আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
139 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (11 points)

আমি হলে থাকি। আমরা রুমের সবাই খুব মিলেমিশে থাকি। তারমধ্যে সবচেয়ে বেশি যার সাথে আমার সখ্যতা সেও ইসলামী মনা। আমরা আবার ব্যাচমেটও। ইসলাম নিয়ে নানা বিষয়ে আলোচনা, দুজন দুজনে যেকোনো কাজে হেল্প করা এগুলো সবসময় হয়েই থাকে। আমার বাসা থেকে কোনো খাবার পাঠালে কিংবা আমি যদি কিছু রান্না করি আমি রুমের সবাইকে দিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করি। আমার সেই বান্ধবীটিও আমাকে দেয়। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস আমরা আদান প্রদান করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল আমার সেই বান্ধবীটির বাবা ব্যাংকে জব করেন। ওর সমস্ত খরচ উনি দেন। আমার বান্ধবী এটা নিয়ে আক্ষেপ করে যে তার বাবার উপার্জন হারাম। কিন্তু তার কিছু করার নেই। শারীরিকভাবেও সে ফিট নয় যে টিউশন করে নিজের টাকায় চলবে। এমন অবস্থায় আমি কি ওর দেয়া কোনো খাবার বা জিনিস নিতে পারব?  ধার হিসেবে বা ধার ছাড়াও ও অনেক কিছুই আমাকে দেয় আমিও দেই। আর আমি যদি ওর কিছু না নেই ও অনেক কষ্ট পাবে। আমার জিনিস নিতেও ও তখন সংকোচ করবে। নিবেই না হয়ত। আবার ও বলছে রমজানে একসাথে রান্না করে খাওয়ার কথা। আমার এখন কি করা উচিত? কিভাবে ওর সাথে আমি সম্পর্ক ঠিক রাখতে পারি।   ওর দেয়া খাবার খেলে বা এক সাথে রান্না করে খেলে কি আমার ইবাদত কবুল হবে না?   

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/36588/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ 
হারাম সম্পদ ভক্ষন কারীর ইবাদত দোয়া কিছুই কবুল হয়না।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
হারাম মাল থেকে হাদিয়া গ্রহনের বিষয়ের ক্ষেত্রে শরয়ী মূলনীতি হল-যদি বেতনটি হালাল ও হারাম মালের সাথে মিশ্রিত হয়, আর হারাম মাল বেশি হয়, তাহলে তা নেয়া জায়েজ নয়। তবে যদি হারাম মাল কম হয় তাহলে হাদিয়া নেয়া জায়েজ হবে।

ولا يجوز قبول هدية أمراء الجور لأن الغالب في مالهم الحرمة إلا إذا علم أن أكثر ماله حلال بأن كان صاحب تجارة أو زرع فلا بأس به لأن أموال الناس لا تخلو عن قليل حرام فالمعتبر الغالب (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، الثاني عشر في الهدايا والضيافات-5/342)

অনুবাদ-জালেম বাদশাহর হাদিয়া গ্রহণ জায়েজ নয়। কেননা তার অধিকাংশ মাল হয় হারাম। তবে যদি জানা যায় যে, তার অধিকাংশ মাল হালাল, এ হিসেবে যে সে ব্যাবসায়ী বা জমিদার, তাহলে তার থেকে হাদিয়া গ্রহণ করাতে সমস্যা নেই। কেননা সাধারণত মানুষের মাল অল্প হারাম থেকে মুক্ত নয়। তাই এতে আধিক্যের বিষয়টি বিবেচিত হবে। { ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২}

★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার উক্ত বান্ধবীর বাবার যদি কোনো হালাল ইনকাম না থাকে,শুধুমাত্র ব্যাংকে চাকুরীর বেতনই তার ইনকাম হয়ে থাকে,যেমনটি প্রশ্ন থেকে বুঝা যায় সেক্ষেত্রে সেই বান্ধবী থেকে কোনো খাবার টাকা গ্রহন করা যাবেনা।
গ্রহন করলে ফিরিয়ে দিবেন।
বা সদকাহ করে দিবেন।
এই ছুরতে তার সাথে একত্রে রান্না করে খাওয়া যাবেনা।
শরীয়ত থেকে কোনো ভাবেই বন্ধুত্ব গুরুত্বপূর্ণ নয়।
আপনি তাকে তার বাবার ইনকামের বিষয়টি বলে বুঝিয়ে তার সাথে লেনদেন বন্ধ করে দিবেন।

তবে যদি তারা বাবার অন্য হালাল ইনকাম থাকে,সব মিলে তার বাবার হালাল ইনকামই বেশি থাকে, তাহলে তার থেকে যেকোনো গিফট, হাদীয়া নেয়া জায়েজ হবে,একসাথে রান্না করেও খেতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...