغُوْنَهَا عِوَجاً وَاذْكُرُوْا إِذْ كُنْتُمْ قَلِيْلاً فَكَثَّرَكُمْ وَانْظُرُوْا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُفْسِدِيْنَ-

‘তোমরা পথে-ঘাটে একারণে বসে থেকো না যে, আল্লাহ বিশ্বাসীদেরকে হুমকি দিবে, আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করবে এবং তাতে বক্রতা অনুসন্ধান করবে। স্মরণ কর, যখন তোমরা সংখ্যায় অল্প ছিলে অতঃপর আল্লাহ তোমাদেরকে অধিক করেছেন এবং লক্ষ্য কর কিরূপ অশুভ পরিণতি হয়েছে অনর্থকারীদের’ (আ‘রাফ ৭/৮৬)।

 অন্যত্র আল্লাহ বলেন,
 وَلاَ تَكُوْنُوْا كَالَّذِيْنَ خَرَجُوْا مِنْ دِيَارِهِمْ بَطَراً وَرِئَاءَ النَّاسِ وَيَصُدُّوْنَ عَن سَبِيْلِ اللّهِ وَاللّهُ بِمَا يَعْمَلُوْنَ مُحِيْطٌ-

‘আর তাদের মত হয়ে যেয়ো না, যারা বেরিয়েছে নিজেদের অবস্থান থেকে গর্বিতভাবে এবং লোকদেরকে দেখানোর উদ্দেশ্যে। আর আল্লাহর পথে তারা বাধা দান করত। বস্ত্ততঃ আল্লাহর আয়ত্বে রয়েছে সে সমস্ত বিষয় যা তারা করে’ (আনফাল ৮/৪৭)।

মহান আল্লাহ বলেন,

قُلْ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ لِمَ تَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِ اللّهِ مَنْ آمَنَ تَبْغُوْنَهَا عِوَجاً وَأَنْتُمْ شُهَدَاءَ وَمَا اللّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ-

‘বলুন, হে কিতাবধারীগণ! কেন তোমরা আল্লাহর পথে ঈমানদারদেরকে বাধা দান কর, তোমরা তাদের দ্বীনের মধ্যে বক্রতা অনুপ্রবেশ করানোর পন্থা অনুসন্ধান কর, অথচ তোমরা এ পথের সত্যতা প্রত্যক্ষ করছ। বস্ত্ততঃ আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অনবগত নন’ (আলে-ইমরান ৩/৯৯)।

وَإِذَا قِيْلَ لَهُمْ تَعَالَوْاْ إِلَى مَا أَنْزَلَ اللّهُ وَإِلَى الرَّسُوْلِ رَأَيْتَ الْمُنَافِقِيْنَ يَصُدُّوْنَ عَنْكَ صُدُوْداً-

‘আর যখন বলা হবে, আল্লাহর নির্দেশের দিকে এসো, যা তিনি রাসূলের প্রতি নাযিল করেছেন, তখন আপনি মুনাফিকদের দেখবেন, তারা আপনার কাছ থেকেও সম্পূর্ণভাবে সরে যাচ্ছে’ (নিসা ৪/৬১)।

فَبِظُلْمٍ مِّنَ الَّذِيْنَ هَادُواْ حَرَّمْنَا عَلَيْهِمْ طَيِّبَاتٍ أُحِلَّتْ لَهُمْ وَبِصَدِّهِمْ عَنْ سَبِيْلِ اللّهِ كَثِيْراً-

‘বস্ত্ততঃ ইহুদীদের জন্য আমি হারাম করে দিয়েছি বহু পূত-পবিত্র বস্ত্ত, যা তাদের জন্য হালাল ছিল, তাদের পাপের কারণে এবং আল্লাহর পথে অধিক পরিমাণে বাধা দানের দরুন’ (নিসা ৪/১৬০)। 

اَلَّذِيْنَ يَسْتَحِبُّوْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا عَلَى الآخِرَةِ وَيَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِ اللّهِ وَيَبْغُوْنَهَا عِوَجاً أُوْلَـئِكَ فِيْ ضَلاَلٍ بَعِيْدٍ-

‘যারা পরকালের চাইতে পার্থিব জীবনকে পসন্দ করে, আল্লাহর পথে বাধা দান করে এবং তাতে বক্রতা অন্বেষণ করে, তারা পথ ভুলে দূরে পড়ে আছে’ (ইবরাহীম ১৪/৩)।

 اِتَّخَذُوْا أَيْمَانَهُمْ جُنَّةً فَصَدُّوْا عَنْ سَبِيْلِ اللَّهِ فَلَهُمْ عَذَابٌ مُّهِيْنٌ-

