আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
403 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (64 points)
আসসালামু আলাইকুম।

স্ত্রী অসুস্থ হলে ও অসুস্থতা ক্যান্সার পর্যন্ত চলে গেলেও স্বামী ডাক্তার দেখাবেনা এবং চিকিৎসার জন্য কোন টাকা দিবে না বলে জানায় ও বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে চিকিৎসা করাতে বলে এক্ষেত্রে স্ত্রীর করনীয় কি?
এজন্য স্ত্রী কি স্বামীর উপর বদদুয়া করতে পারবে যেন স্বামীর প্রিয় কারো এমন অসুখ হয় যেন তার জন্য তাকে অনেক টাকা খরচ করতে হয়? এই দোয়া করলে কি গোনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (559,260 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
হযরত আমর ইবনুল আহওয়াস রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
 
সাবধান, তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের উপর রয়েছে কিছু অধিকার, আর তোমাদের স্ত্রীদের জন্যও তোমাদের উপর রয়েছে কিছু অধিকার। তোমাদের অধিকার এই যে, স্ত্রীরা কোনোভাবেই তোমাদের বিছানায় এমন কাউকে পদার্পণের সুযোগ দিবে না, যাকে তোমাদের পছন্দ নয়। এবং তোমাদের ঘরে এমন কাউকে প্রবেশের অনুমতি দিবে না, যাকে তোমাদের অপছন্দ।
সাবধান, তোমাদের উপর তাদের অধিকার এই যে, খোরপোষের বিষয়ে তাদের প্রতি সদাচার করবে।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ১১৬৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৮৫১

হিন্দ বিনতে উতবা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে আরজ করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আবু সুফিয়ান একজন কৃপণ লোক। সে আমার ও আমার সন্তানের প্রয়োজনীয় খোরপোষ দেয় না। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন-
নিজের ও সন্তানের স্বাভাবিক প্রয়োজন পরিমাণ খোরপোষ তুমি নিতে পার।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৩৬ সহীহ মুসলিম।

মুআবিয়া কুশাইরী রাহ. বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! স্ত্রীদের বিষয়ে আমাদের প্রতি আপনার আদেশ কী? তিনি বললেন-

তোমরা যেমন খাও তাদেরকেও তেমন খাওয়াও, তোমরা যেমন পর, তাদেরকেও তেমন পরাও। তাদেরকে প্রহার করো না ও কটু কথা বলো না।-সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৪১৬৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২১৪২

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (3/ 575):
"كما لا يلزمه مداواتها.
 (قوله: كما لا يلزمه مداواتها) أي إتيانه لها بدواء المرض ولا أجرة الطبيب ولا الفصد ولا الحجامة هندية عن السراج. والظاهر أن منها ما تستعمله النفساء مما يزيل الكلف ونحوه".
সারমর্মঃ
স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ, ডাক্তারের বিল ইত্যাদি কোনো কিছু  স্বামীর উপর ওয়াজিব নয়।

الفقه الإسلامي وأدلته للزحيلي (10/ 7380):
"نفقات العلاج: قرر فقهاء المذاهب الأربعة  أن الزوج لا يجب عليه أجور التداوي للمرأة المريضة من أجرة طبيب وحاجم وفاصد وثمن دواء، وإنما تكون النفقة في مالها إن كان لها مال، وإن لم يكن لها مال، وجبت النفقة على من تلزمه نفقتها؛ لأن التداوي لحفظ أصل الجسم، فلا يجب على مستحق المنفعة، كعمارة الدار المستأجرة، تجب على المالك لا على المستأجر، وكما لا تجب الفاكهة لغير أدم.
সারমর্মঃ
চার মাযহাবের উলামায়ে কেরামগন বলেছেন যে     স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ,ডাক্তার বিল স্বামীর উপর ওয়াজিব নয়।
তার চিকিৎসা তার সম্পদ থেকেই করা হবে,যদি তার সম্পদ না থাকে,এক্ষেত্রে তার নফকাহ যার উপর আবশ্যক তার উপরেই চিকিৎসা খরচ বর্তাবে।  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ স্বামীর উপর ওয়াজিব নয়।
তদুপরি স্ত্রীও যেহেতু সংসারে স্বামীর ঘরে এমন অনেক কাজই করে থাকেন,যাহা তার উপর ওয়াজিব নয়,তাই স্বামীরও উচিত যে সে তার স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ বহন করতে।
এটি শরয়ী দৃষ্টিকোন থেকে ওয়াজিব না হলেও দিয়ানাতান ও আখলাক এর দিক হতে জরুরি। 
,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত স্ত্রী এহেন বদ দুয়া করতে পারবেনা।
এতে তার গুনাহ হবে।    

★স্বামীর উপর স্ত্রীর ভরণপোষণ এবং বাসস্থান ওয়াজিব।চিকিৎসা খরচ ভরণপোষণ বা বাসস্থানের অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বামীর নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। যেভাবে স্বামীর উপর স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ ওয়াজিব নয় ঠিক সেভাবে স্ত্রীর উপর স্বামীর রান্নাবান্নারও দায়িত্ব নেই।অন্যদিকে স্ত্রীকে রান্না করা খাবার পাঠিয়ে দেওয়া স্বামীর দায়িত্ব ও কর্তব্য।
সুতরাং যেহেতু আমাদের সমাজের স্ত্রীরা স্বামীকে বা স্বামীর বাড়ীর লোকজনকে রান্না করে খাওয়ান, তাই স্বামীরাও তাদের স্ত্রীদের চিকিৎসা খরচ বহন করবেন।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...