ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
পুরুষদের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার করা হারাম। হাদীসের মাঝে পরিস্কার নিষেধাজ্ঞা এসেছে। তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ছেলের ক্ষেত্রে সামান্য সময়ের জন্যেও তা ব্যবহার করা বৈধ হবে না।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى خَاتَمًا مِنْ ذَهَبٍ فِي يَدِ رَجُلٍ، فَنَزَعَهُ فَطَرَحَهُ، وَقَالَ: «يَعْمِدُ أَحَدُكُمْ إِلَى جَمْرَةٍ مِنْ نَارٍ فَيَجْعَلُهَا فِي يَدِهِ»، فَقِيلَ لِلرَّجُلِ بَعْدَ مَا ذَهَبَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: خُذْ خَاتِمَكَ انْتَفِعْ بِهِ، قَالَ: لَا وَاللهِ، لَا آخُذُهُ أَبَدًا وَقَدْ طَرَحَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা এক ব্যক্তির হাতে স্বর্ণের আংটি দেখতে পেলেন। তখন তিনি তা খুলে ছুড়ে ফেলে দিলেন। বললেনঃ তোমাদের কেউ কেউ জাহান্নামের জলন্ত অঙ্গার নিয়ে হাতে পরিধান করে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উক্ত স্থান থেকে প্রস্থানের পর উক্ত ব্যক্তিকে বলা হল, উক্ত আংটিটি নিয়ে কাজে লাগাও। সাহাবাটি বললেন, না, আল্লাহর কসম! যে বস্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফেলে দিয়েছেন তা আমি কখনোই গ্রহণ করবো না। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২০৯০]
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: ” مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلَا يَلْبَسْ حَرِيرًا وَلَا ذَهَبًا “
হযরত উমামা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলা উপর এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে, সে যেন রেশমী কাপড় এবং স্বর্ণ ব্যবহার না করে। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২২৪৮]
قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَمْرٍو: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” مَنْ لَبِسَ الذَّهَبَ مِنْ أُمَّتِي، فَمَاتَ وَهُوَ يَلْبَسُهُ لَمْ يَلْبَسْ مِنْ ذَهَبِ الْجَنَّةِ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমার উম্মতের মাঝে যে ব্যক্তি স্বর্ণ পরিহিত অব্স্থায় মারা যায়, তাকে জান্নাতের স্বর্ণ পরিধান করানো হবে না। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৯৪৭]
أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ حَدَّثَهُ، أَنَّ رَجُلًا قَدِمَ مِنْ نَجْرَانَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَيْهِ خَاتَمٌ مِنْ ذَهَبٍ، فَأَعْرَضَ عَنْهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ: «إِنَّكَ جِئْتَنِي وَفِي يَدِكَ جَمْرَةٌ مِنْ نَارٍ
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। নাজরান থেকে এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসল। তার হাতে ছিল স্বর্ণের আংটি। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং বললেন, নিশ্চয় তুমি জাহান্নামের জলন্ত অঙ্গার তোমার হাতে নিয়ে এসেছো। [সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৫১৮৮, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১১১০৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৪৮৯]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ «نَهَى عَنْ خَاتَمِ الذَّهَبِ»
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতে নিষেধ করছেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৬৪]
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَلْبَسُ خَاتَمًا مِنْ ذَهَبٍ، فَنَبَذَهُ فَقَالَ: «لاَ أَلْبَسُهُ أَبَدًا» فَنَبَذَ النَّاسُ خَوَاتِيمَهُمْ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বর্ণের আংটি পরিধান করলেন। তারপর তার খুলে ফেলে দিলেন, এবং বললেন, কখনোই এটি পরিধান করো না। তখন সমস্ত সাহাবাগণ তাদের (স্বর্ণের) আংটি খুলে ফেলে দিলেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৬৭]
(০২)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এটি হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি, ইসলামে এটি জায়েজ নেই।
এতে গুনাহ হবে।
বিস্তারিত জানুনঃ
(০৩)
এগুলো অনেকটা মেয়ের বাবার উপর জুলুমের নামান্তর।
,
হ্যাঁ যদি মেয়ের বাবা কোনো সামাজিকতা নয়,বরং নিজ থেকেই সন্তুষ্টি চিত্তে খাট পালং দেয়,আথিতেয়তার ব্যবস্থা করে,তাহলে তাহা জায়েজ আছে।
(০৪)
সুন্নতি বিয়ে সংক্রান্ত জানুনঃ-
ওলিমা হলো বাসর রাতের পর ছেলের বাসায় যেই খাবার খাওয়ানো হয়,সেটি ওলিমা।
মেয়ের বাসায় খাওয়ানো ওলিমা নয়।
(০৫)
মোহরানা যেহেতু মেয়ের অধিকার,তাই সে যা খুশি তাই ধরতে পারে।
তবে মানবিকতার দিকে লক্ষ্য করে ছেলের সামর্থ দেখা উচিত।
,
(০৬)
হ্যাঁ এ ক্ষেত্রে তার দুটোই ইস্তেহাযা ধরতে হবে।
সুুতরাং ফরয গোসলের দরকার নেই , সে এমনিতেই আবার সালাত কুরআন পড়তে পারবে ।
(০৭)
কাজটি নাজায়েজ।
তাই এ থেকে বিরত থাকতে হবে।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে গুনাহ হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
★প্রখ্যাত সাহাবী ইয়ায়ীশ রা. বলেন, আমার পিতা তিখফা ইবনে কায়েস আল গিফারী রা. ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন:
“আমি একদিন (ভোররাতে) মসজিদে উপুড় হয়ে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে দেখলাম যে, কে যেন আমাকে পা দিয়ে নাড়াচ্ছেন আর বলছেন, হে জুনাইদিব,
إِنَّ هَذِهِ ضِجْعَةٌ يُبْغِضُهَا اللَّهُ
“শোয়ার এ পদ্ধতি আল্লাহ ঘৃণা করেন।”
আমি চোখ মেলে দেখি, সে ব্যক্তিটি হচ্ছে স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
(আদবুল মুফরাদ, হাদিস : ১১৯৯)
(হাদিসটি বর্ণনা করেছেন, ইমাম আহমদ বিন হাম্বল, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ প্রমুখ এবং আলবানী এটিকে হাসান হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন।)
★অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবু জর (রা.) বলেন, আমি উপুড় হয়ে শুয়ে থাকা অবস্থায় নবী (সা.) আমার পাশ দিয়ে গেলেন। তিনি আমাকে তাঁর পা দ্বারা খোঁচা মেরে বলেন, হে জুনাইদিব!
إِنَّمَا هَذِهِ ضِجْعَةُ أَهْلِ النَّارِ
এটা তো জাহান্নামের শয়ন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৭২৪)
(এ হাদিসটিকে আহমদ, আলবানী ও আহমদ শাকের সহীহ বলেছেন)
★রাসুল (সা.)-এর বাণী ‘এটা তো জাহান্নামের শয়ন’
এর পক্ষে পবিত্র কোরআনের আয়াতও পাওয়া যায়। পবিত্র কোরআনে জাহান্নামিদের প্রতি ইরশাদ হয়েছে, ‘যেদিন তাদের উপুড় করে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে জাহান্নামের দিকে; সেদিন বলা হবে, জাহান্নামের যন্ত্রণা আস্বাদন করো।’ (সুরা : কমার, আয়াত : ৪৮)