‘তারা তাদের শপথকে ঢাল করে রেখেছে, অতঃপর তারা আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বাধা প্রদান করে। অতএব তাদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি’ (মুজাদালাহ ৫৮/১৬)।

 اَلَّذِيْنَ يَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِ اللّهِ وَيَبْغُوْنَهَا عِوَجاً وَهُمْ بِاْلآخِرَةِ كَافِرُوْنَ-

‘যারা আল্লাহর পথে বাধা দিত এবং তাতে বক্রতা অন্বেষণ করত। তারা পরকালের বিষয়েও অবিশ্বাসী ছিল’ (আ‘রাফ ৭/৪৫)।

يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِنَّ كَثِيْراً مِّنَ الْأَحْبَارِ وَالرُّهْبَانِ لَيَأْكُلُوْنَ أَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ وَيَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِ اللّهِ وَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلاَ يُنْفِقُوْنَهَا فِيْ سَبِيْلِ اللّهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيْمٍ-

‘হে ঈমানদারগণ! পন্ডিত ও সংসারবিরাগীদের অনেকে লোকদের মালামাল অন্যায়ভাবে ভোগ করে চলেছে এবং আল্লাহর পথ থেকে লোকদের নিবৃত রেখেছে। আর যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য জমা করে রাখে এবং তা ব্যয় করে না আল্লাহর পথে, তাদের কঠোর আযাবের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন’ (তওবা ৯/৩৪)। 

 اَلَّذِيْنَ كَفَرُواْ وَصَدُّواْ عَنْ سَبِيْلِ اللّهِ زِدْنَاهُمْ عَذَاباً فَوْقَ الْعَذَابِ بِمَا كَانُواْ يُفْسِدُوْنَ-

‘যারা কাফের হয়েছে এবং আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করেছে, আমি তাদেরকে আযাবের পর আযাব বাড়িয়ে দেব। কারণ তারা অশান্তি সৃষ্টি করত’ (নাহল ১৬/৮৮)। 

إِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَيَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِ اللَّهِ وَالْمَسْجِدِ الْحَرَامِ الَّذِيْ جَعَلْنَاهُ لِلنَّاسِ سَوَاءً الْعَاكِفُ فِيْهِ وَالْبَادِ وَمَنْ يُّرِدْ فِيهِ بِإِلْحَادٍ بِظُلْمٍ نُذِقْهُ مِنْ عَذَابٍ أَلِيْمٍ-

‘যারা কুফরী করে ও আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে এবং সেই মসজিদে হারাম থেকে বাধা দেয়, যাকে আমি প্রস্ত্তত করেছি স্থানীয় ও বহিরাগত সকল মানুষের জন্যে সমভাবে এবং যে মসজিদে হারামে অন্যায়ভাবে কোন ধর্মদ্রোহী কাজ করার ইচ্ছা করে, আমি তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করাব’ (হজ্জ ২২/২৫)।

إِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَصَدُّوْا عَنْ سَبِيْلِ اللَّهِ وَشَاقُّوا الرَّسُوْلَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الهُدَى لَنْ يَّضُرُّوا اللَّهَ شَيْئاً وَسَيُحْبِطُ أَعْمَالَهُمْ-

‘নিশ্চয়ই যারা কাফের এবং আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে ফিরিয়ে রাখে এবং নিজেদের জন্য সৎ পথ ব্যক্ত হওয়ার পর রাসূলের বিরোধিতা করে, তারা আল্লাহর কোনই ক্ষতি করতে পারবে না এবং তিনি ব্যর্থ করে দিবেন তাদের কর্মসমূহকে’ (মুহাম্মাদ ৪৭/৩২)।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,  
আপনি চাচ্ছেন যে আপনার ক্যাম্পাসে কেউ না জানুক যে আপনি ধার্মিক।
কেননা এতে আপনি সিনিয়রদের পক্ষ থেকে নিজের জন্য সমস্যা দেখছেন। 
,
এক্ষেত্রে আপনি প্রকাশ্যে দ্বীনি আলোচনা থেকে বন্ধুদের ইনভাইট না করলে সমস্যা হবেনা।
আল্লাহ তায়ালা অসন্তুষ্ট হবেননা।  

তবে আপনি যদি কাউকে দ্বীনি আলোচনা থেকে দূরে রাখেন,বা বাধা দেন,তাহলে আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই অসন্তুষ্ট হবেন।

আপনি কাজ না করলে না করুন,কিন্তু কাউকে বাধা বা নিষেধ করবেননা।
তাহলে কোনো সমস্যা হবেনা।      


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...