আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
168 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম।
স্বামীর বিভিন্ন বান্ধবী আছে। সবার সাথে উনার নিয়মিত কথা হয়,দেখা হয়,ভিডিও কলেও  কথা হয়। স্ত্রী বাঁধা দিলে বলে, আমি শুধু ওদের সাথে টাইম পাস করি,খারাপ কিছু করি না। কিন্তু স্ত্রী উনাকে অনেক বুঝিয়েছেন যে এসব হারাম। উল্লেখ্য স্বামী হজ্ব করেছেন, ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। কিন্তু এই বদঅভ্যাস কিছুতেই ছাড়তে পাড়ছেন না।  স্ত্রী ব্যর্থ হয়েছেন উনাকে ফিরাতে।ঐসব বান্ধবীদেরক  ও বুঝিয়ে স্স্ত্রী ব্যর্থ হয়েছেন। স্ত্রীর মনে যখন কষ্ট লাগে,সন্দেহ লাগে তখন ঐসব মহিলাদের প্রতি বদদুয়া চলে আসে!
১. এই যে স্বামী এসব আচরণ করছেন এতে করে  কি তিনি স্ত্রীর হক নষ্ট করছেন?

২. যেসব মহিলারা উনার স্বামীর সাথে যোগাযোগ রাখছেন তারাও কি উক্ত স্ত্রীর হক নষ্ট করছেন?

৩. স্ত্রী যে ওদেরকে বদদুয়া দেয় (আসলে কষ্টে বদদুয়া চলে আসে) এতে করে কি স্ত্রীর গুণাহ হচ্ছে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)


ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1205 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
নেককার স্বামী/স্ত্রী পাওয়া এবং সুস্থ সবল সন্তানের পিতা-মাতা হওয়া, বান্দার উপর আল্লাহ তা'আলার এক বিশেষ নেয়ামত।এজন্য প্রত্যেক স্বামী/স্ত্রী এর জন্য মহান রবের শুকরিয়া আদায় করা উচিৎ।এ বিশেষ নেয়ামতের অকৃতজ্ঞা প্রকাশ করার অর্থই হল নিজের জীবনকে বিপর্যয়ের দিকে ঢেলে দেয়া।

অাল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻭَﺇِﺫْ ﺗَﺄَﺫَّﻥَ ﺭَﺑُّﻜُﻢْ ﻟَﺌِﻦ ﺷَﻜَﺮْﺗُﻢْ ﻷَﺯِﻳﺪَﻧَّﻜُﻢْ ﻭَﻟَﺌِﻦ ﻛَﻔَﺮْﺗُﻢْ ﺇِﻥَّ ﻋَﺬَﺍﺑِﻲ ﻟَﺸَﺪِﻳﺪٌ
যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর। (সূরা ইবরাহিম-৭)

যেহেতু আপনার স্বামী এখনো আপনার সাথে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিচ্ছেদের আলোচনা করছেন না বা সেদিকে অগ্রসর হচ্ছেন না।এটা প্রমাণ করে সে আপনাকে ভালবাসে।হয়তো কোনো কারণে সে পরকিয়ায় লিপ্ত রয়েছে।তাই আমি মনে করি যে, আপনি তাকে পূর্ণ ভালবাসা প্রদাণ করুন।তার সাথে যথেষ্ট মায়াবী আচরন করুন।তার সামনে সু-সজ্জিত হয়ে আসুন।এবং প্রথম দিনের মত তাকে আগ্রহ ভরে দেখুন।এবং সাথে সাথে তাকে আখেরাতের ভয় প্রদর্শন করুন।বা ইসলামী বিধি-বিধান সম্পর্কে সম্মক অবগত করানোর চেষ্টা করুন।

আমি আপনাকে বিশেষ কয়েকটি নসিহত করবো-
(ক)
আপনার স্বামীর পরকিয়া সম্পর্কে অন্য কাউকে জানাবেন না।কেননা গোনাহে গোপন রাখা ওয়াজিব।তাই গোপন রাখার চেষ্টা করুন।

(খ)
পূর্ণ আগ্রহের সাথে তাকে সময় দিন।তাকে কখনো একা ছেড়ে দিবেন না।বরং সর্বদা তার সাথে লেগে থাকুন।তার সকল প্রকার পছন্দের জিনিষকে নিজের পছন্দ বানিয়ে তার সাথে সর্বদা থাকার চেষ্টা করুন।

(গ)
তার হেদায়তের জন্য দু'আ করতে থাকুন।
এসবের পরেও যদি কোনো প্রকার ফায়দা না হয় তথা যদি স্বামী পরকিয়া থেকে বিরত না থাকে, তাহলে এমতাবস্থায় স্ত্রীর সামনে দু'টি পথ থাকবে-

(এক)
হয়তো আপনি ঐ মহিলাকে বিয়ের কথা বলুন।

(দুই)
স্ত্রী তালাক চাইতে পারবে বা খূলা করতে পারবে।

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
আমাদের মনে রাখতে হবে,
পরকালে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ আ'মলের হিসাব নিকাশ দিতে হবে।কারো পাপের বোঝাকে অন্য কেহ বহন করবে না।
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺰِﺭُ ﻭَﺍﺯِﺭَﺓٌ ﻭِﺯْﺭَ ﺃُﺧْﺮَﻯ ﻭَﺇِﻥ ﺗَﺪْﻉُ ﻣُﺜْﻘَﻠَﺔٌ ﺇِﻟَﻰ ﺣِﻤْﻠِﻬَﺎ ﻟَﺎ ﻳُﺤْﻤَﻞْ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْﺀٌ ﻭَﻟَﻮْ ﻛَﺎﻥَ ﺫَﺍ ﻗُﺮْﺑَﻰ الخ
কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়।
(সূরা ফাতির-১৮)

সুতরাং বর্তমান পরিস্থিতে স্বামীকে বুঝিয়ে এই গোনাহের কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করুন।ধর্য্য সহকারে পরিস্থিতির মোকাবেলা করার চেষ্টা করুন।আল্লাহ অবশ্যই এর জন্য আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করবেন। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/295

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১)
স্ত্রীর হক নষ্ট হচ্ছে কি না? সেটা প্রশ্ন নয় বরং স্বামীর স্বামীর গোনাহ হচ্ছে, সেটাই মূলকথা।

(২)
স্ত্রীর হক নষ্ট হচ্ছে কি না? সেটা প্রশ্ন নয় বরং ঐ সমস্ত মহিলাদের গোনাহ হচ্ছে, সেটাই মূলকথা।

(৩)
বদদোয়ার দরুণ গোনাহ হবে না।তবে বদদোয়া না করে বরং হেদায়তের দোয়া করা উচিৎ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...