হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عن بُرَيْدَةَ بن الحصيب قال : جَاءَتْ فَتَاةٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَتْ : إِنَّ أَبِي زَوَّجَنِي ابْنَ أَخِيهِ لِيَرْفَعَ بِي خَسِيسَتَهُ .
فَجَعَلَ الْأَمْرَ إِلَيْهَا .
فَقَالَتْ : قَدْ أَجَزْتُ مَا صَنَعَ أَبِي ، وَلَكِنْ أَرَدْتُ أَنْ تَعْلَمَ النِّسَاءُ أَنْ لَيْسَ إِلَى الْآبَاءِ مِنْ الْأَمْرِ شَيْءٌ.
رواه ابن ماجه (1874) ، وصححه البوصيري في مصباح الزجاجة (2/102) ، وكذا قال الشيخ مقبل الوادعي : " صحيح على شرط مسلم " ، انتهى من الصحيح المسند صـ 160
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রা. বলেন, একবার এক তরুণী তাঁর কাছে এসে বলল, আমার বাবা আমাকে তার ভাতিজার সাথে বিবাহ দিয়েছে-উদ্দেশ্য আমার দ্বারা তার হীনাবস্থা ঘুচানো-কিন্তু আমার তাতে সম্মতি ছিল না।
উম্মুল মুমিনীন বললেন, তুমি বসো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসুন। অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলে তিনি তাঁকে সে ঘটনা অবগত করলেন। তা শুনে তিনি মেয়েটির বাবাকে ডেকে পাঠালেন।
তারপর মেয়েটিকে নিজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার দিলেন। মেয়েটি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার বাবা যা করেছেন আমি তা অনুমোদন করলাম। আমার উদ্দেশ্য কেবল নারীদেরকে জানানো যে, এ বিষয়ের ক্ষমতা বাবাদের হাতে নয়। (সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ৫৩৯০; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৮৭৪; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৫০৮৭)
হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদিন এক মেয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমার পিতা, কতইনা উত্তম পিতা। আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সঙ্গে (আমাকে) বিয়ে দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি।
এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে (মেয়েটির) পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়।
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘এ বিয়ে হবে না, (মেয়েটিকে বললেন) তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নাও’। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা)
অন্য এক হাদীসে নবী কারীম ﷺ ইরশাদ করেন—
الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا
অর্থ : সাবালিকা মেয়ের নিজ বিয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার অভিভাবক অপেক্ষা তার নিজেরই বেশি। (মুসলিম : ১৪২১; আবু দাউদ : ২০৯৮; তিরমিযী : ২০৯৮)
ولا تجبر البالغة البكر علي النكاح لإنقطاع الولاية.
অর্থ : অভিভাবকত্বের অধিকার চলে যাওয়ার কারণে প্রাপ্তবয়স্ক কুমারী মেয়েকে (নির্দিষ্ট কোথাও) বিয়েতে বাধ্য করা যাবে না৷ (আদ্দুররুল মুখতার : ৪/১৫৯)
‘পরিবারের পছন্দনীয় ছেলেকে বিয়ে করতে হবে’-এ মর্মে প্রাপ্ত বয়স্ক কোনো মেয়ের ওপর জোর করার কোনো নিয়ম ইসলামে নেই।
হাদিসের আলোকে পাত্র নির্বাচনে মেয়ের মতামত নেয়া আবশ্যক। বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্র নির্বাচনে কোনোভাবেই কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর খাটানো ঠিক হবে না। তবে কোনো পিতামাতাই চান না তার মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যাক।
তাই পিতা মাতার পরামর্শ মেনে ভালো পাত্র পেলে সেখানেই বিবাহ করার পরামর্শ থাকবে।
তবে ছেলে নির্বাচনের আগে অবশ্যই মেয়ের সঙ্গে পরিবারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের পরামর্শ করা জরুরি। কেননা সারা জীবন সংসার করবে মেয়েটি।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পাত্র পাত্রীর মাঝে কুফুর সামঞ্জস্যতা থাকলে পরিবারকে ছেলের অবস্থা ইত্যাদি বলে বুঝিয়ে বিবাহে রাজি করানোর চেষ্টা করা প্রয়োজন।